চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ২৬ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা। রোববার শেষ হলো এ ভর্তি যুদ্ধ। এ পরীক্ষায় জালিয়াতির মাধ্যমে ৮০ জনকে ভর্তি করাতে জনপ্রতি দেড় লাখ টাকা করে চুক্তি হয়। মোট ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা।
Advertisement
তবে পুলিশ ও প্রশাসনের কঠোর তৎপরতায় ভেস্তে যায় তাদের সেই পরিকল্পনা। বরং একে একে ধরা পড়ছে চক্রটির সদস্যরা। তাই ধারণা করা হচ্ছে কপাল পুড়বে চুক্তিবদ্ধ শিক্ষার্থীদেরও।
ইতোমধ্যেই ডিভাইসসহ এ চক্রের দুই সদস্য ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও মার্কেটিং বিভাগের (২০১০-১১) ইশতিয়াক আহমেদ সৌরভ ও ইংরেজী বিভাগের (২০১৩-১৪) শরীফুল ইসলাম নাজমুলকে নগরী থেকে আটক করা হয়।
এদিকে গতকাল শনিবার গভীর রাতেও প্রক্সির পরিকল্পনাকারী ছাত্রলীগ নেতা ও এক শিক্ষার্থী আটক করা হয়। পরে সকালে ৪ ভর্তিচ্ছুসহ ৫ জন ধরা পড়ে। তবে তাদের বিষয়ে এখনও বিস্তারিত জানানো হয়নি।
Advertisement
এদিকে পুলিশের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে আটক ইশতিয়াক এ চক্রের সঙ্গে জড়িত চবির আরও ৪ শিক্ষার্থীর নাম বলেছে। তাদের বিষয়ে যাচাই বাছাই ও খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে এখনি তাদের নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না বলে জানায় পুলিশ।
জানা গেছে, ইশতিয়াকদের চক্রটি ৩টি গ্রুপে কাজ করতো। একটি গ্রুপ কিছু ভর্তিচ্ছু সংগ্রহ ও চুক্তি করতো। যাদের ফলাফল মোটামুটি পর্যায়ের এবং আর্থিক অবস্থা ভালো। অন্য একটি গ্রুপ চুক্তিবদ্ধ শিক্ষার্থীদের ডিভাইস ব্যবহারের প্রশিক্ষণ ও সরবরাহ করতো। ডিভাইসটি দেখতে ভিসা বা মাস্টার কার্ডের মতো। তাতে সিম লাগানোর স্লটও রয়েছে। পরীক্ষার সময় এ চক্রটির আরেকটি গ্রুপ একটি কন্ট্রোল রুমের বসে কিছু মেধাবীদের মাধ্যমে সঠিক উত্তর কেন্দ্রে নির্দিষ্ট ভর্তিচ্ছুকে পাঠাতো।
এদিকে প্রতিবছর এ চক্রের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে অনেক ভর্তিচ্ছুক ভর্তি হতে চেষ্টা করতো। এদের কিছু অংশ ধরা পড়লেও, অন্যরা পার পেয়ে যেতো। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলছেন, যারা এ চক্রের মাধ্যমে ভর্তি হয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হোক।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আলী আজগর চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, জালিয়াত চক্রের মাধ্যমে কেউ ভর্তি হবার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদেরও ভর্তি বাতিল করা হবে। কাউকে ছাড় নয়।
Advertisement
ইতোমধ্যেই পাবলিক পরীক্ষা অধ্যাদেশ আইন-১৯৮০ এর ১৩ ধারায় বায়েজীদ থানায় আটক দুইজনের নাম মামলা হয়েছে। বর্তমানে তারা কারগারে রয়েছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক আবছার উদ্দিন রুবেল জাগো নিউজকে বলেন, চবি ৩-৪ জন শিক্ষার্থী নাম পাওয়া গেছে। তবে আরও তথ্যের জন্য তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন করা হলেও আদালত জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে।
এর আগে রোববার রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে মহানগর হাকিম শফি উদ্দিনের আদালত রিমান্ড নামঞ্জুর করে আসামিদের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয় পুলিশকে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী মো. শাহাবুদ্দিন।
আবদুল্লাহ রাকীব/এমএএস/জেআইএম