টানা বৃষ্টিতে পূর্ব-রামপুরা ও খিলগাঁও-তালতলা এলাকার প্রায় প্রতিটি মহল্লার রাস্তা হাঁটু পানির নিচে। ঘর থেকে রাস্তায় বের হওয়ায় কঠিন হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের। এমনকি অনেক বাসা-বাড়ি ও দোকানেও ঢুকে পড়েছে বৃষ্টির পানি। চারদিক তাকালেই শুধু থৈ-থৈ ময়লা পানি চোখে পড়ছে।
Advertisement
টানা বৃষ্টি হচ্ছে রাজধানী জুড়ে। শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টির ফোটা অবিরাম ঝরেই যাচ্ছে। অসময়ে বিরামহীন এ বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে রামপুরা, খিলগাঁও অঞ্চলের সিংহভাগ অঞ্চল। অবস্থা এমন যে, এ অঞ্চল রূপ নিয়েছে অস্থায়ী নদীতে।
গতকাল শুক্রবার অফিস বন্ধ থাকায় অনেকেই বাসা থেকে বের হননি। কিন্তু শনিবার বেশিরভাগ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান খোলা থাকায় চাকরিজীবীদের সকালেই অফিস যেতে পড়তে হয়েছে চরম বিড়ম্বনায়। ভোগান্তিতে পড়ে স্কুল শিক্ষার্থীরাও। ঘর থেকে বের হলেই হাটুসম ময়লা পানি পাড়ি দিতে হচ্ছে। ফলে একান্ত বাধ্য না হলে কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।
পূর্ব-রামপুরা একটি টিন শেডের বাড়িতে প্রায় পাঁচ বছর ধরে ভাড়া থাকেন সালেহা বেগম। অবিরাম বর্ষণে তার ঘরেও পানি ঢুকেছে। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘আমি পাঁচ বছর ধরে এখানে ভাড়ি আছি। এর আগে কোনো দিন বৃষ্টির পানি ঘরে ঢুকেনি। কিন্তু এবার পানি ঢুকে গেছে।’
Advertisement
শুধু টিন শেডের বাড়িতে নয়, অনেক বিল্ডিং বাড়ির নিচতলাতেও পানি ঢুকেছে। খিলগাঁও তালতলায় এমন একটি বাড়ির বাসিন্দা মো. মিলন বলেন, ‘আমি পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে এখানে ভাড়া রয়েছি। বেশি বৃষ্টি হলে সাধারণত রাস্তায় পানি জমে যায়। কখনো বাড়ির ভেতরে পানি ঢুকেনি। কিন্তু এবার ঘরের ভেতরেও দুই থেকে তিন ইঞ্চি পানি ঢুকে গেছে।’
ঘর থেকে বের হওয়ার উপায় না থাকায় রামপুরা বাজার বাস স্টেশনে যাত্রীদের চাপও কম। সেই সঙ্গে কম পরিবহনের সংখ্যাও। রামপুরা-যাত্রাবাড়ি রুটে চলাচল করা তুরাগ পরিবহনের কর্মী মো. জামাল মিয়া বলেন, পানির কারণে রাস্তায় অনেক গাড়ি আটকে রয়েছে। যে কারণে আজ গাড়ির সংখ্যাও কম।
তিনি আরও বলেন, মানুষ তো ঘর থেকেই বের হতে পারছে না, তাই যাত্রীর সংখ্যাও কম। আমরা পেটের দায়ে রাস্তায় গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি। যাদের পেটের টান নেই তারা তো ঘর থেকেই বের হচ্ছে না।
রামপুরা-গুলিস্তান রুটে চলাচল করা সুপ্রভাত পরিবহনের কর্মী মো. আকরাম বলেন, শুক্র ও শনিবার সাধারণত এই রুটে যাত্রী কম থাকে। তবে আজ যাত্রী একেবারেই কম, নেই বললেই চলে। বৃষ্টির পানিতে রাস্তার যে অবস্থা তাতে আমাদের মতো কেউ বাধ্য না হলে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।
Advertisement
এমএএস/আরএস/এমএস