কৃষি ও প্রকৃতি

চাহিদা বাড়ছে ধুমায়িত মাছের

স্মোকড ফিশ বা ধুমায়িত মাছ। মাছ সংরক্ষণের অনেকগুলো পদ্ধতির মধ্যে এটি একটি। এ পদ্ধতিতে মাছকে ১০-১৫ দিন সংরক্ষণ করা যায়। তবে স্মোকড পণ্যের সৃষ্ট, আলাদা ফ্লেভারের জন্যই এটি বেশি জনপ্রিয়। উন্নত দেশগুলোতে এর অনেক চাহিদা রয়েছে। আমাদের দেশে অল্প পরিমাণে চিংড়ি, কাতল, ভেটকি, ইলিশ, তেলাপিয়া ও পাঙ্গাস মাছ থেকে স্মোকড ফিশ তৈরি হচ্ছে। স্মোকড ফিশ বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় শিল্পে পরিণত হতে পারে।

Advertisement

পদ্ধতিপ্রথমে বাজার থেকে সতেজ মাছ কিনে আনতে হবে। এরপর মাছের আঁশ, পাখনা ফেলে দিয়ে ভালো করে ধুতে হবে। এবার মাথা কেটে ফেলে দিয়ে মাঝের কাটার দু'পাশে ফিলেট তৈরি করতে হবে। ফিলেটকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন না করে লেজের দিকে কিছুটা রেখে দিতে হবে যাতে ফিলেট মাছের শরীরের সাথেই থাকে। প্রতিটি ফিলেটকে আবার দু'ভাগে ভাগ করে দিতে হবে। ভালো করে ধুতে হবে। একটি পাত্রে ২০% লবণের দ্রবণ দিয়ে সাথে কিছু মশলা দিতে হবে। এবার এই দ্রবণে ৫-১০ মিনিটি তৈরিকৃত ফিলেট ডুবিয়ে রাখতে হবে। ৫-১০ মিনিটি পর উঠিয়ে বাতাসে শুকাতে হবে। এখানেও ৫-১০ মিনিট রেখে এবার স্মোকড চেম্বারে ফিলেটগুলো রাখতে হবে। এখানে ৭০-৭৫ ডিগ্রি তাপমমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ১ থেকে দেড় ঘণ্টা রাখতে হবে। চেম্বার থেকে বের করে পরিবেশন করে তা খাওয়া যায় বা বাজারে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা যায়।

যে যে মাছ থেকে করা যাবেবাংলাদেশে স্মোকড মাছ হিসেবে চিংড়ি (লইলা, হরিণা, চাগা, চাউমা), কাতল, ইলিশ, ভেটকি, তেলাপিয়া ও পাঙ্গাস ব্যবহৃত হচ্ছে।

জ্বালানী হিসেবেধোঁয়া সৃষ্টিতে কাঠ হিসেবে একাশিয়া, আম, আমড়া, অ্যালমন্ড, ব্ল্যাকবেরী, চেরী, চেস্টনাট, বাটারনাট ব্যবহার করা যেতে পারে। সাথে কাঠের গুড়া ব্যবহার করা হয়।

Advertisement

বাংলাদেশের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর স্মোকড পণ্য উৎপাদনের উপযুক্ত সময়। বরিশাল, বরগুনায় কাতল মাছ, টেকনাফে ইলিশ মাছ, এছাড়া পটুয়াখালী জেলা, বরগুনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, কক্সবাজারের চকোরিয়া উপজেলায় স্মোকড ফিস পাওয়া যায়। এছাড়া বর্তমানে কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিকভাবে স্মোকড পণ্য তৈরি করছে।

এই পণ্যটি খেতে অনেক সুস্বাদু। ধোয়ার ফ্লোভারবিশিষ্ট। মনোমুগ্ধকর কালার ইটের ন্যায় লালচে রঙের হয়। যা যেকোনো মানুষের কাছেই লোভনীয় করে তুলে।

বক্তব্যএ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ফিশারিজ টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহেদী হাসান বলেন, ধুমায়িত মাছ বিদেশে অনেক জনপ্রিয় খাবার। ভবিষ্যতে আমাদের দেশেও এর প্রসার হবে। আমাদের দেশে ধুমায়িত পণ্য তৈরি করে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানির প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।

শাহীন সরদার/এফএ/এসইউ/আইআই

Advertisement