খেলাধুলা

সিলেটের হাতে বিপিএলের সেরা দুই ওপেনার!

নাম পাল্টে বিপিএলে এবারই প্রথম। অন্য দলগুলো যখন বছরের মাঝামাঝি সময় থেকেই দল গড়ার ব্যাপারে তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছিল, তখন খবরই ছিল না সিলেটের নতুন ফ্রাঞ্চাইজির। প্লেয়ার ড্রাফট নিয়ে যখন আলোচনা শুরু হয়, তখনই জানা গেলো, সিলেটের নতুন নাম ‘সিলেট সিক্সার্স’।

Advertisement

প্লেয়ার ড্রাফটের আগে আইকন ভাগাভাগিতেও খুব একটা সাড়া ফেলতে পারেনি সিলেটের নতুন ফ্রাঞ্চাইজি। এ প্লাস (আইকন) ক্যাটাগরি থেকে সাব্বির রহমানকে পেয়েছে তারা। যদিও প্লেয়ার ড্রাফটের আগে আরও তিনজনকে আলাদাকরে বাছাই করে নেয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছিল সিলেটকে। সে সুযোগেই গত আসরে ঢাকাকে চ্যাম্পিয়ন করা নাসির হোসেনকে দলে ভিড়িয়েছে তারা। সঙ্গে নিয়েছে নুরুল হাসান সোহান এবং স্পিনার তাইজুল ইসলামকেও।

প্লেয়ার ড্রাফটেও বড় কোনো নাম নেই সিলেটের দলে। বিদেশি রিক্রুটমেন্টেও আলোচিত নাম দেখা যাচ্ছিল না দলটিতে। যে কারণে বিপিএল শুরুর আগেই সিলেট নিয়ে আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল, কে হচ্ছেন দলটির অধিনায়ক? কেই বা নতুন দলটিকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে যাবে?

কিন্তু সিলেট সিক্সার্স বিপিএলের শুরুর দিন থেকেই সবার ধারণা পাল্টে দিলো, উদ্বোধনী ম্যাচেই গত আসরের চ্যাম্পিয়ন এবং এই আসরে কাগজে-কলমে সবচেয়ে শক্তিশালী দল ঢাকা ডায়নাইমটসকে হারিয়ে দিয়ে। নেতৃত্বের দায়িত্ব নিয়েই প্রথম ম্যাচে বাজিমাত করে দিলেন নাসির হোসেন। কিন্তু, নেতা নাসির যতটা না সিলেটকে এগিয়ে দিচ্ছেন, তার চেয়ে এ ভুমিকা সবচেয়ে বেশি অগ্রগণ্য মনে হচ্ছে সিলেটের দুই বিদেশি ওপেনার উপুল থারাঙ্গা এবং আন্দ্রে ফ্লেচারকে।

Advertisement

বলা হয়ে থাকে টি-টোয়েন্টিতে দু’একজন ভাল খেললেই, ম্যাচের ফল নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসা যায়। এবারের বিপিএলেই যেন এর সবচেয় বড় উদাহরণ সৃষ্টি করে যাচ্ছেন সিলেট সিক্সার্সের দুই ওপেনার উপুল থারাঙ্গা এবং আন্দ্রে ফ্লেচার। ঢাকার পর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারানোর ক্ষেত্রে এ দু’জনের ব্যাটেই ভর করেছিল সিলেট। রাজশাহীর বিপক্ষে তৃতীয় ম্যাচে এসেও জ্বলে উঠলো এই জুটির ব্যাট।

তিন ম্যাচেই প্রতিপক্ষকে সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছে সিলেটের এই ওপেনিং জুটি। প্রথম ম্যাচে ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে ১৩৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে এ দু’জনই গড়ে দিয়েছিলেন ১২৫ রানের জুটি। দ্বিতীয় ম্যাচে কুমিল্লার ১৪৬ রান তাড়া করতে নেমে এই জুটির ব্যাট থেকে আসে ৭৩ রান। আর আজ (মঙ্গলবার) তৃতীয় ম্যাচে এসে রাজশাহীর বিপক্ষে ১০১ রানের জুটি গড়েই তবে বিচ্ছিন্ন হয়েছেন ফ্লেচার আর থারাঙ্গা।

মজার বিষয় বিপিএলের এ আসরে প্রথম দুই হাফ সেঞ্চুরিয়ানও হলেন এই দুই ব্যাটসম্যান। পাশাপাশি টানা তিন ম্যাচে তিন হাফ সেঞ্চুরি করে পঞ্চম আসরে নতুন রেকর্ডের জন্ম দিলেন লংকান ওপেনার উপুল থারাঙ্গা। আগের দুই ম্যাচের মত আজও যদি তিনি ম্যাচ সেরার পুরুস্কার পান, তবে তিনিই হবেন এ আসরেরে একমাত্র খেলোয়াড়, যিনি তিন ম্যাচই ম্যাচ সেরার পুরুস্কার পেলেন।

সবচেয় মজার বিষয়, তিন ম্যাচেই আগে আউট হয়েছেন ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান আন্দ্রে ফ্লেচার ( ৬৩, ৩৬ ও ৪৮)। আর থারাঙ্গা করেছেন ৬৯, ৫১ ও ৫০ রান। থারাঙ্গার এমন পারফরম্যান্স দেখে অবাকই হতে হয়। একটা সময় ফর্মহীনতার কারণে শ্রীলংকার দল থেকেও বাদ পড়তে হয়েছিল তাকে।

Advertisement

এই দুই ওপেনার যদি তাদের ধারাবাহিকতাটা এভাবে ধরে রাখতে পারেন বিপিএলের শেষ পর্যন্ত, তাহলে হয়তো নতুনভাবে বিপিএলে উঠে আসা সিলেটই চমক দেখিয়ে দিতে পারে।

এমএএন/আইএইচএস/আইআই