ইসতিখারা একটি উত্তম কাজ। মুমিন মুসলমানের কোনো কাজ যার ভাল কিংবা মন্দ স্পষ্ট নয় তার জন্য ইসতিখারা করা মোস্তাহাব। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানুষের কাজের ভালো-মন্দের বিষয়টি জানতে ইসতিখারা নামাজ পড়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। হাদিসে পাকে এসেছে-
Advertisement
হজরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেভাবে আমাদেরকে কুরআন শিক্ষা দিতেন অনুরূপভাবে ইসতিখারার নিয়ম ও দোয়া শিক্ষা দিতেন।
তিনি বলতেন যখন তোমাদের কেউ কোনো মহৎ কিংবা বিরাট কাজ করার ইচ্ছা পোষণ করে, তখন সে যেন ফরজ নামাজ ছাড়া ২ রাকাআত নফল নামাজ আদায় করে এবং বলে, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসতাখিরুকা...’ অর্থাৎ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার জ্ঞানের সাহায্যে ভাল দিক (জানার) প্রার্থনা করছি। আপনারেই কুদরতের দ্বারা আপনার কাছে (তা অর্জনের) ক্ষমতা কামনা করি। আমি আপনার মহা অনুগ্রহ কামনা করি।
আপনিই ক্ষমতাবান, আমার কোনো ক্ষমতা নেই। আপনি সবকিছুই অবগত; আমি সম্পূর্ণ অজ্ঞ। আর আপনিই অদৃশ্য সম্পর্কে ওয়াকিফহাল।
Advertisement
হে আল্লাহ! আপনি অবগত আছেন যে, আমার এ কাজ (নিজের নির্দিষ্ট কাজের নাম নিয়ে) আমার দ্বীন, পার্থিব জীবন, পরকাল এবং সর্বোপরি আমার পরিণামে কল্যাণকর ও মঙ্গলজনক হলে তা আমাকে হাসিল করার শক্তি দিন; আমার জন্য তা সহজ করে দিন এবং আমার জন্য তাতে বরকত দিন।
আর যদি আমার জন্য এ কাজ খারাপ বা অকল্যাণকর জান; তবে আমার দ্বীনের ব্যাপারে, আমর জীবন-ধারণের ব্যাপারে এবং আমার কাজের শেষ ফলের ব্যাপারে আমাকে তা থেকে দূরে রাখুন এবং সেটিকেও আমার থেকে ফিরিয়ে নিন।
আর যা আমার জন্য কল্যাণকর তা নির্ধারণ করুন; তা যেখানেই আছে। অতঃপর আপনি আমাকে তাতে সন্তুষ্ট রাখুন। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘সে (প্রার্থনাকরী) যেন নিজের প্রয়োজনীয় বিষয়ের নাম উল্লেখ করে। (বুখারি, আবু দাউদ, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ, নাসাঈ, মুসনাদে আহমদ, মিশকাত)
পরিশেষে...কর্মের ভাল মন্দের দিক-নির্দেশনা জানতে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইসতিখারা নামাজ ও দোয়ার নসিহত পেশ করেছেন। ফরজ নামাজ ছাড়া ২ রাকাআত নফল নামাজ পড়ে খুব বিনয়ে সঙ্গে উল্লেখিত দোয়া করা। অতঃপর দুনিয়াবি কোনো কথা-বার্তা না বলে বিছানায় ডান কাতে কেবলামুখী হয়ে শুয়ে থাকা এবং যে কাজের দিকনির্দেশনা পেতে ইসতিখারা করা এবং তা মনে মনে কল্পনা করতে থাকা।
Advertisement
আশা করা যায় তিন দিনের মধ্যে আল্লাহর পক্ষ থেকে কোনো না কোনো ফয়সালা পাওয়া যাবে। ইসতিখারায় কোনো স্বপ্ন দেখা আবশ্যক নয় বরং ইসতিখারা করার পর যে দিকে মন ধাবিত হয়; সেটাকেই কল্যাণকর মনে করা উত্তম।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ইসতিখারার মাধ্যমে কাজের ভাল-মন্দ সম্পর্কে কল্যাণ দিক জানার তাওফিক দান করুন। অকল্যাণ থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/আরআইপি