বিনোদন

উন্নত চিকিৎসা পাচ্ছেন না ক্যামেরাম্যান মনির উদ্দিন

চলচ্চিত্রের প্রবীণ ক্যামেরাম্যান (স্থিরচিত্র গ্রাহক) মো. মনির উদ্দিন ভালো নেই। কয়েক বছর ধরে তিনি ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যায় ভুগছেন। চলতি মাসের শুরু থেকে নতুন করে চোখের সমস্যায় ভুগছেন মনির। বাম চোখে আগে কম দেখলেও বর্তমানে ডান চোখেও সমস্যা দেখা দিয়েছে।

Advertisement

এখন মনির উদ্দিন দুচোখে দেখতে পাচ্ছেন না। গেল মঙ্গলবার থেকে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে মানবেতর জীবনযাপন পার করছেন তিনি। উন্নত চিকিৎসার অভাবে মনির উদ্দিনের শারীরিক অবস্থা দিনদিন খারাপ হচ্ছে বলে জাগো নিউজকে জানান তার স্ত্রী নুরজাহান বেগম।

বুধবার (২৫ অক্টোবর) রাতে নুরজাহান বেগম বলেন, ‘এর আগে বারডেম হাসপাতালে ডায়াবেটিসের চিকিৎসা নেয়া হত। কিছুদিন আগে পপুলার হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। এরপর বাংলাদেশ মেডিকেলে চেকআপ করা হচ্ছে। এছাড়া ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য হাসপাতালেও চিকিৎসা চলছে। হাসপাতালে গেলেই এক হাজার ১০০ টাকার টেস্ট করা লাগে। প্রতি সপ্তাহেই ১৫ হাজার টাকা লাগে। দুইমাস ধরে কোনো কাজ করেন না। তিন ছেলেমেয়েও সাহায্য করছে। কিন্তু ছেলেমেয়েদের আর্থিক অবস্থাও ভালো নয়। এখন উত্তরায় মেয়ের বাসায় আছি অসহায় অবস্থায়। গাজীপুরের কোনাপাড়ায় ভাড়া বাসা ছেড়ে দিয়েছি। ভিটেমাটি যা ছিল চিকিৎসা চালাতে গিয়ে সব বিক্রি করা হয়েছে। আর পারছি না।’

মনির উদ্দিন ক্যামেরাম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য। দুই বছর আগে ওই সমিতি থেকে তার চিকিৎসায় ১৫ হাজার টাকা তুলে দেয়া হয়েছিল বলে জানান তার স্ত্রী নুরজাহান বেগম।

Advertisement

চিত্রপরিচালক উত্তম আকাশের বেশিরভাগ ছবির ক্যামেরাম্যান ছিলেন মনির উদ্দিন। এ ব্যাপারে উত্তম আকাশ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার প্রায় সব ছবিতে মনির কাজ করেছে। সে অমায়িক মানুষ। সর্বশেষ আমার ‘নেতা হব’ ছবিতে কাজ করার কথা ছিল মনিরের। কিন্তু অসুস্থতার জন্য করতে পারেনি। সে এত অসুস্থ তা আমার জানা ছিল না। চেষ্টা করব মনিরের পাশে দাঁড়ানোর।’

মনিরের স্ত্রী নুরজাহান বলেন, ‘আমার স্বামী সারাজীবন চলচ্চিত্রের জন্য কাজ করেছে। ঠিকমতো খেত না বাসায়, সবসময় কাজ নিয়ে পড়ে থাকত। সন্তানদের সময় দিতে পারেনি কাজের জন্য। আজ এই সঙ্কটময় অবস্থায় কেউ তার পাশে এসে দাঁড়াচ্ছে না। মাঝেমধ্যে চিত্রনায়িকা মুনমুন খবর নেন। আমি চলচ্চিত্রে মানুষের কাছে অনুরোধ জানাই, আমার স্বামীর সুস্থতায় পাশে এসে দাঁড়ান। ওনার জন্য দোয়া করবেন যেন সুস্থ হয়ে যায়।’

এ ব্যাপারে অভিনেত্রী মুনমুন জাগো নিউজকে বলেন, ‘উত্তরায় আমি যে বাসায় থাকি তার দুইতলায় মনির ভাই তার মেয়ের বাসায় থাকেন। তিনি ক্যামেরাম্যান সমিতির সদস্য। অনেকদিন ধরে অসুস্থ। তবে ইদানীং তার অবস্থা বেশি খারাপ। বিষয়টি আমি আজ (বুধবার) জানিয়েছি ক্যামেরা অ্যাসোসিয়েশনকে। সবাইকে ওনার পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’

১৯৮৯ সালে চিত্রপরিচালক এহতেশামের ‘মৌমাছি’ ছবিতে প্রথম ক্যামেরাম্যান হিসেবে কাজ করেন মনির উদ্দিন। এরপর ‘আমার জান’, ‘হিরা মতি’, ‘ঢাকাইয়া পোলা বরিশাল্ল্যাইয়া মেয়ে’, ‘মুক্তির সংগ্রাম’ ছাড়াও দুই শতাধিক ছবির ক্যামেরাম্যান ছিলেন তিনি।

Advertisement

এনই/এলএ/জেডএ/বিএ