ম্যাচের পর মালির ফুটবলাররা যখন পরস্পরকে সান্ত্বনা দিতে দিতে মাঠ ছাড়ছিলেন তখন বিবেকানন্দ যুব ভারতি ক্রীড়াঙ্গনের ভরা গ্যালারিতে তুমুল করতালি। ড্রেসিং রুমের টানেলে প্রবেশের আগে দর্শকের ভালোবাসার জবাবও দিয়েছেন আফ্রিকার দেশটির যুব ফুটবলাররা। কিন্তু মুখে হাসি ছিল না তাদের। ফিফা অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বাকাপের গত আসরের রানার্সআপ মালি দুর্দান্ত ফুটবল খেলেও হারের বেদনা নিয়ে দেশে ফিরতে হচ্ছে তাদের।
Advertisement
স্পেন-ইংল্যান্ড ফাইনাল রাতে হলেও বিকেলেই ভরে যায় সল্ট লেকের যুব ভারতি স্টেডিয়ামের গ্যালারি। বেশিরভাগ দর্শকই ছিল ব্রাজিলের সমর্থক। হাতে ব্রাজিলের পতাকা, মাথায় ক্যাপ-বাদ্যযন্ত্র নিয়েও হাজির হয়েছিলেন পেলে-নেইমারদের উত্তরসূরিদের খেলা দেখতে; কিন্তু যাদের জন্য এত আয়োজন দর্শকের সেই ব্রাজিল মন ভরাতে পারলো না তাদের। সমর্থকদের জয়টা উপহার দিতে পারলেও ব্রাজিলীয় ফুটবলটা প্রদর্শন করতে পারেনি তারা।
সল্ট লেকে বরং ফুটবলের ফুল ফোটালো মালি। গত আসরের রানার্সআপ আফ্রিকার দেশটির সামনে ব্রাজিলের যুবারা ছিলো অনুজ্জ্বল। ২-০ গোলে জিতেছে ব্রাজিল। কিন্তু ম্যাচের চিত্রের সঙ্গে স্কোরটা কোনোভাবেই যায় না। মালির দুর্দান্ত ফুটবলের ম্যাচটি ছোঁ মেরে নিয়ে গেলো ব্রাজিল।
আগের দিন ব্রাজিল যুব দলের কোচ কার্লোস আমাদেউ বলেছিলেন, ২৪ দলের মধ্যে তৃতীয় হওয়াও কম কৃতিত্বের নয়। আমরা জয় দিয়েই বিশ্বকাপটা শেষ করতে চাই। তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে ব্রাজিল শুধু জয়টাই পেলো। তাতে কোচের তৃতীয় হওয়ার লক্ষ্যটা পূরণ হলেও দর্শকের ভালো ফুটবল দেখার স্বপ্ন থেকে গেলো স্বপ্নই।
Advertisement
ব্রাজিলের কাছে হারের পর বেশি কপাল চাপড়াবেন মালির গোলরক্ষক ইউসুফ কইতা। ৫৫ মিনিটে ব্রাজিলের গোলটি যে হয়েছে তারই ব্যর্থতায়। বক্সের মাথা থেকে অ্যালান যে শটটি নিয়েছিলেন তাতে না ছিল ধার, না ছিল গতি। বলটি ছিল গোলরক্ষকের হাতের নাগালে। কিন্তু অ্যালানের সাধারণ শটটিই এগিয়ে দেয় ব্রাজিলকে। বল গোলরক্ষকের দুই পায়ের ফাঁক গলিয়ে চলে যায় জালে।
কখনো ছোট, কখনো লম্বা খেলে মালি কোনঠাসা করে রাখে ব্রাজিলকে। কিন্তু ফুটবল গোলের খেলা, দুটি গোল করে ম্যাচ শেষে জয়ী দলের নাম ব্রাজিল। উপমহাদেশের প্রথম বিশ্বকাপের ট্রফি উড়িয়ে নেবে ব্রাজিল-এমন প্রত্যাশা ছিল অনেকের। বিশেষ করে কোলকাতাজুড়ে ছিল ব্রাজিলের গান। শেষ পর্যন্ত তারা ঘরে ফিরছে তৃতীয় হয়ে। তাও শুধু গোল দিয়ে, সুন্দর ফুটবল খেলে নয়।
পিছিয়ে পড়া মালি গোলের জন্য মরিয়া হয়েও সফল হয়নি। উল্টো শেষ বাঁশির মিনিট তিনেক আগে দ্বিতীয় গোল খেয়ে হারের ব্যবধান একটু বড় হয় তাদের। ব্রাজিলের ব্যবধান বাড়ানো গোলটি অবশ্য পরিকল্পিত এক আক্রমনের ফল। বক্সে বল পেয়ে অ্যালান ঠেলে দেন অনেকটা অরক্ষিত থাকা বদলি খেলোয়াড় ইউরি আলবার্তোকে। ৭৪ মিনিটে লিনকনের পরিবর্তে মাঠে নামা আলবার্তোর শট নিশ্চিত করে ব্রাজিলের জয়।
আরআই/আইএইচএস/জেআইএম
Advertisement