জাতীয়

এ স্বীকৃতি বঙ্গবন্ধুর প্রাপ্য

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হওয়াই প্রমাণ করে ‘ওই ভাষণ’ বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ভাষণ। আর তিনি (বঙ্গবন্ধু) শ্রেষ্ঠ নেতা। এ স্বীকৃতি বঙ্গবন্ধুর প্রাপ্য। এটা বাংলাদেশের জন্য বড় অর্জন।

Advertisement

মঙ্গলবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

তোফায়েল বলেন, একটি ভাষণের মাধ্যমেই তিনি একটি জাতিকে মুক্ত করেছেন। একটি ভাষণের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। একটা ভাষণের মধ্য দিয়ে নিরস্ত্র জাতিকে সশস্ত্র জাতিতে পরিণত করেছিলেন। এটাই ছিল ৭ মার্চের ভাষণের মূল চালিকা শক্তি। ইউনেস্কোর এ স্বীকৃতি প্রমাণ করে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ শ্রেষ্ঠ ভাষণ। এটা একদিন হবে— এটা আমাদের বিশ্বাস ছিল।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে ওই ভাষণ দিয়েছিলেন। একদিকে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেন, অন্যদিকে তাকে যেন বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে অভিহিত করা না হয়, সেদিকেও তার সতর্ক দৃষ্টি ছিল। তার এই সতর্ক কৌশলের কারণেই ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এ জনসভার ওপর হামলা করার প্রস্তুতি নিলেও তা করতে পারেনি। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনেও শেখ মুজিবকে ‘চতুর’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

Advertisement

প্রতিবেদনে এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, শেখ মুজিব কৌশলে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে গেল, কিন্তু আমরা কিছুই করতে পারলাম না।

বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, পৃথিবীতে অন্য কোনও ভাষণ এতবার উচ্চারিত হয়নি, অন্য কোনও ভাষণ এতবার বাজানো হয়নি। অথচ এই ভাষণ আমরা এক সময় ১৫ আগস্ট ও ৭ মার্চ বাজাতে পারিনি। বিএনপির শাসনামলে আমাদের তা বাজাতে দেওয়া হয়নি। মাইক কেড়ে নেওয়া হয়েছে।

৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধুর নেওয়া কৌশল প্রসঙ্গে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ৭ মার্চের ভাষণে ইয়াহিয়া খানকে বঙ্গবন্ধু চারটি শর্ত দিয়েছিলেন, মার্শাল ল' তুলে নেওয়া, সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়া, নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা এবং পাকিস্তান বাহিনীর চালানো বর্বরতার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা। পাশাপাশি তিনি বাঙালি জাতিকে যার কাছে যা আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি তার ভাষণে কখনও বলেননি, আমাদের স্বাধীন করতে হবে। তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশকে শত্রুমুক্ত করা হবে। এটি ছিল কৌশল, যেন ইয়াহিয়া খানরা তাকে বিচ্ছিন্নতাবাদী না বলতে পারে; পাকিস্তান ভাঙার দায় যেন বঙ্গবন্ধুর ঘাড়ে না দিতে পারে।

Advertisement

উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো। সোমবার (৩০ অক্টোবর) প্যারিসে প্রধান কার্যালয়ে এ ঘোষণা দেন ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা। আজ (মঙ্গলবার) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এমইউএইচ/আরএস/একে/জেআইএম/এমএস