জাতীয়

গাড়ি কম, ভোগান্তি বেশি

বৃহস্পতিবার থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও গতকাল (শুক্রবার) ভোর থেকে টানা বর্ষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রাজধানীর জনজীবন। শুক্রবার ও শনিবার অবিরাম বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট। গত দু’দিনের ক্রমাগত বৃষ্টিতে জল ও যানজটে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রাজধানীবাসী।

Advertisement

নিত্য প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হননি মানুষ। তবে যারা প্রয়োজনের তাগিদে বের হয়েছেন বিশেষ করে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, বেসরকারি চাকরিজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ। তারা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।

মিরপুর ১০ থেকে শুরু করে কাজীপাড়া, শ্যাওড়াপাড়ার সব ছোট-বড় রাস্তা পানিতে তলিয়ে যায়। তাই রাস্তায় গাড়ি ও যাত্রীর সংখ্যা হাতে গোনা। তবে প্রয়োজনের তাগিদে যারা বের হয়েছে তাদেরকে একটি গাড়ি পেতে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় মিরপুর থেকে ফার্মগেটে যাওয়ার পথে ভোগান্তিতে পড়ার কথা জানান বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সায়মা আক্তার। তিনি সাধারণত বাসেই চলাচল করেন, তবে বৃষ্টির ফলে প্রতি বাসে উপচেপড়া ভিড়ের কারণে উঠতে পারেননি। অগত্যা তিনগুণ বেশি ভাড়ায় রিকশায় ফার্মগেটের পথ ধরেন।

Advertisement

তিনি বলেন, বৃষ্টি হলেই বাসে জায়গা পাওয়া যায় না। আর এ সুযোগে রিকশাওয়ালারা দাম বাড়িয়ে দেয়।

বেলা ১১ টার দিকেই এই রুটে গাড়ি ও যাত্রীর সংখ্যা অনেক কমে যায়। খালি এ রাজপথে শুধু পানিতে থই থই করতে দেখা যায়। অল্প সংখ্যক গাড়ি ধীর গতিতে চলছে। আর কিছু যাত্রী গাড়ি আসার অপেক্ষায় তীর্তের কাকের মতো কেউ ছাতা হাতে কেউবা দোকানের বারান্দায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন।

গাড়ি যেটা আসছে তার ভেতরে তীল ধারণের ঠাঁই নেই। তাই যে অল্প সংখ্যক যাত্রী প্রয়োজনের তাগিদে গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে রয়েছেন তাদের অধিকাংশই গাড়িতে উঠতে পারছে। অপেক্ষা করছেন পরবর্তী গাড়ির জন্য।

এমনই একজন মো. আরিফ গুলিস্তান যাওয়ার জন্য শ্যাওড়াপাড়া বাসস্ট্যান্ডে ছাতা হাতে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন।

Advertisement

তিনি জাগো নিউজকে জানান, গুলিস্তান যাওয়ার জন্য সকাল ১১টা থেকে দাঁড়িয়ে রয়েছেন, কিন্তু পৌনে ১২টা বেজে গেলেও তিনি তারা কাঙ্ক্ষিত গাড়িতে উঠতে পারেননি। কীভাবে যাবেন কোনো উপায়ও পাচ্ছেন না।

শ্যাওড়াপাড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে কাজীপাড়ার দিকে একটু এগুতে দেখা গেলো মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সামনে জটলা করে দাঁড়িয়ে রয়েছে স্কুলের ছাত্র ও অভিভাবকরা। তারা বাসার ফেরার কিছুই পাচ্ছেন না।

এরই মাঝে কেউ কেউ মেইন রাস্তায় কোমর পানি পেয়ে স্কুল ব্যাগ কাঁধে নিয়েই ঝাঁপিয়ে পড়েছে। আবার কাউকে সহপাঠীরা ধাক্কা দিয়ে পানিতে ফেলে দিচ্ছে। এক্ষেত্রে অভিভাবকের চোখ রাঙানি কোনো কাজ আসছে না।

কলেজ গেটে কথা হয় ফরিদা আলম নামের একটি অভিভাবকের সঙ্গে। তিনি জানান, তার ছেলে এই উচ্চবিদ্যালয়ে ক্লাস সেভেনের ছাত্র। তাকে নিয়ে সকালে অনেক কষ্টে স্কুলে এসেছেন। এখন কলেজ থেকে বের হয়েই দেখেন প্রধান সড়কে কোমর পানি। বাস, রিক্সা, ট্যাক্সি কোনো যানবাহন নেই। কীভাবে বাসায় ফিরবেন জানা নেই। এদিতে তার ছেলে হাতে ব্যাগ ধরিয়ে পানিতে নেমে পড়েছেন। ডাকলেও মায়ের কথায় কান দিচ্ছে না।

এমইউএইচ/একে/আরআইপি