জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় চতুর্থ দিনের মতো অসমাপ্ত বক্তব্য শেষ করলেন খালেদা জিয়া। শেষ করার সময় বিচারককে উদ্দেশ করে মুচকি হেসে খালেদা জিয়া বলেন, মাননীয় আদালত আজকের মতো শেষ করি।
Advertisement
এ সময় ঢাকার বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামান তার আবেদনটি মঞ্জুর করে ১৬ নভেম্বর পরবর্তী অসমাপ্ত বক্তব্য দেয়ার জন্য দিন ধার্য করেন। অপরদিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা তার স্থায়ী জামিন আবেদন করলে আদালত তা না মঞ্জুর করেন। এদিন দেড় ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আদালতে তিনি বক্তব্য দেন। বেগম খালেদা জিয়া বেলা ১১টা ৩৮ মিনিটে আদালতে উপস্থিত হন। বেলা ১২টা ৬ মিনিট থেকে ১টা ৩২ মিনিট পর্যন্ত তিনি আদালতে বক্তব্য প্রদান করেন। বেলা ১টা ৪০ মিনিটে তিনি আদালত ত্যাগ করেন।
এদিন জিয়া অরফানেজ ও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট্র দুর্নীতির দুই মামলায় খালেদা জিয়ার স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহম্মেদ। তিনি আবেদনে বলেন, পৃথিবীর কোন ইতিহাসে সাপ্তাহিক জামিন দেয়ার নজির নেই।মামলায় খালেদাকে সাপ্তাহিক জামিন দেয়া হয়েছে। তিনি বয়স্ক মহিলা। তাই তার স্থায়ী জামিন মঞ্জুর করা হোক।
অপরদিকে দুদকের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, মামলা দুইটি জামিন অযোগ্য ধারার। তাকে স্থায়ী জামিন দিলে আমার আপত্তি আছে। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক খালেদা জিয়ার স্থায়ী জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন। আগামী ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত খালেদার জামিন মঞ্জুর করেন।
Advertisement
আদালতে বিএনপির নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল আউয়াল মিন্টু, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমান, বরকত উল্লাহ বুল, খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ। আইনজীবী হিসেবে আদালতে উপস্থিত ছিলেন, খন্দকার মাহবুব হোসেন, এজে মোহাম্মদ আলী, জমির উদ্দিন সরকার, জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সানাউল্লাহ মিয়া, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জিয়া উদ্দিন জিয়া, জয়নুল আবেদীন মেজবাহ, এম হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী (পলাতক), হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।এ ছাড়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এ মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন, মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
Advertisement
জেএ/ওআর/পিআর/জেআইএম