আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানুষ ও জ্বিন জাতিকে তার রবুবিয়াতে উপাসনা-দাসত্ব করার জন্য সৃষ্টি করেছেন। আর সমস্ত মাখলুকাতকে সৃষ্টি করে কর্মের জন্য বাধ্য করে দিয়েছেন শুধুমাত্র মানুষের জন্য। আর সমগ্র মুসলিম উম্মাহ চায় সর্বাবস্থায় সর্বোত্তম পন্থায় জীবন-জিন্দেগী যাপন করতে। তাইতো প্রত্যেক বনী আদম আল্লাহর নিকট সব ভালো কর্মফলের প্রত্যাশী। তাইতো আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বান্দার জন্য শেষ আবাসস্থল শান্তির ফলগুধারা জান্নাত তৈরি করেছেন উপহার স্বরূপ। কর্মের গুণাগুণের উপর ভিত্তি করে আবার মানদণ্ড তৈরি করেছেন। যে ব্যক্তি যেমন কর্ম করবেন তেমনি তার ফল ভোগ করবেন।রমজান সিয়াম সাধনা ও তাকওয়ার মাস, রহমত ও বরকতের মাস, রহমত, মাগফিরাত ও জাহান্নামের অগ্নি থেকে মুক্তি লাভের মাস। সর্বোপরি এ মাস জান্নাত লাভের মাস।হাদীস শরীফে এসেছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াস সাল্লাম বলেছেন-ইন্না ফিল জান্নাতে বাবান ইউক্বালু লাহুর রাইয়্যানু; ইউদ্খিলু মিনহুস সা-ইমুনা ইয়াওমাল কিয়ামাতি লা ইয়াদখুলু মাআ’হুম আহাদুন গাইরুহুম ইউক্বালু আইনাস সা-ইমুনা ফি ইয়াদখুলুনা মিনহু ফা ইজা দাখালা আখিরুহুম উগলিক্বা ফা লাম ইয়াদখুল মিনহু আহাদুন। (বুখারি ও মুসলিম)অর্থাৎ জান্নাতের একটি দরজা রয়েছে, যাকে বলা হয় রাইয়্যান। কিয়ামতের দিন এ দরজাটি দিয়ে রোজাদারগণ প্রবেশ করবেন। অন্য কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। রোজাদারগণের প্রবেশের পর এ দরজাটি বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।সুতরাং বোঝা গেল- রমজান মাস জান্নাত লাভের মাস। যে ব্যক্তি দুনিয়ার জিন্দেগীতে সকল কর্মের পাশাপাশি রোজা রাখবে; কোরআন তেলাওয়াত করবে। এই রোজা এবং কুরআনের তেলাওয়াত তার জন্য সুপারিশকারী হবে।হাদিস শরীফে এসেছে-ইমাম আহমদ ও হামেক বর্ণনা করেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াস সাল্লাম বলেছেন, আসসিয়ামু ওয়াল কুরআনু ইয়াশফাআনে লিলআব্দি ইয়াওমাল কিয়ামাতি ইয়াক্বুলুস সিয়ামু আয় রাব্বি মানাআ’তুহুত ত্বআমা ওয়াশ শাহাওয়াতা বিন্নাহারি ফা শাফফি’ইনি ফিহি ওয়া ইয়াক্বুলুল কুরআনু মানাআ’তুহুন নাওমা বিললাইলি ফাশাফফিইনি ফিহি ক্বালা ফা ইউশাফ্ফাআনি। (মসনাদে আহমদ, মুস্তাদরেকে হাকেম) রোজা এবং কুরআন কিয়ামতের দিবসে আল্লাহর দরবারে রোজাদারের জন্য শাফায়াত করবে। রোযা বলবে, হে রব! আমি দিবসে তাকে পানাহার ও কামনা চরিতার্থ করা থেকে নিবৃত্ত রেখেছি। অবএব তার ব্যাপারে আমাকে শাফায়াত করার অনুমতি দিন। অনুরূপভাবে কুরআন বলবে এ ব্যক্তি আমাকে রাত্রিতে (নামাজে) তেলাওয়াত করেছে তার ব্যাপারে আমাকে শাফায়াতের অনুমতি দিন। এবং তাদেরকে শাফায়াতের অনুমতি দেয়া হবে। সুতরাং রোজা এবং কুরআনের তেলাওয়াত শাফায়াত করে রোজাদার ও তেলাওয়াতকারীকে জান্নাতে পৌঁছে দেবে।তাইতো হাদীসে এসেছে- রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াস সাল্লাম বলেছেন- মান সামা ইয়াওমান ফি সাবিলিল্লাহি বাআ’ দাল্লাহু ওয়াজহাহু আনিন নারী সাবই’না খারিফান। (বুখারি ও মুসলিম)অর্থাৎ যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় একদিন রোজা রাখে, আল্লাহ তাকে জাহান্নাম থেকে সত্তর বৎসরের দুরত্বে নিয়ে যান।সুতরাং আমরা রোজার হক আদায় করে দুনিয়ার লোভ লালসা থেকে নিজেকে মুক্ত করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য একাগ্র চিত্তে মুমিন দিলে রোজা রাখব এবং রোজা হুকুম আহকাম পরিপূর্ণ আদায় করে আল্লাহর জান্নাতের মেহমান হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করব। আল্লাহ আমাদের রোজাকে, কুরআন তেলাওয়াত ও তারাবিহকে কবুল করে যথাযথ প্রতিদান লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।তথ্যসূত্র : কুরআনুল কারীম, সহিহ বুখারি, মুসলিম, মুস্তাদরেকে হাকেম, বয়হাকী, মুসনাদে আহমদ।জাগো নিউজ ২৪ ডটকমের সঙ্গে থাকুন। রমজান সম্পর্কিত সুন্দর সুন্দর ইসলামী আলোচনা পড়ুন। কুরআন-হাদীস মোতাবেক আমলী জিন্দেগী যাপন করে রমজানের রহমত, বরকত ও মাগফেরাত অর্জন করুন। আমীন, ছুম্মা আমীনএইচএন/পিআর
Advertisement