জাতীয়

রোববার থেকে কমবে বৃষ্টি

স্থল নিম্নচাপের প্রভাবে গত বৃহস্পতিবার থেকে সারা দেশে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। ভারী বৃষ্টিতে জনজীবন অস্বাভাবিক হয়ে উঠেছে, নগরজীবনে নেমেছে দুর্ভোগ। আজ শনিবারও অঝোর ধারায় ঝরছে বৃষ্টি। তবে রোববার দুপুরের পর থেকে বৃষ্টি কমে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

Advertisement

তবে রোববার সকাল পর্যন্ত সারা দেশে অতি ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকা ও উপকূলীয় অঞ্চলে জলোচ্ছ্বাসের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস জাগো নিউজকে বলেন, ‘স্থল নিম্নচাপের প্রভাবে আজ (শনিবার) রাত ও কাল (রোববার) সকাল পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি হতে পারে। নিম্নচাপ দুর্বল হয়ে পড়লে কাল দুপুরের পর থেকে বৃষ্টি ধীরে ধীরে কমে যাবে বলে আশা করছি।’

আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, এক দিনে ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টিকে ভারী এবং ৮৯ মিলিমিটার বা এর বেশি বৃষ্টি হলে তাকে অতি ভারী বৃষ্টি বলে। ১০ থেকে ১৯ মিলিমিটার পর্যন্ত মাঝারি বৃষ্টিপাত, ২০ মিলিমিটার থেকে ৪৩ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতকে মাঝারি ধরনের ভারী ও ১০ মিলিমিটারের কম বৃষ্টিপাতকে বলা হয় হালকা বৃষ্টিপাত।

Advertisement

আবহাওয়া অধিদফতরের রেকর্ড অনুযায়ী শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় সারাদেশেই ভারী বৃষ্টি হয়েছে। এ সময়ের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে গোপালগঞ্জে, সেখানে ২৭১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ সময়ে ঢাকায় বৃষ্টি হয়েছে ১৪৯ মিলিমিটার।

শনিবারও সারা দেশেই ভারী বৃষ্টি হচ্ছিল বলে দুপুরে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। শনিবার সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ঢাকায় ৬৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘন্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

এ সময়ে সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে বলেও পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে।

Advertisement

৩ নম্বর সতর্ক সংকেত বহাল :শনিবার সকালে আবহাওয়ার সতর্কবার্তায় জানানো হয়েছে, স্থল নিম্নচাপটি উত্তর ও উত্তর-পূর্বদিকে অগ্রসর হয়ে শনিবার সকাল ৯টায় পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে যেতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বায়ু চাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে এবং গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা (বজ্রমেঘ) তৈরি অব্যাহত রয়েছে।

এজন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দর ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে সতর্কবার্তায়।

উপকূলে জলোচ্ছ্বাস হতে পারে :আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ জানান, নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠী, পিরোজপুর, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা এবং তাদের কাছাকাছি দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে এক থেকে ২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

তিনি আরও জানান, উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

ভারী বৃষ্টির সতর্কবার্তা :আবহাওয়া অধিদফতরের ভারী বর্ষণের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় অবস্থানরত স্থল নিম্নচাপের কারণে শনিবার সকাল ১১টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘন্টার মধ্যে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

অভ্যন্তরীণ নৌ-বন্দরগুলোর জন্য ২ নম্বর সংকেত :শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চলের উপর দিয়ে দক্ষিণ ও পূর্ব-দক্ষিণ দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারী সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে

আরএমএম/এআরএস/এমএস