জাতীয়

জলজটের পর নগরবাসী ধুঁকছে যানজটে

টানা বৃষ্টিতে জলজটের ভোগান্তি শেষ হতে না হতেই তীব্র যানজটে ধুঁকছে নগরবাসী। সাপ্তাহিক ছুটির কারণে গত শুক্র ও শনিবার রাজধানীর সড়কে ছিল না বিশেষ যানজট। তবে রোববার সকাল থেকে যানজটে স্থবির হয়ে পড়ে পুরো রাজধানী।

Advertisement

শত চেষ্টা সত্ত্বেও যানজট নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি ট্রাফিক বিভাগ। বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ট্রাফিক বিভাগের দাবি, জলজটের কারণে গত দু’দিন অনেকেই ঘরের বাইরে বের হননি। কিন্তু রোববার অফিস খোলা এবং আবহাওয়া ভালো থাকায় রাস্তায় মানুষ ও যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে সড়কে। প্রধান সড়ক ও আশপাশের সড়কগুলোর পানি নিষ্কাশন প্রক্রিয়াও এক রকম বন্ধ। ফলে তৈরি হওয়া জলাবদ্ধতাই যানজটের বড় কারণ।

ডিএমপির ট্রাফিক কর্মকর্তারা বলছেন, পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব পুলিশের নয়। যেখানে স্বাভাবিক দিনেই রাজধানীর যানজট নিরসনে পুলিশকে হিমশিম খেতে হয়, সেখানে জলাবদ্ধতা যানজট তৈরিতে নতুন মাত্রা তৈরি করেছে।

রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর শাহবাগ, নিউমার্কেট, ধানমন্ডি, নীলক্ষেত, আজিমপুর, প্রেস ক্লাব, পল্টন, মতিঝিল, বাড্ডা প্রগতি স্মরণি, বনানী, মগবাজার ও মিরপুর এলাকায় তীব্র যানজট।

Advertisement

আজিমপুর থেকে সাভার, ধামরাই, মানিকগঞ্জ ও গাজীপুর রুটের যানবাহনগুলো বেশি বিপাকে পড়েছে। নিউমার্কেটে আসার পর রাস্তা বন্ধ থাকায় গাড়িগুলোকে আড়াই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আটকে থাকতে দেখা যায় মূল সড়কে।

নিউমার্কেট এলাকার রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দ্রুতই এর প্রভাব পড়ে শাহবাগ, ধানমন্ডি এলাকায়। তীব্র যানজট হাতিরঝিল থেকে গুলশান প্রবেশ মুখের সড়কে, তেজগাঁও ও বিজয় সরণিতেও। বাড্ডার সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকলেও যানবাহনের গতি ফিরেনি।

যানজটের কবলে অফিসগামী চাকরিজীবী, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা পড়েছেন বিপাকে। এছাড়া রোগী নিয়ে স্বজনদের ভোগান্তি বাড়িয়েছে যানজট।

গাজীপুর এলাকা থেকে আসা সীমা আক্তার জানান, শাশুড়িকে নিয়ে এসেছেন চিকিৎসা করাতে। কিন্তু সকাল ৯টায় রওনা হলেও রাজধানীতে ঢুকতে পেরেছেন ৩টায়। ঢামেক হাসপাতালে যেতে আরও ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে তাকে।

Advertisement

ডালিম নামে প্রভাতী পরিবহনের এক যাত্রী বলেন, প্রতিদিন উত্তরা ১১ নং সেক্টর থেকে রামপুরায় আসি। কিন্তু আজ অন্য কাজ করে রাজধানীতে ঢুকতে তীব্র যানজট ও জলাবদ্ধতার সম্মুখীন হয়েছে। তাই প্যান্ট গুটিয়ে ব্যাগ ঘাড়ে নিয়ে অফিসের উদ্দেশ্যে হাঁটা শুরু করেছি।

উত্তরা এলাকার এক ট্রাফিক ইন্সপেক্টর জানান, জলজট যানজট তৈরি করেছিল। তবে এখন ক্লিয়ার।

মহাখালীর জোন ট্রাফিকের সহকারী কমিশনার আশরাফ উল্লাহ জানান, রাস্তা ভাঙা, জমে থাকা পানির কারণে সকালে চাপ ছিল, পানি সরানো গেলেও রাস্তা তো আর ঠিক করতে পারছি না। তবে সকালের চেয়ে চাপ এখন কমেছে।

এ ব্যাপারে ট্রাফিক পূর্ব বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মঈনুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, রাস্তা ভাঙা, পানি জমে থাকায় সকালে চাপ ছিল, এখন রাস্তা মোটামুটি ক্লিয়ার। শুধু বনশ্রীতে যানজট কমানো যাচ্ছে না। এতে ট্রাফিক বিভাগের দায় নেই। বৃষ্টির কারণে রাস্তার খারাপ অংশ ডুবে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

জেইউ/এএইচ/আরআইপি