ক্যাম্পাস

ঢাবিতে শিক্ষকদের দুই পক্ষের হাতাহাতির ঘটনায় এক পক্ষের মানববন্ধন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগ ও বাম সমর্থিত শিক্ষকদের নীল দলের সাধারণ সভায় শিক্ষকদের দু’টি অংশের মধ্যকার হাতাহাতির ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে একটি অংশ। ওই দিন প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী কর্তৃক সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দিনের ওপর হামলা হয়েছে বলে দাবি করে মানববন্ধনটির আয়োজন করা হয়।

Advertisement

রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে নীল দলের ২০ শিক্ষক ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী অংশ নেয়। নীল দলের আহ্বায়ক ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল আজিজের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন; টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ও ফটোগ্রাফি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ জে এম শফিউল আলম ভূইয়া, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক বায়তুল্লাহ কাদেরী এবং অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দিন। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হোসাইন, সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ এম আমজাদ, সুফিয়া কামাল হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবিতা রেজওয়ানা চৌধুরী।

মানববন্ধন থেকে শিক্ষকরা ওই দিনের ঘটনায় আহত অধ্যাপক জামাল উদ্দিনের ওপর হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানান। অন্যথায় আগামীতে এ ধরনের কর্মসূচি অব্যাহত রাখারও ঘোষণা দেন। মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আব্দুল আজিজ বলেন, এ ধরনের মানববন্ধনে দাঁড়ানো আমাদের জন্য লজ্জার ব্যাপার। সমাজ আমাদেরকে সম্মানের স্থানে বসিয়েছে। কিন্তু আমরা একে প্রশ্নবিদ্ধ করছি।

তিনি বলেন, `আমরা নিজেদের দাবি করি আমরা মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক, সেকুল্যারিজমের ধারক বাহক। আমরা অত্যন্ত পরিশীলিত আচরণ করবো। কিন্তু এ ধরনের ঘৃণিত আচরণের মধ্য দিয়ে যখন একজন সাধারণ মানুষের আচরণের সঙ্গে আমাদের কোনো পার্থক্য খুঁজে পাওয়া যায় না তখন সমাজ লজ্জিত ও বিব্রতবোধ করে। এ ধরনের ঘটনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে ঘটে নাই। আমি আশা করবো আমরা এ সমস্যার সুষ্ঠু বিচার পাবো। মাননীয় ভিসি বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান করবেন।’

Advertisement

এসময় অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দীন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বশীল পদে থেকে প্রক্টর অধ্যাপক রব্বানী এ ধরনের প্রোগ্রামে অংশ নিয়ে বক্তব্য রাখতে পারেন না। এ ঘটনার দায়িত্ব নিয়ে তাকে পদত্যাগ করার আহ্বান করছি। তিনি যদি পদত্যাগ না করেন তাহলে ভিসি তাকে আসসালামুআলাইকুম বলে দেবেন। যদি তা না হয় তাহলে আমরা আমাদের কোড অব কন্টাক্ট অনুযায়ী আন্দোলন অব্যাহত রাখব।’

অধ্যাপক জামাল এ ঘটনায় শিক্ষক সমিতির নিশ্চুপ ভূমিকার সমালোচনা করেন। তিনি অবিলম্বে অধ্যাপক রব্বানীকে শিক্ষক সমিতি থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কারের দাবি জানান।

অধ্যাপক শফিউল আলম ভূইয়া বলেন, ‘ভিসি আসবেন, ভিসি যাবেন। এটি সরকারের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে, কাকে এ পদে নিয়োগ দেয়া হবে। কিন্তু ভিসি পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে একটি পক্ষ যেভাবে ক্ষমতার আস্ফালন ও ক্ষমতা বিস্তারের চেষ্টা করছে তা জাতিকে লজ্জিত করছে।’

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নীল দলের সভায় প্রক্টর কর্তৃক অধ্যাপক জামাল উদ্দীনকে হামলার অভিযোগ ওঠে। কিন্তু এ অভিযোগ প্রক্টর অস্বীকার করেছেন। তিনিও পাল্টা অধ্যাপক জামাল উদ্দীন কর্তৃক হামলা শিকার হন বলে দাবি করেন।

Advertisement

এমএইচ/এসএইচএস/এমএস