গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় অনলাইন সুইসাইড গেম ‘ব্লু হোয়েল’ খেলতে গিয়ে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছে রাকিব হোসেন নামে এক স্কুলছাত্র। রাকিব শ্রীপুর পৌর এলাকার বেড়াইদেরচালা গ্রামের কৃষক শামসুল হকের ছেলে এবং কেওয়া পশ্চিম খণ্ড (দরগারচালা) গ্রামের গাজীপুর মেরিডিয়ান স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র।
Advertisement
গাজীপুর মেরিডিয়ান স্কুলের শিক্ষক আব্দুল্লাহ-আল মামুন বলেন, সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্কুলের ম্যাডাম ক্লাস নেয়ার সময় রাকিবের বাম হাতে ব্যান্ডেজ দেখতে পান। পরে তার কাছ থেকে শুনে রাকিবের কাছে গিয়ে ব্যান্ডেজের কারণ জানতে চাই। সে কোনো উত্তর দিতে না পারায় তাকে প্রিন্সিপালের কক্ষে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে উল্টাপাল্টা জবাব দেয়। পরে তাকে বাড়ি পৌঁছে দেয়া হয়।
রাকিব জানায়, সম্প্রতি সে মোবাইলে ‘ব্লু হোয়েল’ গেম খেলায় আসক্ত হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে ১২ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) রাত ১০টার দিকে মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট অন করার সঙ্গে সঙ্গে স্ক্রিনে একটা অ্যাপ ভাসতে থাকে। কৌতূহলবশত অ্যাপটি ওপেন করি। এরপর একটি কল আসলে আমি রিসিভ করি। তারপর আস্তে আস্তে শুরু হয় মজার মজার ধাপ। খেলতে খেলতে আসে চ্যালেঞ্জিং পর্ব। তবে গত তিনদিন ধরে গেমটির কত পর্ব খেলেছে বা কি কি কাজ করেছে এমন প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট কোনো জবাব দিতে পারেনি রাকিব।
রাকিব বলছে, তার তেমন কিছু মনে নেই। তবে গেমটি খেলতে খেলতে তার হাতে তিমি মাছের ছবি আঁকতে বলা হয়েছিল। হাত কেটে সে কীভাবে ছবি এঁকেছে তাও জানে না। রাতে কী করেছে তা মনে নেই।
Advertisement
রাকিবের মা রহিমা খাতুন বলেন, আমরা রাকিবকে নিয়ে ভীষণ চিন্তিত। তার মোবাইল সে নিজেই ভেঙে ফেলেছে। এসব প্রাণঘাতী গেম যেন কোনো ছেলে-মেয়ের হাতে পৌঁছাতে না পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আপনাদের (সাংবাদিকদের) কাছে অনুরোধ করছি।
তিনি জানান, রাকিবকে পারিবারিকভাবে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। তার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা এখন শঙ্কামুক্ত।
‘ব্লু হোয়েল’ গেম খেলার এ সংবাদটি ছড়িয়ে পড়ায় আশপাশের এলাকার অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
শ্রীপুর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুল হাসান রানা বলেন, রাকিবের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পারলাম সে মানসিক ভারসম্যহীন। সে প্রায় সময়ই উল্টাপাল্টা কথা বলছে। তার মা রহিমা জানায়, বাড়িতেও রাগ উঠলে সে বাড়ির সব কাচের জিনিসপত্র ভাঙচুর করে।
Advertisement
আমিনুল ইসলাম/আরএআর/আইআই