আন্তর্জাতিক

নিষেধাজ্ঞায় সমাধান হবে না রোহিঙ্গা সঙ্কট, ইইউকে আইসিজি

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে তা রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে সহায়ক হবে না বলে ইউরোপের নীতিনির্ধারকদের সতর্ক করে দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি)। যা সঙ্কট মোকাবেলায় দেশটির বিকল্প ভবিষ্যৎ নীতি-নির্ধারণ, বিনিয়োগকারীদের কাছে নেতিবাচক বার্তা পাঠানোর ঝুঁকি ও দেশটির অর্থনীতির ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।

Advertisement

আইসিজি সতর্ক করে দিয়ে বলছে, ‘মিয়ানমারের বিরুদ্ধে দ্বিপাক্ষিক এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভ্রমণ এবং সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার মতো পূর্বের জারিকৃত নিষেধাজ্ঞা ফিরে এলে তা রোহিঙ্গা সঙ্কটের অগ্রগতি অর্জনে সহায়ক হবে না।’

ব্রাসেলসভিত্তিক বেসরকারি এই সংস্থাটি বিশ্বব্যাপী গণতান্ত্রিক রূপান্তর পর্যবেক্ষণ করে থাকে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও সদস্য রাষ্ট্রগুলো মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রধান ও অন্যান্য জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ স্থগিতের ঘোষণা দেয়ার দুই সপ্তাহ পর আইসিজি’র এই সতর্কবার্তা এল। উত্তর রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অতিরিক্ত ও নজিরবিহীন বলপ্রয়োগের কারণে দেশটির সঙ্গে সব ধরনের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা পর্যালোচনার হুঁশিয়ারি দেয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র ও সরঞ্জাম নিষেধাজ্ঞা আরোপেরও হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। একই সঙ্গে রাখাইনের পরিস্থিতি উন্নতি না হলে আরো অতিরিক্ত ব্যবস্থার কথা বিবেচনা করা হবে বলে জানায় ইইউ। তবে কোন ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে সেব্যাপারে পরিষ্কার কোনো তথ্য দেয়নি ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

Advertisement

উত্তর রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের সম্পত্তি ধ্বংস, ধর্ষণ ও নির্বিচারে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। গত আগস্টের শেষের দিকে রাখাইনে সেনাবাহিনীর ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশনে’ ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।

দেশটির সেনাবাহিনীর নিন্দার ঝড় উঠেছে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে। ২৫ আগস্ট রাখাইনে নিরাপত্তাবাহিনী ৩০টি তল্লাশি চৌকিতে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) হামলার জবাবে ওই অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী। মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের এই সংগঠনকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে।

১৯৯১ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞাসহ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এছাড়া দেশটির প্রায় এক হাজার কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানের পণ্য ও ইউরোপে মিয়ানমারের প্রায় ৫০০ কর্মকর্তার প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। ২০১৩ সালে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা ছাড়া সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে দেশটির সংস্কার প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানানো হয়। আগামী বছরের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বৃদ্ধি করেছে ইইউ।

রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলায় আইসিজি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের নেয়া পদক্ষেপে জোরালো সমর্থন জানাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও এর সদস্যদের আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে মিয়ানমারের বেসামরিক ও সামরিক নেতাদের সঙ্গে বহুপাক্ষিক ও দ্বিপাক্ষিক আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আইসিজি।

Advertisement

সূত্য : দ্য ইরাবতি।

এসআইএস/আরআইপি