জাতীয়

আভিজাত্য আর বাহারি ইফতারিতে জমজমাট বেইলি রোড

আভিজাত্য আর বাহারি ইফতারি নিয়ে এবারো পসরা সাজিয়েছেন রাজধানীর বেইলি রােডের ইফতারি ব্যবসায়ীরা। পুরান ঢাকার ঐতিহ্য এবং নতুন ঢাকার আভিজাত্যের সমন্বয়ে এ বছরও ইফতার সামগ্রীর বিপুল সমাহার রয়েছে বেইলি রোডে।প্রতি রমজানে দুপুরের পর থেকে বেইলি রোডের বাহারি দোকানগুলোয় ইফতার সামগ্রীর বিশাল পসরা নিয়ে বসেন দোকানিরা। বেশি দাম হলেও বেচাকেনা বেশ জমজমাট। রমজানের চতুর্থ দিন বেইলি রোড এলাকা ঘুরে এ রকম চিত্রই দেখা গেছে।সরেজমিনে দেখা গেছে, দুপুর থেকেই বেইলি রোডে ইফতারের বাহারি আইটেম সাজিয়ে বেচাকেনায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন দোকানিরা। ঐতিহ্য আর আভিজাত্যের সঙ্গে খাবারের দামেও দোকানভেদে ভিন্নতা লক্ষ্য করা গেছে।দেখা গেছে, নামিদামি কয়েকটি ইফতারির দোকানে দেদারসে বিক্রি চলছে। ইফতার সামগ্রীর দামের তালিকা দেওয়া রয়েছে। দোকানিরা প্যাকেট করে দিচ্ছেন আর ক্রেতারা দাম দিয়ে যাচ্ছেন সেগুলো। কোনো দর দাম নেই। বেইলি রোডের মাঝামাঝি পর্যায়ের রাস্তার উত্তর পাশে অবস্থিত নবাবী ভোজ নামের একটি ইফতার সামগ্রীর দোকানে গিয়ে দেখা যায়, ইফতার সামগ্রীর দামগুলো অনেকটা নবাবী স্টাইলেই লিখে রাখা হয়েছে।যেমন ইফতারি প্যাকেজে দুটি খেজুরের দাম রাখা হচ্ছে ২০ টাকা, মালটার দাম ২০ টাকা, ছোলার দাম ২০ টাকা, আলুর চপ ১০ টাকা, বেগুনি ১০ টাকা পেঁয়াজু ১০ টাকা, কাবাব মানভেদে ৫০ থেকে ৭০ টাকা।দুই খেজুরের দাম ২০ টাকা কেন? জানতে চাইলে নবাবী ভোজের এক বিক্রয় কর্মকর্তা জাগো নিউজকে জানান, বেইলি রোড বলে কথা। দাম কোনো বিষয় না। তবে আমাদের প্যাকেজ সাড়ে ৩শ’ থাকলেও কেউ নিলে তিনশ’ টাকা রাখা হচ্ছে।কথা হয় একটি প্রাইভেট কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রবিউল ইসলামের সঙ্গে। জানালেন, তিনি বেইলি রোডের নিয়মিত ক্রেতা। সময় পেলেই এখান থেকে কেনাকাটা করেন। এ জন্য ইফতারিটাও এখান থেকে কিনে নিচ্ছেন।দামটা একটু বেশি কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এখানকার খাবারের প্রতি আমার অন্যরকম আস্থা আছে তাই দামটা নিয়ে খুব বেশি আপত্তি নেই।অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বেইলি রোডের ইফতার সামগ্রীর দাম তুলণামূলক একটু বেশি। এখানকার ইফতার সামগ্রীগুলোর মধ্যে টানা পরাটার দাম ৫০ টাকা, কিমা পরাটা ৬৫ টাকা, চিকেন উইং ৪৫ টাকা, চিকেন ললি ৫৫ টাকা, চিকেন ফ্রাই ৮০ টাকা, বিফ মিনি কাবাব ৪৫ টাকা, চিকেন ফিঙ্গার স্টিক ৪০ টাকা, চিকেন সাসলিক ১০০ টাকা, চিকেন মিনি রোল ৩৫ টাকা, মিনি পিজা ৫০ টাকা, রুটি ৩০ টাকা, প্রণ বল ৭০ টাকা, চিকেন বল ৪০ টাকা, ভেজিটেবল পাকুরা ২৫ টাকা, এগচপ ২০ টাকা, চিকেন সামুচা ২০ টাকা, বেগুনি ও পেঁয়াজু ১০ টাকা করে প্রতিটি।এখানকার গরুর মগজ ভুনা প্রতি কেজি এক হাজার টাকা। চিকেন ঝাল ফ্রাই কেজি প্রতি ৭০০ টাকা। খাসির রান বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা। আর ফালুদা ফুল ৩০০ টাকা। এরপরও দুপুরের আগেই এসব ইফতার সামগ্রী বিক্রি হয়ে যায় বলে জানালেন ওই কর্মকর্তারা।বেইলি রোডে নামিদামি ইফতার বিক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে শাহি মহল, ক্যাপিটাল, মিস্টার বাকের, সুইস, গোল্ডেন ফুড, রেড কোর্ট, হট কেইক, বেইলি হাট। এছাড়া কেএফসি এবং পিজা হাটে দিনের বেলাতেও চলে খাওয়া দাওয়া।ভিকারুন্নেসা স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশেই রমনা মোড়ে ইফতারির বিশাল সমাহার নিয়ে বসেছে ফখরুদ্দিনের  দোকান। এখানে বিক্রি হচ্ছে প্রায় অর্ধশত ইফতারির আইটেম। গরুর চাপ, খাসির চাপ, রেজালা এবং খাসির কোর্মা, খাসির লেগ রোস্ট কেজি প্রতি দাম নিচ্ছে ৭০০ টাকা।এখানকার বেশির ভাগ আইটেমের দাম ১০০ টাকার বেশি। এরপরও ক্রেতার কমতি নেই। শিউলী নামের এক ক্রেতা জানালেন, ফখরুদ্দিনের খাবারের প্রতি পুরো পরিবার ভক্ত। তাই দামের প্রতি তাকাইনি।এমএম/বিএ/পিআর

Advertisement