আইন-আদালত

বেশি বললে সমস্যা হয় : খালেদা

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে দ্বিতীয় দিনের মতো প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বক্তব্য দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালতে খালেদা জিয়া তার অসমাপ্ত বক্তব্য দেন। এই দিন বক্তব্য শেষ না হওয়ায় দুই নভেম্বর ফের বক্তব্য দেয়ার দিন ধার্য করেছেন আদালত।

Advertisement

এ সময় খালেদা তার বক্তব্যে বলেন, মাননীয় আদালত আমার বেশি বললে সমস্যা হয়। তাই আজকের মতো সময় মঞ্জুর করেন। অপরদিকে দুদকের

আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, আত্মপক্ষ সমর্থনে তিনি পুরোটাই রাজনৈতিক বক্তব্য দিচ্ছেন, এটি আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো বক্তব্য নয়।

এরপর বিচারক খালেদার সময় মঞ্জুর করে পরবর্তী দিন ধার্য করেন। আদালত বলেন, সেদিনই আপনার (খালেদা) অসমাপ্ত বক্তব্য শেষ করতে হবে।

Advertisement

খালেদা জিয়া তার বক্তব্যে আরও বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। জারি করা হয়েছে গ্রেফতারি পরোয়ানাও। আমাকে চার দশকের স্মৃতি বিজড়িত বাসা থেকে উৎখাত করা হয়েছে। এর আগে, বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে আদালতে উপস্থিত হন তিনি।

এদিন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের অসমাপ্ত বক্তব্য দেয়া এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাক্ষীকে পুনরায় জেরা করার দিন ধার্য ছিল।

গত ১৯ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) দুর্নীতির দুই মামলায় দুই লাখ টাকা মুচলেখায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত। একই সঙ্গে বিদেশ যেতে হলে খালেদা জিয়াকে আদালতের অনুমতি নিতে হবে বলে শর্ত প্রদান করা হয়।

এ ছাড়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে এক ঘণ্টা বক্তব্য দেন খালেদা জিয়া। তার বক্তব্য শেষ না হওয়ায় পরবর্তী বক্তব্যের জন্য ২৬ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) দিন ধার্য করেন আদালত। এর আগে গত ১২ অক্টোবর আদালতে হাজির না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে এই দুই মামলাই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ আদালত।

Advertisement

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশিদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী (পলাতক), হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

এ ছাড়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

২০১০ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন আর রশীদ। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন- মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

জেএ/এআরএস/আরআইপি