দেশজুড়ে

হত্যার পর গুম, ১ মাস পর মিললো মরদেহ

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় নিখোঁজের এক মাস পর ইউনুস (৩৫) নামে এক পোশাক শ্রমিকের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে ডিবি পুলিশ।

Advertisement

পাওনা টাকা চাওয়ার অপরাধে ইউনুসকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে মরদেহ গুম করে রেখেছে বলে ডিবি পুলিশ জানিয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ।

সোমবার সকালে উপজেলার দড়িগাঁও গ্রামের একটি কচুরিপানা পুকুর থেকে মরদেহ উদ্ধার করলে দুপুরে তা নিশ্চিত করে পুলিশ। নিহত ইউনুস আড়াইহাজার উপজেলার গহরদী গ্রামের আবুল কাসেমের ছেলে। তিনি স্থানীয় পাওয়ারলুম পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন।

নিহতের ভাই হাসান আলী জানান, গত ৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় তার ভাই ইউনুস বাসা থেকে মোবাইলে কথা বলতে বলতে বের হয়ে যায়। তার পর থেকেই নিখোঁজ।

Advertisement

ঘটনার পরের দিন ইউনুসের বোন মল্লিকা বেগম বাদী হয়ে আড়াইহাজার থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। যার নং (২২৯)। জিডি করার পর ঘটনা নিয়ে পুলিশকে একাধিকবার বলার পরও কর্ণপাত করেনি এবং তদন্ত করেনি। বরং স্থানীয় প্রভাশালীদের কথা মতো বাদীকে ধমক দিয়ে তাড়িয়ে দেন জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মাফুজ রানা। তিনি বাদীকে বলেন, তারাই নাকি ইউনুসকে আত্মগোপন করে থানায় মিথ্যা জিডি করেছেন।

পরে বাধ্য হয়ে মল্লিকা বেগম নারায়ণগঞ্জ ডিবি পুলিশের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। তারই প্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জ ডিবি পুলিশের এসআই ফিরোজ মুন্সি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা থেকে রোববার রাতে সন্দেহভাজন আসামি দড়িগাঁও গ্রামের ওয়াজ উদ্দীনের ছেলে আনোয়ারকে (৩৫) গ্রেফতার করে।

তারই দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বাড়ির পেছনের একটি পুকুর থেকে ইউনুসের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দড়িগাঁও গ্রামের আফতাব উদ্দীনের ছেলে মকবুলকে (২৮) গ্রেফতার করা হয়।

নিহতের ভাই হাসান আলী আরও জানান, ৪ বছর আগে ইউনুস তার বাবার সম্পত্তি বিক্রির নগদ ৪ লাখ টাকা আমানত হিসেবে আনোয়ারের কাছে রাখেন। ওই টাকা চাইতে গেলে ইউনুসকে হত্যার হুমকি দেন আনোয়ার। তখনই ইউনুস আড়াইহাজার থানায় অভিযোগ করলে আনোয়ারকে পুলিশ আটক করলেও প্রভাবশালীদের তদবিরে ছেড়ে দেয়া হয়।

Advertisement

নারায়ণগঞ্জ ডিবি পুলিশের এসআই ফিরোজ মুন্সি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ইউনুসকে নির্মমভাবে হত্যা করে মরদেহ গুম করার উদ্দেশ্যে পুকুরে ডুবিয়ে রাখা হয়।

এ ব্যাপারে আড়াইহাজার থানা পুলিশের এসআই মাহফুজ রানার সঙ্গে কথা বলার জন্য বার বার কল দিলেও তার মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আড়াইহাজার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ হক বলেন, মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।

মো. শাহাদাত হোসেন/এএম/আইআই