দেশজুড়ে

ব্যবসায়ীকে জিম্মি করে টাকা আদায় : ডিবির ৭ সদস্য বরখাস্ত

কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশ বিভাগের (ডিবি) ৭ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে ২ জন এসআই, ৩ জন এএসআই ও ২ জন কনস্টেবল।

Advertisement

টেকনাফ পৌরসভার এক কাউন্সিলরের ভাইকে আটকের পর জিম্মি করে ১৭ লাখ টাকা আদায়ের ঘটনায় সেনা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ার পর তাদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বুধবার দুপুর ২টার দিকে জেলা পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেন এ আদেশ দেন।

এর আগে টেকনাফ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মনিরুজ্জামানের ভাইকে ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে আটকের পর জিম্মি করে আদায় করা ১৭ লাখ টাকাসহ ওই ৭ জনকে আটক করে সেনাবাহিনীর একটি দল। এসময় তাদের ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাসও জব্দ করা হয়। বুধবার ভোর ৪টার দিকে ডিবির এসব সদস্যকে আটক করা হয়। পরে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল আটকদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে যান।

তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন টেকনাফের সাবরাং নয়াপাড়া ত্রাণকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা মেজর নাজিম আহমেদ। তার নেতৃত্বেই ডিবির ওই দলটিকে আটক করা হয়।

Advertisement

আটক ব্যবসায়ীর নাম আবদুল গফুর। তিনি টেকনাফ পৌরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মনিরুজ্জামানের ভাই ও কম্বল ব্যবসায়ী। কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান বলেন, আবদুল গফুর মঙ্গলবার কক্সবাজার আয়কর অফিসে রিটার্ন জমা করতে যান। সেখান থেকে তাকে তুলে নিয়ে যায় ডিবির একটি দল। এরপর তাকে ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে চালান দেয়ার হুমকি দিয়ে পরিবারের কাছে ৫০ লাখ টাকা দাবি করে ডিবির ওই দলটি।

দর-কষাকষির পর ১৭ লাখ টাকায় তাকে ছেড়ে দিতে সম্মত হয় ডিবি দল। এসব বিষয় সেনাবাহিনীকে অবহিত করা হয়। কথামতো টেকনাফ এসে টাকা বুঝে পাওয়ার পর তাকে ভোররাতে মেরিন ড্রাইভ এলাকায় ছেড়ে দেয় আটককারিরা।

বিষয়টি সেনাবাহিনীকে জানালে টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ এলাকার লম্বরী সেনাবাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে ডিবির গাড়িটি সংকেত দিয়ে থামানো হয়। গাড়িতে এসআই আবুল কালাম আজাদ, এসআই আলাউদ্দিন ও এসআই মনিরুজ্জামান, তিনজন এএসআই এবং ২ কনস্টেবলসহ ৮ জন ছিলেন। গাড়ি থামানোর পর এসআই মনির কৌশলে পালিয়ে যান। গাড়ি থেকে জিম্মির বিনিময়ে আদায় করা ১৭ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। এরপর বাকি ৭ জনকে সাবরাং সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়।

মেজর নাজিম আহমেদ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কক্সবাজারের পুলিশ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সেনাবাহিনী ক্যাম্পে এসে আটকদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিয়ে যান। তবে উদ্ধার করা টাকা আমাদের হাতেই রয়েছে।

Advertisement

এদিকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্র তথ্যের সত্যতা স্বীকার দুপুর সোয়া একটার দিকে বলেন, তালিকাভুক্ত এক ইয়াবা ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছিল। তারা কৌশলে ডিবি পুলিশকে ফাঁসিয়েছে। সেনা হেফাজত থেকে ডিবির সেই দলটিকে নিয়ে অফিসে ফিরছেন পুলিশ সুপারসহ অন্যরা। অপরদিকে কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল বলেন, অভিযুক্ত দু’এসআই তিন এএসআই ও দু’কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এটি জেলা গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক ইয়াসির আরাফাতের নিয়ন্ত্রণাধীন ২ নম্বর টিম। ইনচার্জকে না জানিয়ে আটকরা এসব অপকর্ম করেছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সায়ীদ আলমগীর/এফএ/আরআইপি