রোববার সারাদিনই কলকাতা জুড়ে ছিল যেন ফুটবল উৎসব। অনুর্ধ্ব-১৭ ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবল হলে কী হবে। আগামী দিনের রোনালদো-রোনালদিনহো, রোমারিও কিংবা হালের নেইমাররা যে এখান থেকেই বেরিয়ে আসবেন! আগামী দিনের বিশ্বজয়ীদের সঙ্গে একদিন উৎসবে মেতে উঠতে তো কোনো দোষ নেই।
Advertisement
কলকাতাবাসীর উৎসবকে পুরোপুরি হলুদ রঙে রাঙিয়ে দিলো জুনিয়র সাম্বা ফুটবলাররা। অনুর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে চির প্রতিদ্বন্দ্বী জার্মানিকে ২-১ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠে গেলো ব্রাজিল। কলকাতার যুব ভারতী যেন একদিনের জন্য পরিণত হয়েছিল হলুদ আর নিল সমুদ্রে। সেই সমু্দ্রে আবগাহন করলো ব্রাজিল অনুর্ধ্ব-১৭ দলের ফুটবলাররা।
সাম্বা ঝড়, ঠিক ছয় মিনিটের জন্য। তাতেই ১-০ পিছিয়ে পড়ার বোঝা থেকে ব্রাজিলের লিড ২-১। ওখানেই খেলা শেষ। জন্ম নিল নতুন রূপকথার। শেষ বাঁশি বাজা পর্যন্ত লিড ধরে রেখে জার্মানিকে গুডবাই জানিয়ে দিল ব্রাজিলের জুনিয়র ফুটবল দল।
৮ জুলাই, ২০১৪-এর ১-৭ লজ্জার হারের কলঙ্ক মুছে ফেলে কলকাতার যুবভারতিতে নতুন ইতিহাস লিখল লিঙ্কন-পওলিনহোরা। বড়দের বিশ্বকাপে সেবার নেইমারহীন ব্রাজিলকে সেমিফাইনাল থেকে লজ্জার হার উপহার দিয়ে ছিটকে দিয়েছিল জার্মানি। এবার সেই জার্মানির জুনিয়রদের বিদায় করে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করল ব্রাজিল।
Advertisement
তবে লড়াই এতটা সহজ ছিল না। শুরুতেই প্রথমার্ধে পিছিয়ে পড়ে পাহাড়প্রমাণ চাপের মুখে পড়ে যায় জুনিয়রদের বিশ্বকাপে তিনবারের চ্যাম্পিয়নরা। পাল্টা আক্রমণ করেও ফল মেলেনি। হতাশা নিয়েই প্রথমার্ধে মাঠ ছেড়েছিল ব্রাজিল।
দ্বিতীয়ার্ধে শেষ বিশ মিনিট নিজেদের দিকে হাওয়া ঘুরিয়ে নিয়েই বাজিমাত করলো সাম্বার দেশ। ৭০ মিনিটে ব্রাজিলের প্রথম গোলটা ওয়েবারসনের আর দ্বিতীয়টা পওলিনহোর। ছয় মিনিটে ঝড়েই বুঝিয়ে দিল কেন দলটার নাম ব্রাজিল। জার্মানিকে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করল সেলেসাওরা।
দুটি গোলের মধ্যে পওলিনহোর গোলটা সেরাই বলা চলে। ৭৭ মিনিটে ২৫ গজ দূর থেকে তার জোরালো শটটা জালে জড়াতেই ৬৬ হাজারের যুব ভারতির গ্যালারিতে সাম্বা ড্যান্স। গোল করেই যুবভারতির অ্যাথলেটিক ট্র্যাকে দৌড় লাগাল গোটা ব্রাজিল দল। শেষমেষ সেই দৌড় থামল গ্যালারিতে গিয়ে। ফেন্সিংয়ের জাল ধরে ব্রাজিল যুব দলের উৎসব।
শুরুটা অবশ্য সাম্বার ঝড়ের কোনও ছোঁয়া ছিল না ব্রাজিলের খেলার। গ্যালারি তেতে উঠলেও গোলের দরজা খুলতে পারেনি পওনিলহোরা। বক্সের ভেতরে জটলার সুযোগ তৈরি করেও জার্মানি ডিফেন্সের সামনে বারবারই ধরাশায়ী হতে হয়েছে ব্রাজিলকে।
Advertisement
নিজেদের বক্সে জার্মান আক্রমণ প্রতিহত করতে না পেরে উল্টে ফাউল করে বসে সেলেসাওরা। এতেই পেনাল্টি। সহজ গোল জার্মান অধিনায়ক আর্পের। ২১ মিনিট সময়ের ঘটনা এটা। এরপর ৫০ মিনিট ধরে গোল দেওয়ার মরিয়া চেষ্টা। শেষে ছয় মিনিটের ব্যবধানে জোড়া গোলে ব্রাজিলের জয় ২-১ এ।
আইএইচএস/এমআরএম