দেশজুড়ে

শূন্য রেখায় আটকা রোহিঙ্গারাও স্থান পেল কুতুপালংয়ে

সীমান্তের শূন্য রেখাস্থলে দু’দিন বিজিবির প্রতিরোধের মুখে আটকা পড়া প্রায় ৫ হাজার রোহিঙ্গাকে অবশেষে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়েছে।

Advertisement

গতকাল শুক্রবার দিনের বিভিন্ন সময়ে সীমান্তরক্ষী বিজিবির সহায়তায় তাদের ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়। সন্ধ্যা ৬টার পর তাদের স্থানান্তর করা হয়।

এদিকে, শূন্য রেখায় আটকে দেয়াদের দু’দিন পর ক্যাম্পে নেয়ার খবর পেয়ে ওপারে আরও হাজারও রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসতে সীমান্ত পারের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সূত্র।

সূত্র মতে, গত বুধবার রাতে ও বৃহস্পতিবার ভোরে নতুন করে উখিয়ার পালংখালি আঞ্জুমানপাড়া সীমান্ত দিয়ে এসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা চালায়। কিন্তু সীমান্তে পাহারারত বিজিবি সদস্যরা তাদের শূণ্য রেখায় আটকে দেয়। গত দু’দিন তারা সেখাইে ছিল। ওখানে বিজিবি, আইএনজিও এবং বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গা স্বজনরা তাদের খাদ্য সরবরাহ করেন। প্রকৃতিতে শীতের আমেজ চলায় সীমান্তে খোলা আকাশে তারা চরম বিপর্যস্ত সময় পার করে। শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে খুব বেকায়দায় পড়ে অনেক পরিবার।

Advertisement

বিজিবি কক্সবাজার ৩৪ ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর ইকবাল আহমেদ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পাবার পর নিয়মতান্তিকভাবে তল্লাশি করে শুক্রবার সকাল থেকে রোহিঙ্গাদের কড়া পাহারায় কুতুপালং ক্যাম্পে নিয়ে আসা শুরু হয়। এ কার্যক্রমে আরআরসি, ইউএনএইচসিআর এবং আইওএমসহ সহযোগিতা করছে বলে জানান মেজর ইকবাল।

তিনি বলেন, ওপারে আরও রোহিঙ্গা বাংলাদেশের প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে বলে খবর পেয়েছি। তবে সন্ধ্যা সোয়া ৬টা পর্যন্ত নতুন কোনো রোহিঙ্গাকে শূন্য রেখায় দেখা যায়নি।

উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এবং ক্যাম্পে প্রতিষেধক ক্যাম্পেইন ইনচার্জ ডা. মিজবাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, আমরা ইতোমধ্যে বাংলাদেশে অবস্থানকরা রোহিঙ্গাদের কলেরাসহ কয়েকটি টিকার আওতায় এনেছি। নতুন করে ক্যাম্পে আনা রোহিঙ্গাদের ৪ নভেম্বর শুরু হওয়া কলেরার দ্বিতীয় রাউন্ডে টিকার আওতায় নিয়ে আসা হবে।

পালংখালী ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান ও বালুখালী ওয়ার্ডের মেম্বার (সদস্য) নুরুল আবছার চৌধুরী জানান, পুরোনো এবং চলমান আরাকান সংকট মিলিয়ে প্রায় দশ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা ইতোমধ্যে বাংলাদেশে আশ্রয় পেয়েছে। এ সংখ্যা সীমান্ত উপজেলা টেকনাফ-উখিয়ার স্থানীয় জনগণের চেয়েও অধিক। রোহিঙ্গাদের কারণে পাহাড়গুলো দখল হয়ে গেছে। সাবাড় হচ্ছে গাছপালা। অভয়ারণ্য হারাচ্ছে বন্যপ্রাণি। ফলে হাতিরপালের আক্রমণে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। এসব মৃত্যু সরকারের জন্য বিব্রতকর। এটা ছাড়াও রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদক এবং নিষিদ্ধ বস্তু আসছে।

Advertisement

প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)’র তথ্য মতে গত ২৫ আগস্ট থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে নতুন রোহিঙ্গা আগমন হয়েছে ৬ লাখ ৭ হাজার। কিন্তু স্থানীয় দায়িত্বশীলদের মতে এ সংখ্যা ৮ লাখ ছাড়িয়ে যাবে। পূর্বে বাংলাদেশে আরও প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গার অবস্থান রয়েছে।

সায়ীদ আলমগীর/এমএএস/আরআইপি