গোপনে গোপনে আমল করা ইখলাসের নিদর্শন। আর উত্তম প্রতিদান লাভের বুনিয়াদও গোপন আমল। যদি কোনো ব্যক্তির গোপন আমল প্রকাশ হয়ে যায়; তবে তাতে দ্বিগুণ সাওয়াব লাভ হয়। কারণ গোপন আমল প্রকাশ হওয়ার ফলে অন্যান্যদের মাঝেও আমল করার সুযোগ (উৎসাহ-উদ্দীপনা-আগ্রহ) সৃষ্টি হয়।
Advertisement
একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমি অত্যন্ত গোপনে আমল করি; কিন্তু মানুষ তা জেনে যায়। ইহাতে আমি আনন্দ অনুভব করি। আমার এরূপ আমলে কি সাওয়াব মিলবে? (কেননা বাহ্যিকভাবে তো ইহা ইখলাসের পরিপন্থী)প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তরে বলেন, ‘দ্বিগুণ সাওয়াব পাবে। এক সাওয়াব হলো গোপনে আমল করার আর দ্বিতীয় সাওয়াব হলো প্রকাশ হয়ে যাওয়ার।’
এ প্রসঙ্গে ইমাম মুসলিম রহমাতুল্লাহি আলাইহি তার বিখ্যাত হাদিস গ্রন্থে একটি হাদিস সন্নিবেশিত করেন-
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ইসলামে কোনো উত্তম পদ্ধতির প্রচলন করে, সে তার সাওয়াব পায় এবং তার পরে যারা (এ পদ্ধতির অনুসরণ করে) তদনুযায়ী আমল করে তাদের সাওয়াবও সে (প্রচলনকারী) পায়।’ (মুসলিম)
Advertisement
মুসলিম শরীফের উল্লেখিত হাদিসের নীতির আলোকে বুঝা যায় যে, কোনো ব্যক্তির গোপন আমল প্রকাশ পেলে ঐ আমল যদি অন্য কোনো ব্যক্তি শুরু করে তবে তা যতদিন চলমান থাকবে ততদিন গোপন আমলকারী ব্যক্তি এ আমলের প্রতিদান বা সাওয়াব পেতে থাকবে।
একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবেকোনো ব্যক্তি যদি এমনভাবে আমল করে যে, তার আমল প্রকাশ পেয়ে যাক এমন আকাঙ্ক্ষা করে থাকে; অথবা অন্য কোনো উপায়ে তা প্রকাশ করার চেষ্টা করে; এ ধরনের আমল ইখলাসের পরিপন্থী কাজ।
আর তা যদি হয় রিয়া বা লোক দেখানো ইবাদত। তবে তাতে রয়েছে ভয়াবহ ক্ষতি। ঐ লোক দেখানো আমলকারীর কোনো আমলই গ্রহণযোগ্য হবে না।
পরিশেষে...নিজের আমল প্রকাশ করার কোনো মানসিকতা নেই; কোনো ব্যক্তি তাঁর গোপন আমল প্রকাশ হোক তা চায় না; সে ব্যক্তির গোপন আমল যদি প্রকাশ পেয়ে যায়; তাতে গোপনে আমলকারীর জন্য রয়েছে দ্বিগুণ সাওয়াব।
Advertisement
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব গোপন আমলকারীদেরকে তাদের আমলের জন্য অধিক সাওয়াব দান করুন। প্রত্যেকেই যেন আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে গোপনে আমল তথা ইবাদত-বন্দেগি করতে পারে সেই তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম