আন্তর্জাতিক

জমির বিনিময়ে সিঙ্গাপুর দেখছেন অন্ধ্রের চাষীরা

ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার রাজ্যের ১২৩টি কৃষক পরিবারকে সিঙ্গাপুর ঘুরে দেখার সুযোগ করে দিয়েছে। তবে এসব কৃষকরা কোনো লটারি বা সরকারি প্রকল্পের পুরস্কার পাননি। অন্ধ্রের নতুন রাজধানী গড়ে তোলার জন্য তাদের উর্বর কৃষিজমি সরকারের হাতে তুলে দিয়েছেন, তার প্রতিদান হিসেবে তাদের সিঙ্গাপুর বেড়াতে পাঠাচ্ছে রাজ্য সরকার। খবর- বিবিসি।

Advertisement

অন্ধ্রের নতুন রাজধানী শহরের নাম রাখা হয়েছে অমরাবতী। অন্ধ্র সরকার বলছে, অত্যাধুনিক এই নতুন শহরটি গড়ে তোলা হবে একেবারে সিঙ্গাপুরের আদলে। আর সে জন্যই জমিদাতাদের সিঙ্গাপুর দেখিয়ে আনছে সরকার। মোট চারটি দলে ভাগ হয়ে এসব কৃষকরা সিঙ্গাপুরে যাচ্ছেন। প্রথম ব্যাচটিকে গতকাল (সোমবার) সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে বিদায় জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু।

মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু জানিয়েছেন, ‘কৃষকরা যে জমি দিয়েছেন তাতে আমরা কী ধরনের শহর তৈরি করব, কী ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সেখানে থাকবে সেগুলো নিজের চোখে যাতে তারা দেখে আসতে পারেন তার জন্যই আমাদের এই উদ্যোগ।’

২০১৩ সালে অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্য ভাগ করে তেলেঙ্গানা আর অন্ধ্র -এই দুটো আলাদা রাজ্য গঠন করা হয়। পুরনো রাজধানী হায়দ্রাবাদ যেহেতু আগামীতে পুরোপুরি তেলেঙ্গানার ভাগে পড়ছে, তাই অন্ধ্রের জন্য নতুন রাজধানী তৈরির প্রয়োজন হয়ে পড়ে।

Advertisement

অন্ধ্রের গুন্টুর এলাকার প্রায় পঁচিশ হাজার কৃষক নতুন রাজধানী গড়ার জন্য তাদের মোট প্রায় পঁয়ত্রিশ হাজার একর জমি রাজ্য সরকারের হাতে তুলে দিয়েছেন। এসব জমির জন্য এককালীন মূল্য ছাড়াও সরকার তাদের প্রতি বছর ক্ষতিপূরণ দিয়ে যাবে। এই পঁচিশ হাজার কৃষকের মধ্যে থেকেই অনেক যাচাই-বাছাই করে মাত্র সোয়াশোর মতো লোককে সিঙ্গাপুর ভ্রমণের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে।

এদিকে সিঙ্গাপুরের বিমানভাড়া কৃষকরাই দিচ্ছেন। তবে তাদের চারতারা হোটেলে থাকা-খাওয়াসহ চারদিন শহরে বেড়ানোর যাবতীয় খরচ-খরচা অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারই বহন করছে।

প্রথম ব্যাচে যারা রওনা হয়েছেন তাদের মধ্যে একজন ভেলাগাপুডি গ্রামের ইদুপালাপতি সীতারামাইয়া। অমরাবতীর জন্য নিজের ১০ একর জমি দিয়েছেন তিনি। বিনিময়ে তিনি প্রতি বছর ৫ লক্ষ রুপি করে ক্ষতিপূরণ পাবেন।

৬৫ বছর বয়সী সীতারামাইয়া জানান, ‘আমাদের দেওয়া জমিতে কী ধরনের শহর হবে সেটা তো একবার গিয়ে দেখে আসা দরকার। আমরা সেখানে থাকতে পারি বা না-পারি, আমাদের ছেলেপুলেরা হয়তো একদিন সেখানে থাকতে পারবে!’

Advertisement

আরএস/জেআইএম