এসএসসি বা দাখিল পর্যন্ত মাধ্যমিক পর্যায়ে চলমান উপবৃত্তি প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে। এর মাধ্যমে ৭৩ লাখ ৫৪ হাজার শিক্ষার্থী উপবৃত্তির আওতায় আসবে। ২০১৪ সালে অনুমোদন পাওয়া এই প্রকল্পের মেয়াদ এ বছরই শেষ হচ্ছে। এজন্য নতুন করে প্রকল্পের সংশোধনী এনে ৫৩৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয় বাড়ানো হচ্ছে, যা মূল বরাদ্দের চেয়ে ৬৮ দশমিক ৮ শতাংশ।
Advertisement
এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি প্রক্রিয়াকরণ শেষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) মঙ্গলবারের সভায় অনুমোদন দেয়ার সুপারিশ করেছে পরিকল্পনা কমিশন। অনুমোদন পেলে ২০১৭ সালের জুন থেকে পরবর্তী দু বছরে এটি বাস্তবায়ন করবে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ।
শিক্ষা বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, দেশব্যাপী চলমান প্রকল্পের আওতাধীন উপবৃত্তি কার্যক্রম বন্ধ হলে বিপুল সংখ্যক দরিদ্র শিক্ষার্থী সরকারের উপবৃত্তি থেকে বঞ্চিত হবে। এছাড়া অধিদফতরের অনুরূপ বৃত্তি প্রকল্পের মধ্যে বৃত্তির হার হারমোনাইজেশনের কাজ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তাই এ প্রকল্পের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা জরুরি। প্রকল্পের আওতায় দেশের ৭ বিভাগের ১৮৩ উপজেলায় এ উপবৃত্তি কার্যক্রম চলবে। পুরো টাকা ব্যয় হবে সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন থেকে। এর আগে ২০১৪ সালে নেয়া প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭৯১ কোটি ৩৮ লাখ ৩৬ হাজার টাকা।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য ড. কামাল উদ্দীন আহমেদ পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে জানান, এ প্রকল্পের মাধ্যমে দরিদ্র শিক্ষার্থীরা শিক্ষার সুযোগ পাবে। নারী শিক্ষা অর্জন বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। শিক্ষার্থী ভর্তির হার বাড়বে। এটি জাতীয় শিক্ষানীতি ও ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় এ প্রকল্পটি অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়েছে।
Advertisement
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এ প্রকল্পের ফলে গরিব পরিবার থেকে আগত শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধ হবে। এছাড়া এবারই প্রথম প্রথাগত ব্যাংকিং ব্যবস্থার বাইরে অনলাইন পদ্ধতির মাধ্যমে (মোবাইল, বিকাশ বা অন্য কোন সহজ পদ্ধতি) সরাসরি শিক্ষার্থীদের কাছে অর্থ পৌঁছানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, নারী শিক্ষাকে উৎসাহিত করা, ছেলেমেয়ের মধ্যে শিক্ষার বৈষম্য দূরীকরণ, মেয়েদের শিক্ষার হার বৃদ্ধি, নারীর ক্ষমতায়ন, পরীক্ষায় পাসের হার বাড়ানোসহ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় দেশব্যাপী ষষ্ঠ থেকে স্নাতক পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে উপবৃত্তি কার্যক্রম চালু করা হয়।
বর্তমানে সারাদেশে ৫ প্রকল্পের মাধ্যমে ষষ্ঠ থেকে স্নাতক (পাস) পর্যন্ত উপবৃত্তি চালু রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি প্রকল্পের মাধ্যমে সারাদেশে মাধ্যমিক পর্যায়ে উপবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে। তাছাড়া উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ছাত্রীদের উপবৃত্তি প্রদান (চতুর্থ পর্যায়) প্রকল্পের মাধ্যমে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে এবং স্নাতক পাস ও সমমানের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি প্রদান শীর্ষক একটি প্রকল্পের মাধ্যমে স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি কার্যক্রম চালু রয়েছে। উপবৃত্তি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলার জন্য প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করা হয়েছে।
এমএ/ওআর/জেআইএম
Advertisement