অর্থনীতি

বৃষ্টিময় দিনে সবজির দামে আগুন

টানা বৃষ্টিতে রাজধানীর বাজারে সবজির দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজিই মিলছে না। কিছু কিছু সবজির দাম ১০০ টাকা ছুঁয়েছে। শনিবার রামপুরা ও খিলগাঁও অঞ্চলের বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

Advertisement

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আড়তে সবজির সরবরাহ খুবই কম। ফলে বেশি দামে সবজি কিনে আনতে হচ্ছে। যে কারণে সবজি বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

তাদের মতে, শনিবার দাম বেশি হলেও কিছু কিছু সবজি পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু বৃষ্টি যদি অব্যাহত থাকে তাহলে কাল হয় তো বাজারে সবজিই পাওয়া যাবে না। আর অল্প অল্প কিছু সবজি পাওয়া গেলেও তার দাম হয়ে যাবে দ্বিগুণ।

বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি বাজারেই পানি ঢুকে গেছে। বাজারের সবজির দোকানগুলোর নিচ দিয়ে পানির স্রোত বইছে। বাজারে ও বাজারের সামনের রাস্তা পানিতে ডুবে যাওয়ায় অনেক বিক্রেতা দোকান বন্ধ রেখেছেন। অল্পকিছু দোকানদার সবজি বিক্রি করছেন।

Advertisement

হাঁটু পানি পাড়ি দিয়ে রামপুরা বৌ-বাজারে সবজি কিনতে আসেন জামতলার কমিশনার রোডের বাসিন্দা ইলিয়াস হোসেন।

তিনি বলেন, ভাই সবজির দামে আগুন। কোনো কিছুতেই হাত দেয়ার মতো নেই। শুক্রবার যা দাম ছিল এক দিনের ব্যবধানে তা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। ৪০ টাকায় বিক্রি হওয়া পটলের দামও চাইছে ৭০ টাকা কেজি। কিন্তু কী আর করা? খেতে যখন হবে, তখন কিছু তো কিনতেই হবে। তাই অল্প করে বরবটি ও পটল কিনেছি।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিকেজি টমেটা বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি দরে। গতকাল শুক্রবার এই সবজিটি বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে। ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া শিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে।

দাম বাড়ার এ তালিকায় রয়েছে পটল, ঝিঙা, করলা, ঢেঁড়শ, ধন্দুল, বেগুনসহ সব সবজিই। শুক্রবার ৩৪ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হওয়া পটল বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে। ৪০ টাকায় বিক্রি হওয়া করলার দাম বেড়ে হয়েছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা।

Advertisement

ধন্দুল ও ঝিঙা শুক্রবার বিক্রি হয়েছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে। একদিনের ব্যবধানে শনিবার এ সবজি দুটির দাম বেড়ে হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা।

বেগুন ও ঢেঁড়শের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে। শুক্রবার এ সবজি দুটি বিক্রি হয় ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি দরে।

সবজির পাশাপাশি দাম বেড়েছে কাঁচামরিচ ও ডিমের। কেজিতে কাঁচামরিচের দাম ৬০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকা কেজি দরে। শুক্রবার প্রতিকেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হয় ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়।

ডিমের দাম পিসপ্রতি ১ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩২ টাকা হালি দরে। শুক্রবার প্রতি হালি ডিমের দাম ছিল ২৬ থেকে ২৮ টাকা।

সবজির পাশাপাশি দাম বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি ও গরুর মাংসের। ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজি দরে। আর গরুর মাংস ৫২০ থেকে ৫৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

রামপুরা বৌ-বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. কামাল হোসেন বলেন, সব সবজির দাম বাড়তি। আড়ত থেকেই আমাদের প্রায় দ্বিগুণ দাম দিয়ে আজ সবজি কিনতে হয়েছে। তাও বাজারে গিয়ে পছন্দমতো সবজি পাওয়া যায়নি। অবস্থা যা তাতে মনে হচ্ছে বৃষ্টি হলে কাল বাজারে সবজিই পাওয়া যাবে না। আজ দাম বেশি হলেও কিছু সবজি তাও পাওয়া যাচ্ছে।

এ বাজারের আরেক সবজি বিক্রেতা মো. রহিম বলেন, ‘সকালে আড়তে গিয়ে দেখি অল্প মাল। ভালোমানের কোনো সবজি নেই। দ্বিগুণ দাম দিয়ে অল্প কিছু মাল এনেছি। সকালের দিকে দোকাল খুললেও ক্রেতা তেমন আসছে না। রাস্তার যে অবস্থা তাতে মানুষ তো ঘর থেকে বের হচ্ছে না। বাজারে আসবে কী করে? দাম শুনেই কেউ কেউ চলে যাচ্ছে।

এমএএস/একে/আরআইপি