তিনদিনের বৃষ্টিতে ঢাকায় গণপরিবহন সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে বাধ্য হয়ে যাত্রীরা খুঁজছেন সিএনজিচালিত অটোরিকশা কিংবা ট্যাক্সিক্যাব। তবে গন্তব্যে পৌঁছাতে দুই থেকে তিনগুণ বেশি ভাড়ায়ও মিলছে না সিএনজি অটোরিকশা। ফলে যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
Advertisement
যাত্রীদের অভিযোগ— তাদের কথা চিন্তা না করে নিজেদের মতো চলছেন চালকরা। অনেক সময় বাড়তি টাকা পেলেও নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে দিতে তারা নানা তালবাহানা করছেন। নানা বাহানায় তারা বাড়তি টাকা চাইছে।
অন্যান্য দিনের মতো শনিবার সকালে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নানা বিড়ম্বনার শিকার হন অগণিত যাত্রী।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করেন মাইনুল হোসেন। থাকেন রাজধানীর শ্যাওড়াপাড়ায়। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, সকাল ১০টায় মধ্যে গুলশানে অফিসে ঢুকতে হবে। বৃষ্টিতে আধা ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছি যাওয়ার কোনো গাড়ি পাচ্ছি না। সিএনজিও যেতে চাইছে না।
Advertisement
শ্যাওড়াপাড়া থেকে গুলশান সিএনজি অটোরিকশার ভাড়া দুই থেকে আড়াইশ টাকা। মিটারে গেলে আরোও কম লাগে। কিন্তু আজ চারশ টাকা বললাম যাবে না। চালক ৫০০ টাকার কমে যাবে না। আমাদের কী আর করা? ঠেকায় পড়ে যেতে হবে।
এদিকে মানিকনগর বৃষ্টিতে ছাতা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন আল আমিন। যাবেন তেজগাঁও হাসপাতালে। কোনো গাড়ি পাচ্ছেন না। কয়েকটি সিএনজি চালককে বলার পরও যাবে না। একটি যেতে রাজি হয়েছে তবে ৪০০ টাকার নিচে যাবে না। শুরু হল চালকের সঙ্গে যাত্রীর বাকবিতর্ক। যাত্রী বলছেন ২০০ টাকার ভাড়া বৃষ্টির কারণে আড়াইশ-তিনশ নিতে পারে কিন্তু চারশ টাকা কীভাবে চায়। চালকের যুক্তি বৃষ্টিতে রাজধানীর অনেক রাস্তা পানিতে ডুবে গেছে। বিভিন্ন জায়গা ঘুরে যেতে হবে। এছাড়াও অনেক সময় পানিতে গাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। তাই বাধ্য হয়ে আমাদের বেশি ভাড়া নিতে হয়।
এদিকে রাজধানীর মুগদা এলাকায় শরিফ নামের এক যাত্রী বলেন, বসুন্ধরা বাড়িধারায় বাস পাচ্ছি না। একটি হলুদ ক্যাবকে ভাড়া জিজ্ঞাসা করলাম ৫০০ টাকা চাইল। কীভাবে যাবো বলেন? সিএনজি ভাড়া চাচ্ছে ৪০০ টাকা। মিটারে গেলে দেড় থেকে দুইশ টাকার বেশি ভাড়া হবে না।
এদিকে সিএনজি চালক শাহবুদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, বৃষ্টিতে অনেক রাস্তা পানিতে ডুবে গেছে। আবার অনেক জায়গায় যানজট বেশি। বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে যেতে হয়। সব মিলিয়ে ভাড়া বেশি রাখতে হয়। মিটারে যান কেন জানতে চাইলে এই চালক বলেন, গাড়ির জমা ও খরচ অনেক বেশি। মিটারে গেলে পোষাবে না।
Advertisement
গত বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টি হচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। শনিবার আবহাওয়া অফিসের এক সতর্কবাতায় বলা হয়েছে— উত্তর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর সমূহকে দেখানো তিন নম্বর সতর্ক সংকেত অব্যাহত রয়েছে। নিম্নচাপের প্রভাবে রাজধানীসহ সারাদেশে বৃষ্টি হচ্ছে। হেমন্তে এমন বৃষ্টিতে ভোগান্তে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। গত তিনদিনের টানা বৃষ্টিতে রাজধানীর ফুটপাত ও নিচু এলাকায় বৃষ্টির পানি জমে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। অনেক স্থানে দীর্ঘ যানজট । এতে চরম দুর্ভোগে পড়ে পড়েছে নগরবাসী।
এসআই/একে/এমএস