দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে চিকিৎসার জন্য আসা গরিব রোগীদের কাছে শেষ ভরসাস্থল হিসেবে সুপরিচিত ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল। কিন্তু শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের ধর্মঘটের কারণে গত দুই দিনে চিকিৎসাসেবা না পেয়ে শত শত রোগী ফেরত যাওয়ায় শঙ্কিত সাধারণ মানুষ।
Advertisement
দেশের অধিকাংশ সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও বিশেষায়িত হাসপাতালে নির্দিষ্টসংখ্যক শয্যার অতিরিক্ত রোগী ভর্তি না করার রেওয়াজ থাকলেও ব্যতিক্রম ঢামেক হাসপাতাল। এখানে এসে চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাওয়ার রেকর্ড নেই।
শয্যা খালি না থাকলেও হাসপাতালের ওয়ার্ডের মেঝে, বারান্দা ও করিডোরেও রোগী ভর্তি করিয়ে চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়। দুই হাজার ৬০০ শয্যার এ হাসপাতালে প্রতিদিন হাজারো অতিরিক্ত রোগীকে অপেক্ষাকৃত কম খরচে চিকিৎসা দেয়ার সুনাম রয়েছে দেশসেরা এ চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের।
ছবি: বিপ্লব দীক্ষিৎ
Advertisement
কিন্তু গত দুই দিনে দুই দফায় নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ নানা দাবিতে রোগীদের অনেকটা জিম্মি করে রেখেছেন শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা। এতে শত শত রোগী চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাওয়ায় ঢামেক হাসপাতালের ইতিবাচক ভাবমূর্তি ক্ষুন্ণ হচ্ছে। এমনকি, সুলভ মূল্যেও সুচিকিৎসা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন মানুষ।
গত রোববার (২৯ অক্টোবর) ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে স্বজনদের হাতে চিকিৎসক মারধরের প্রতিবাদ, জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও চাকরিস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা এ কর্মসূচি পালন করছেন।
ছবি: বিপ্লব দীক্ষিৎ
ঢামেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বহির্বিভাগে মোট আট লাখ সাত হাজার ৮৩১ জন ও জরুরি বিভাগে তিন লাখ ৯১ হাজার ৫৬৫ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া অভ্যন্তরীণ বিভাগে এ সময়ে এক লাখ ৫৯ হাজার ৬৪৯ জন ভর্তি হওয়া রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
Advertisement
ওই সময়ে ২৮ হাজার ৫৯ জন রোগীর বড় ধরনের ও ৩৮ হাজার ৮০ জন রোগীর ছোট অস্ত্রোপচার করা হয়। তবে অভ্যন্তরীণ বিভাগে চিকিৎসাধীন রোগীদের মধ্যে মারা যান ১৩ হাজার ৮৪৩ জন।
এদিকে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বহির্বিভাগে মোট সাত লাখ ৩৮ হাজার ৩৬৬ জন ও জরুরি বিভাগে তিন লাখ ৭২ হাজার ৯৯৭ এবং অভ্যন্তরীণ বিভাগে এক লাখ ৩৬ হাজার ৭৮৫ জন রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
ছবি: বিপ্লব দীক্ষিৎ
এ সময়ে ২১ হাজার ৭৩৭ জন রোগীর বড় ধরনের ও ২৯ হাজার ৬৪৮ জন রোগীর ছোট আকারে অস্ত্রোপচার করা হয়। এছাড়া অভ্যন্তরীণ বিভাগে এ সময়ে চিকিৎসাধীন রোগীদের মধ্যে মারা যান ১০ হাজার ৩০২ জন।
এমইউ/এসআর/আরআইপি