গত সপ্তাহে স্বাধীনতার ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কাতালোনিয়া সরকারের বরখাস্ত হওয়া আট মন্ত্রীকে রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দিয়েছেন মাদ্রিদের একটি আদালত। বৃহস্পতিবার এক শুনানিতে বিচারক তাদের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন। খবর বিবিসি, গার্ডিয়ান।
Advertisement
এদিকে, আট মন্ত্রীকে গ্রেফতারের খবরে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন কাতালোনিয়ান জনগণ। মন্ত্রীদের মুক্তির দাবিতে কাতালোনিয়ার হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন।
স্পেনের জাতীয় আদালতের বিচারক চার্মেন লামেলা পুজেমনের আটমন্ত্রীকে গ্রেফতারের আদেশ দেন। গত সপ্তাহে পুজেমন এবং তার সরকারের বিলুপ্ত পার্লামেন্টের ১৩ রাজনীতিবিদকে তলব করে স্পেনের হাইকোর্ট এবং তাদের আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। তাদেরকে তিনদিনের মধ্যে আদালতে ৬২ লাখ ইউরো জমা করার নির্দেশও দেয়া হয়।
এদিকে, বৃহস্পতিবার ১৩ মন্ত্রীর মধ্যে ৮ জন মাদ্রিদে একটি আদালতে হাজির হন। আদালতের বিচারক ক্ষমতাচ্যুত কাতালোনিয়ার ওই ৮ মন্ত্রীকে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন। ওই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ, রাষ্ট্রদ্রোহ এবং সরকারি তহবিলের অপব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
Advertisement
গত সপ্তাহে স্বাধীনতার ঘোষণা দেয় কাতালোনিয়া। ওই ঘোষণার পরই কাতালোনিয়ার সরকার ভেঙে দিয়ে সরাসরি শাসনের আওতায় নিয়ে আসে স্পেন। কাতালোনিয়ার প্রধানসহ সরকারি কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করা হয়।
স্পেন কাতালোনিয়াকে সরাসরি শাসনের আওতায় নিয়ে আসার পর কাতালোনিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জোয়াকিম ফর্ন, কৃষিমন্ত্রী মেরিতজেল সেরেত, স্বাস্থ্যমন্ত্রী অ্যান্টনি কমিন, শ্রমমন্ত্রী ডলোর্স বাসা এবং আইন ও শাসনবিষয়কমন্ত্রী মেরিতজেল বোরসকে নিয়ে চার্লেস পুজেমন বেলজিয়ামে পাড়ি জমান। পুজেমনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, স্পেন সরকারের কাছ থেকে ন্যায্য শুনানির নিশ্চয়তা পেলেই তিনি দেশে ফিরবেন।
পুজেমনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। পুজেমন ছাড়াও আরও চার মন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরওয়ানা জারি করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন স্পেনের প্রসিকিউটররা। পুজেমন বেলজিয়াম থেকে ফেরেননি। তিনি আদালতে হাজিরও হননি। ওই চার মন্ত্রীও আদালতের সমন উপেক্ষা করেছেন।
এদিকে কাতালোনিয়ার সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী শান্তি ভিয়ার জামিন আবেদন গ্রহণ করেছেন আদালত। কারণ কাতালোনিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণার আগেই পদত্যাগ করেছিলেন তিনি।
Advertisement
গত সপ্তাহে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাজয় কাতালোনিয়ারর নেতা পুজেমনকে বরখাস্ত করেন এবং সরাসরি শাসনের আওতায় এনে আগামী ২১ ডিসেম্বর স্থানীয় নির্বাচনের ঘোষণা দেন।
স্বাধীনতার প্রশ্নে গত ১ অক্টোবর কাতালোনিয়ায় গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। গণভোটে প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ স্বাধীনতার পক্ষে মত দিলেও তা অবৈধ ঘোষণা করে স্পেনের সাংবিধানিক আদালত। এরপর থেকেই দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়।
টিটিএন/এমএস