খেলাধুলা

৩ বছর পর আবার ম্যাচ জেতালেন তাসকিন

সবাই তাকে চেনে, জানে অভিষেকের ম্যাচ থেকেই। ২০১৪ সালের ১৭ জুন শেরে বাংলায় ভারতের সাথে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের শুরুতেই তাক লাগিয়ে দেয়া। বিধ্বংসী বোলিংয়ের অনুপম দৃষ্টান্ত রেখে ২৮ রানে ভারতীয় ইনিংসের অর্ধেকটার পতন ঘটিয়ে রীতিমত হৈ চৈ ফেলে দেন সেদিনের ১৯ বছরের উচ্ছল যুবা তাসকিন আহমেদ।

Advertisement

রবিন উথাপ্পা, চেতেশ্বর পূজারা, আম্বাতি রাইডু, স্টুয়ার্ট বিনি আর অমিত মিশ্র'র মত প্রতিষ্ঠিত ও নামি পারফরমার তাসকিনের প্রচন্ড গতি, বাউন্স আর বারুদ মেশানো সুইংয়ে হন পরাস্ত, পর্যুদস্ত। তাসকিন ৮ ওভারে ২৮ রানে ৫ উইকেট দখল করলে ভারত মাত্র ১০৫ রানে অলআউট হয়ে যায়। কিন্তু এর পর স্টুয়ার্ট বিনি মাত্র ৪ রানে ৬ উইকেটের পতন ঘটালে বাংলাদেশ অলআউট হয়ে যায় ৫৮ রানে।

আর তাতেই ওয়ানডে অভিষেকে তাসকিনের বারুদমাখা বোলিংয়ের সুখস্মৃতি ও বোলিং কীর্তি ঢাকা পড়ে যায়। তারপরও সেটাই এখন পর্যন্ত তাসকিনের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং স্পেল। কিন্তু কেউ কি কেউ কি জানেন, আজকের তাসকিন আহমেদ কিন্তু বিপিএল দিয়েই প্রথম নজর কাড়েন।

২০১৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি এই বিপিএলে দুরন্ত রাজশাহীর বিপক্ষে ঢাকার শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে চিটাগাংয়ের হয়ে ৩১ রানে ৪ উইকেট দখল করে ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন তাসকিন। সে স্মৃতি এখনো জ্বলজ্বল করছে এ ফাস্ট বোলারের মনের আয়নায়।

Advertisement

আজ খেলা শেষে জাগো নিউজের সাথে আলাপে সে প্রসঙ্গ তুলতে নিজে থেকেই বলে উঠলেন , 'হ্যাঁ, সেদিনের কথা ভুলি কি করে বলুন ? আমি ৪ উইকেট দখল করে ম্যাচ সেরা হয়েছিলাম।'

অবাক করা খবর হলো, সে ম্যাচেও তাসকিনের দল ছিল চিটাগাং। আজ সিলেটে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ম্যাচ জেতানো বোলিং স্পেলটাও চিটাগাং ভাইকিংসের হয়ে।

তিন বছর আগের ঐ ম্যাচে দুরন্ত রাজশাহীর জিম্বাবুয়ান চার্লস কভেন্ট্রি, অস্ট্রেলিয়ান সায়মন ক্যাটিচ আর বাংলাদেশের জহুরুল ইসলাম অমি ও মুকতার আলীকে ফিরিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন তাসকিন। আজ আবার তাসকিনের ম্যাচ জেতানো বোলিং। ৪ ওভারে ৩১ রানে ৩ উইকেট।

প্রতিপক্ষ অধিনায়ক মাশরাফিও নিজ দলের হারে তাসকিনের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন। তাসকিনের দুর্দান্ত ইয়র্কারে বোল্ড হয়েছেন ওয়েল সেট শাহরিয়ার নাফীস। ঐ ডেলিভারির প্রশংসা করে মাশরাফি খেলা শেষে প্রেস কনফারেন্সে বলেন, ‘শাহরিয়ার নাফীস যে বলে আউট হয়েছে, সেটা ছিল তাসকিনের অসাধারণ এক ডেলিভারি।'

Advertisement

প্রথমে শাহরিয়ার নাফীস ইয়র্কারে বোল্ড করা তাসকিন পরের বলেই ফিরিয়ে দেন আফগান সামিউল্লাহ শেনওয়ারি। তৃতীয় বলে থিসারা পেরেরা স্ট্রেট ড্রাইভ তাসকিনের পায়ে লেগে স্টাম্প ভেঙ্গে দেয়। আর তাতেই রানআউটের খপ্পরে পড়েন রংপুরের আশা ভরসার কেন্দ্রবিন্দু। ননস্ট্রাইকার রবি বোপারা রান আউট হবার ঠিক এক ওভার পরে আবার আঘাত হানেন তাসকিন, ফিরিয়ে দেন থিসারা পেরেরাকে।

খেলা শেষে তাসকিন বলে দিলেন , অধিনায়ক মিসবাহউল হকের একটি কথায় তিনি উজ্জীবীত হয়েছেন। আজ নাস্তার টেবিলে মিসবাহ তাকে বলেন, 'ভাই যা করবে, নিজের বিচার-বিবেচনা ও বুদ্ধি দিয়েই করবে।'

তাসকিন সে কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে মিসবাহর মুখে হাসি ফুটিয়ে দিলেন। কারণ মিসবাহউল হক আর এনামুল হক বিজয়ের ব্যাটিংয়ে উল্কার গতিতে শুরুর পরও ১৬৬ তে থামে চিটাগং।

অথচ প্রথম ৫ ওভারে চট্টগ্রামের রান ছিল বিনা উইকেটে ৫৪ । ছয় ওভারের পাওয়ার প্লে‘তে মিসবাহর দল করেছিল এক উইকেটে ৬৩। ইনিংসের মাঝামাঝি চট্টগামের রান এক উইকেটে ৯১। কিন্তু সেখান থেকে পরের ১০ ওভারে মাত্র ৫৪ রান যোগ হওয়ায় চিটাগং থেমে দাঁড়িয়েছিল ১৪৩ ‘এ। ঐ রান নিয়ে তো আর শেষরক্ষা হয় না!

এআরবি/এমএমআর/আরআইপি