দুই দিনের অস্বাভাবিক বৃষ্টিতে রাজধানীর বৃহৎ পাইকারি কাঁচাবাজার কারওয়ানবাজারসহ বেশিরভাগ বাজার পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এছাড়া অলিগলিতেও পানি জমে যাওয়ায় ও টানা বৃষ্টির কারণে অনেক জায়গায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বিক্রি বন্ধ রয়েছে। এর ফলে একদিকে যেমন ক্রেতারা বাজার করতে পারছেন না, অন্যদিকে বিক্রেতারাও পড়েছেন বিপাকে। কোথাও কোথাও তরিতরকারি পচে যাচ্ছে। আর এসব বিক্রি করে জীবননির্বাহ করা গরিব মানুষরা পড়েছেন বিপাকে।
Advertisement
শনিবার সরেজমিনে রাজধানীর কারওয়ান বাজার, বনানী কাঁচাবাজার ও শান্তিনগর কাঁচাবাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে মহল্লার ছোট ছোট কাঁচাবাজারগুলো। তবে এই ঝুম বৃষ্টির মধ্যে ভ্যানে করে কয়েকজনকে ভিজতে ভিজতে সবজি বিক্রি করতে দেখা গেছে।
দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে রাজধানীর কারওয়ানবাজার এলাকায় হাঁটুপানি জমে গেছে। শুক্রবার থেকে সেখানে মাছ থেকে শুরু করে সবজির বেচাকেনা প্রায় বন্ধ। কয়েকটি দোকান খোলা থাকলেও ক্রেতা নেই।
সেখানকার তরকারি বিক্রেতা আবদুল মমিন জাগো নিউজকে বলেন, এই বৃষ্টির ফলে অনেক তরকারি পচে গেছে। এছাড়া ক্ষেতের তরকারিও নষ্ট হয়ে যাবে। তাই শীতের আগে আবার সবজির দাম বাড়তে পারে।
Advertisement
রাজধানীর শান্তিনগর কাঁচাবাজারেরও একই অবস্থা। সেখানে প্রত্যেকটি দোকানে পানি ঢুকেছে। বৃষ্টি বেগ মানছে না মাথার উপর পলিথনও ।কয়েকটি দোকান খোলা থাকলেও প্রয়োজনের তুলনায় বাজারে তরকারি কম। তাই দামও চড়া।
শান্তিনগর এলাকার পীরসাহেব গলির পুতুল রানী জাগো নিউজকে বলেন, বৃষ্টিতে শুক্রবার বাজার করতে পারিনি। কিন্তু শনিবার তার চেয়েও বেশি বৃষ্টি। ঘরে কোনো তরিতরকারি নেই। নাই বাধ্য হয়ে বাজারে এসেছেন। তবে বৃষ্টির কারণে দাম বেশি বলে জানান তিনি।
সেখানকার মাছ ব্যবসায়ী মুখলেছ জানান, বাজারে মাছের সরবরাহ কম। তাই দামও বেড়ে গেছে।
উত্তর বাড্ডার সাতারকুল সড়কে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে লালশাক, কচুশাক আর কলার মোচা বিক্রি করছিলেন ষাটোর্ধ্ব মজনু মিয়া। বয়সের ভারে ন্যুজ মজনু মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, বৃষ্টিতে তো পেট ভরবে না। তাই ক্ষুধার তাড়নায় এই সামান্য জিনিসপত্র নিয়েই নিত্যদিনের মত পথে বসেছি।
Advertisement
রামপুরা টিভি রোডের গলিতে রাস্তায় ভিজতে ভিজতে কাঁচামরিচ খুঁজছিলেন পোষাক শ্রমিক মরিয়ম বেগম। কিন্তু সরবরাহ না থাকায় পাচ্ছিলেন না তিনি।
তবে রাজধানীর অভিজাত এলাকা বনানী কাঁচাবাজার কিছুটা সরগরম দেখা গেছে। সেখানে কয়েকটি দোকানে পানি ওঠলেও বেশির ভাগ দোকান খোলা ছিল। অনেকে গাড়িতে করে এসে বাজার করছেন।
এইচএস/এআরএস/এমএস