দেশজুড়ে

ফার্নেস অয়েলে হুমকির মুখে কর্ণফুলী-হালদার জীববৈচিত্র

ভাসমান ফার্নেস অয়েলের কারণে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে কর্ণফুলী নদী এবং হালদা খাল। ভাসমান  ৪৮ টন ফার্নেস অয়েল উত্তলনের কোনো আধুনিক প্রযুক্তি না থাকার কারণে হালদা এবং কর্ণফুলী থেকে ভাসমান তেল উঠাতে স্থানীয় জনগনই এখন শেষ ভরসা ।এজন্য প্রতিকেজি ফার্নেস অয়েল ৬০ টাকায় কেনার ঘোষণা দিয়েছে বিপিসি। তবে এ তেল উত্তোলন করতে গিয়ে মানব দেহের কোনো ক্ষতি হবে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কোনো কথা বলেননি তারা।  এদিকে  জোয়ারের পানির সাথে এসব তেল ছড়িয়ে পড়েছে হালদার আশপাশের ২০ কিলোমিটার এলাকায়। এতে করে হালদা এবং কর্ণফুলীর মৎস সম্পদসহ জীব বৈচিত্র হুমকির  মুখে পড়েছে।  দেখা দিয়েছে পরিবেশ বিপর্যয়ের। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের  প্রানিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক  ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, বোয়ালখালী খালটি কর্ণফুলী নদীর শাখা খাল। এটিতে জোয়ার-ভাটা থাকার কারণে ফার্নেস অয়েল পার্শ্ববর্তী অন্যখালসহ কর্ণফুলীতে গিয়ে পড়ছে।ফার্নেস অয়েলের কারণে কর্ণফুলী তিনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফার্নেস অয়েলের টক্সিক পানির সঙ্গে মিশে নদীর খাদ্যচক্র নষ্ট করছে, অক্সিজেন স্বল্পতার সৃষ্টি করে বাস্তুতন্ত্র নষ্ট করবে।তিনি বলেন, টক্সিক এক ধরনের বিষক্রিয়া। এর ফলে প্রাণী ও মাছ মারা যাবে। আবার এসব প্রাণী ও মাছ খেয়ে বিভিন্ন পাখিও মারা যাবে। এ ঘটনার চারদিন অতিবাহিত হলেও এখনো  ডুবে যাওয়া ওয়াগন পানি থেকে উঠানো সম্ভব হয়নি। দু`এক দিনের মধ্যে সেতু মেরামত হলে তার পর রিলিফ ট্রেন আসবে বলে জানান রেলওয়ের ডিজি আমজাদ হোসেন।এদিকে মৎস বিভাগ থেকে তথ্য নিয়ে জানানো হয়েছে ভাসমান এসব ফার্নেস অয়েল হালদা খালের মদুনাঘাট পার হয়ে আরো অন্তত ১০ কিলোমিটার ভিতওে প্রবেশ করেছে। জোয়ারের পানির তীব্রতা থাকায় দ্রুত এগুলো উজানের দিকে প্রবাহিত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফার্নেস অয়েলের টক্সিক পানির সঙ্গে মিশে খালের খাদ্যচক্র নষ্ট, অক্সিজেন স্বল্পতা সৃষ্টি করে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় ঘটতে পারে। এজন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের গাফিলতিকে দায়ী করছেন তারা।পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম কার্যালয়ের পরিচালক মকবুল হোসাইন বলেন, শুক্রবার দুপুরে দুর্ঘটনা ঘটেছে। অথচ রেল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমাদের জানায়নি। ঘটনার পরপর উদ্ধার তৎপরতা শুরু হলে পরিবেশের এতোটা ক্ষতি হতো না।তিনি জানান, এঘটনার পর  বোয়ালখালী খালের আশপাশের ফসলি জমির মাটিগুলো মারাত্মকভাবে দূষিত হবে। এতে আগামী কয়েকবছর এসব জমিতে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হবে।এসকেডি/এমএস

Advertisement