জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল দুর্নীতির দুই মামলায় আজ জামিন পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এ সময় জামিনের শর্তে আদালত বলেন, পরবর্তী সময়ে বিদেশ যেতে আদালতের অনুমতি নিতে হবে খালেদা জিয়াকে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) বেলা ১১টা ১৭ মিনিটে ঢাকার বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালত উপস্থিত হন তিনি। এ সময় আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া ও জিয়া উদ্দিন জিয়ার মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন খালেদা। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। দুই লাখ টাকা মুচলেকায় জামিন পান তিনি।
আদালতের শুনানিতে খালেদার আইনজীবী জমিরউদ্দিন সরকার বলেন, খালেদা জিয়া জামিনের শর্ত ভঙ্গ করেননি। তিনি বিদেশে গিয়েছিলেন চিকিৎসার জন্য। তিনি আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, জামিন দিলে পলাতক হবেন না।
অপরদিকে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, খালেদা জিয়া জামিনের শর্ত ভঙ্গ করেছেন। তিনি বারবার মামলাটি পেছানোর জন্য নান বাহানা করেছেন। তাই মামলাগুলোতে তার জামিন নামঞ্জুর করা হোক।
Advertisement
আদালত উভয়পক্ষের শুনানি শেষে প্রতি মামলায় এক লাখ টাকা করে মোট দুই লাখ টাকা মুচলেকার বিনিময়ে জামিন মঞ্জুর করেন। জামিনের শর্তে বলা হয়, এরপর থেকে বিদেশ যেতে আদালতের অনুমতি নিতে হবে খালেদা জিয়াকে।
আজ আদালতে খালেদার হাজিরা উপলক্ষে বিএনপির অনেক নেতাকর্মীই সেখানে আসেন। এর মধ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুর কবির রিজভী, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, মোশাররফ হোসেন ও আরও অনেকে ছিলেন।
এর আগে গত ১২ অক্টোবর আদালতে হাজির না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে এই দুই মামলাই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ আদালত।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
Advertisement
২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশিদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী (পলাতক), হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
এ ছাড়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
২০১০ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন আর রশীদ। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।
মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন- মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
জেএ/এআরএস/আরআইপি