খেলাধুলা

ওয়ানডেতেও হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ

টেস্ট সিরিজের পর দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ওয়ানডেতেও হোয়াইট ওয়াশ হলো বাংলাদেশ। হোয়াইট ওয়াশ এড়াতে বাংলাদেশের দরকার ছিল ৩৭০ রান। কিন্তু বাংলাদেশকে ১৬৯ রানেই থামিয়ে দিয়েছেন প্রোটিয়া বোলাররা। ফলে ২০০ রানের বড় ব্যবধানে হেরেই 'ধবল ধোলাই' হতে হলো মাশরাফি বাহিনীকে।

Advertisement

দক্ষিণ আফ্রিকার পাহাড়সম রান তাড়া করতে গিয়ে যখন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা মুখ থুবড়ে পড়ছিলেন, তখন শক্ত হাতে দলকে টেনে নিতে শুরু করেন সাকিব আল হাসান। দলের বিপর্যয়ের সময় করেন একটি হাফসেঞ্চুরিও। তবে দলকে খুব বেশিদূর নিয়ে যেতে পারেননি তিনি। ৬৩ রানেই সাজঘরে ফিরতে হয়েছে বাংলাদেশী অলরাউন্ডারের। এটি বাংলাদেশের পক্ষে এ ম্যাচে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস।

সাকিবের পর সর্বোচ্চ ৩৯ রান করেন সাব্বির রহমান। এরপর বাংলাদেশের আর কোনো ব্যাটসম্যান উল্লেখযোগ্য কোনো রান করতে পারেননি।

দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে প্যাটারসন একাই নেন ৩ উইকেট। আর পার্টটাইম বোলার এইডেন মার্করাম ৩ ওভার করে ২ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে বড় ফাটল ধরান।

Advertisement

দক্ষিণ আফ্রিকার দেয়া ৩৭০ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। প্যাটারসনের টানা দুই ওভারে আউট হন ইমরুল কায়েস আর লিটন দাস। এরপর কাগিসো রাবাদার বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ৮ রান করা সৌম্য সরকার।

মুশফিকুর রহীমকে নিয়ে সাকিব আল হাসান ঘুরে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। ৩১ রানের একটি জুটি গড়েছিলেন তারা। দলের রান পঞ্চাশ পেরোনোর পর সেই জুটিটাও ভেঙে গেছে। মুশফিক ৮ রান করে ফেহলুকাওকে উঠিয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন মিড-অফে। এরপর সাকিব মাহমুদুল্লাহকে নিয়ে জুটি বাঁধতে চাইলে তাও ভেঙে দেন মালদার।

ইনিংসের ১৫তম ওভারে মালদারের বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন এই অভিজ্ঞ টাইগার ব্যাটসম্যান। ফলে ২ রান করেই সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে।

এর আগে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে মিড অফে ক্যাচ তুলে দেন ইমরুল কায়েস। প্যাটারসনের বলে আউট হওয়ার আগে মাত্র একটি রান নিতে পেরেছিলেন এই ওপেনার। এরপর ইনিংসের চতুর্থ ওভারে প্যাটারসনের আরেক আঘাত। ৬ রান করে লিটন দাস এবার এলবিডব্লিউয়ের শিকার।

Advertisement

বাফেলো পার্কে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা ৬ উইকেট হারিয়ে করেছিল ৩৬৯ রান।

উল্লেখ্য, বাফেলো পার্কে ২০০৫ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩১১ রান করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ১২ বছর ঐ রানই ছিল এ মাঠের সর্বোচ্চ। পুরোনো রেকর্ড ভেঙে আজ নতুন রেকর্ড গড়ছে প্রোটিয়ারা। নতুন রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশকে ৩৭০ রানের টার্গেট দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা।

এই মাঠেরই সর্বোচ্চ না। বাংলাদেশের বিপক্ষেও সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ল দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০০৮ সালে বেনোনিতে ৩৫৮ রান করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ৯ বছর পর নতুন উচ্চতায় উঠল প্রোটিয়ারা। ৬ উইকেটে ৩৬৯ রান করেছে ফাফ ডু প্লেসির দল। যা বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের দলীয় সর্বোচ্চ।

দক্ষিণ আফ্রিকার হয় সর্বোচ্চ ৯১ রান করেছেন ডু প্লেসিস। তবে সেঞ্চুরির খুব কাছাকাছি এসে ফিরে যেতে হয় ফাফ ডু প্লেসিকে। কোমড়ে টান লাগায় মাঠ থেকে বেরিয়ে যান দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক। মাশরাফির বল মিড উইকেটে পাঠিয়ে ২ রান নিতে কল দেন ডু প্লেসি।

প্রথম রান ভালোমতই নিয়েছিলেন ডু প্লেসি। কিন্তু দ্বিতীয় রান নেওয়ার সময় তার কোমড়ে টান পড়ে। রান পূর্ণ করলেও মাঠে থাকতে পারেননি। এরপর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করেন ডি কক । তিনি ৬৮ বলে ৭৩ রান করেন। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৬৬ রান করেন মার্করাম।

বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন ও মিরাজ দু'টি করে উইকেট নেন। রুবেল একটি উইকেট নেন। আর মার্করামকে রান আউট করেন ইমরুল কায়েস।

এমএএন/এমএমআর/আরআইপি