খেলাধুলা

গত আসরের কথা ভাবতে রাজি নয় কুমিল্লা

আইকন পারফরমার তামিম ইকবাল গ্রোয়েন ইনজুরিতে। প্রথম ম্যাচ খেলতে পারেননি। আগামীকাল চিটাগাং ভাইকিংসের সঙ্গে দ্বিতীয় ম্যাচেও মাঠে নামতে পারবেন না তামিম। মঙ্গলবারও কুমিল্লাকে খেলতে হবে নিয়মিত অধিনায়ক ও এক নম্বর ওপেনারকে ছাড়া।

Advertisement

কবে ফিরবেন তামিম? তা নিয়েই রাজ্যের জল্পনা-কল্পনা। গুঞ্জন। তামিম নিজেও নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না ঠিক কবে ফিরতে পারবেন? শুধু বললেন, চেষ্টা করবো যত দ্রুত ফেরা যায়।

কথা শুনে মনে হলো, ঢাকায় ফিরতে মুখিয়ে কুমিল্লা ক্যাপ্টেন। কাল খেলতে না পারলেও আজ নেটে ব্যাটিং প্র্যাকটিস করেছেন তামিম। প্যাড পরে খানিকক্ষণ দৌড়াদৌড়িও করেছেন।

কোচ সালাউদ্দীনও তামিমের মাঠে ফেরার আশায় উন্মুখ। তবে ভিতরের খবর, তামিম নিজেকে সুস্থ বা ম্যাচ খেলার জন্য ফিট দাবি করলেও তার বিপিএলে মাঠে নামা নির্ভর করছে জাতীয় দলের ফিজিওর ওপর। শ্রীলঙ্কান ফিজিও থিয়ান ফিটনেস সার্টিফিকেট দিলেই কেবল খেলতে নামবেন তামিম।

Advertisement

তামিম খেলতে না পারা মানেই মোহাম্মদ নবি ক্যাপ্টেন কুমিল্লার। গতকাল আফগান নবির নেতৃত্বেই সিলেটের বিপক্ষে খেলতে নেমে প্রবল লড়াইয়ের পর ৪ উইকেটে হেরেছে কুমিল্লা।

আসর শুরুর আগে সব হিসেব-নিকেশেই চ্যাস্পিয়ন ঢাকা ও মাশরাফির রংপুরের সাথে ফেবারিট ভাবা হয়েছিল তামিমের কুমিল্লাকেও; কিন্তু তামিমবিহীন দলটিকে যেন মাঝিহীন নৌকা মনে হয়েছে। দুই ওপেনার ইমরুল কায়েস আর লিটন দাস দলকে একটা শক্ত ভীতের ওপর দাঁড় করানো পথে অনেকদুর এগিয়েও শেষ রক্ষা করতে পারেননি।

তাতেই লড়াকু পুজির পথ বন্ধ হয়ে যায়। পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তারকা মারলন স্যামুয়েলসের হাত ধরে ১৪৫ পর্যন্ত পৌঁছালেও তা যথেষ্ঠ ছিল না। তাই দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের খোঁজে মরিয়া কুমিল্লা।

ওপেনার লিটন দাসের মুখে প্রতিধ্বনিত হলো সেই কথা। সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে নেট করে আসার পর সাংবাদিকদের সাথে কথোপাকোথনের শুরুতেই প্রশ্ন রাখা হলো লিটনের কাছে- হারে শুরু হলো যাত্রা। সামনে দ্বিতীয় ম্যাচ। কি অবস্থা দলের?

Advertisement

লিটনের স্বভাবসুলভ নির্ভার জবাব, ‘অবস্থা ভাল। হার বা জয় নিয়ে কোনও চিন্তা নেই। জিতলে ভাল হতো। তবে আমরা এখনো খুব ভাল অবস্থায় আছি।’

তামিম নেই। মোহাম্মদ নবি অধিনায়ক। কেমন দায়িত্ব সামলাচ্ছেন এ আফগান? লিটনের মত, ‘অধিনায়ক হিসেবে উনি (নবি) খুবই ভালো।’ কালকের ম্যাচের পরিকল্পনা কী? ‘আগের ম্যাচে যেমন ছিল তেমনই। বেশি কিছু নেই।’

আগের ম্যাচের পরিকল্পনা কী ছিল? নির্দিষ্ট কোন পরিকল্পনার কথা না বললেও লিটনের কথা, ‘আগের ম্যাচে জিততে পারিনি, হয়তো কিছু কিছু ভুল ছিল। বা আমরা যা চেয়েছি, সেটা হয়নি। পরের ম্যাচে হয়তো হতেও পারে। যে পরিকল্পনা ছিল সেটাতেই আছি।’

আগের ম্যাচের পরিকল্পনা কী ছিল? লিটনের রসিকতা, ‘ঘরের কথা বাইরে? কাল তো আমাদের ম্যাচ আছে।’ পরে সিরিয়াস হয়ে বলে ওঠেন, ‘আমি তো বললাম আগের ম্যাচে কিছু কিছু জিনিস ঠিকমত বাস্তব রুপ দেয়া সম্ভব হয়নি। আমরা ভালো মতো করতে পারিনি। পরের ম্যাচে আমরা তা করে দেখানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করবো।’

গত দুদিনের চারটি ম্যাচ হয়ে গেলেও এখনো বাংলাদেশের একজন ব্যাটসম্যানও পঞ্চাশ করতে পারেননি। এটাকে ব্যর্থতা মানতে নারাজ লিটন। হয়নি। তবে হবে।

লিটন দাসের ধারণা দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে দেশের কন্ডিশনটা পুরোপুরি আলাদা। তাই নাকি অ্যাডজাস্ট হতে একটু সময় লাগবে। তার ব্যাখ্যা, অনেকদিনের একটা ট্যুর করে এসেছি আমরা। তাই ধাতস্ত হতে একটু সময় লাগবে। তবে কি আপনাদের দেশের কন্ডিশনের সাথে মানিয়ে নিতে সমস্যা হচ্ছে?

লিটনের জবাব, ‘না না তা নয়। অনেকদিন আমরা অন্য উইকেটে খেলে এসেছি। আবার এসে অ্যাডজাস্ট করা একটু হলেও টাফ। এছাড়া মনে হচ্ছে, উইকেট একটু স্লোা আচরণ করছে। যে কারণে একটু হলেও সমস্যা হচ্ছে। আর টি-টোয়েন্টি খেলায় এত চিন্তা করার সময় নেই।’

ইতিহাস জানাচ্ছে গতবারও কুমিল্লার শুরু ভাল হয়নি। লিটনসহ টপ অর্ডাররা পুরো আসরেই ব্যর্থতার ঘানি টেনেছেন। নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি। এবারো প্রথম ম্যাচে শুরু ভাল হয়নি। লিটন কিছু করার ইঙ্গিত দিয়েও ২১ রানে আউট হয়ে গেছেন। এভাবে টপ অর্ডার ফেল করলে হয়ত ফ্র্যাঞ্চাইজিরা বিদেশি কাউকে নিয়ে আসবেন।

সেটা বাড়তি প্রেসার কি না? লিটন দাস গতবার নিয়ে ভাবতে নারাজ। তাই তো মুখে এমন কথা, ‘আগের বারের কথা চিন্তা করে লাভ আছে? নতুন সিরিজ, নতুনভাবে চিন্তা করছি। গতবারের জিনিস ধরে রেখে তো লাভ নেই, এক বছর আগে কি হইছে না হইছে। খেলা আছে কাল, কাল দেখা যাবে।’

এআরবি/আইএইচএস/আরআইপি