সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসুর ব্যস্ত এলাকায় শনিবারের গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দুইশ ৭৬ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া ওই বিস্ফোরণে আহত হয়েছে তিন শতাধিক মানুষ। দেশটির তথ্যমন্ত্রী এ তথ্য জানিয়েছেন।
Advertisement
আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। প্রাথমিক অবস্থায় নিহতের সংখ্যা ২০ জন উল্লেখ করা হলেও সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিহতের সংখ্যাও বাড়ছে। তবে আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার ফলে নিহতদের সঠিক সংখ্যা জানা সম্ভব হচ্ছে না।
হামলায় ক্ষত-বিক্ষতদের সারিয়ে তুলতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে চিকিৎসকরা। সারা শহরজুড়ে থেমে থেমে শোনা যাচ্ছে অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের ভিতরে কেউ এখনও আটকা পড়ে আছেন কি না তা খুঁজে দেখছে স্বজনরা।
আমিন অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস টুইট করে জানিয়েছে, আমাদের ১০ বছরের অভিজ্ঞতায় মোগাদিসুতে এরকম পরিস্থিতি প্রথম দেখলাম। এর আগে এরকম কিছু আমরা দেখিনি।
Advertisement
বোমা হামলায় স্বামীকে হারিয়েছেন চার সন্তানের জননী জয়নব শরিফ। তিনি জানান, ‘আমার বলার মতো কোনো ভাষা নেই। আমরা সবকিছু হারিয়েছি।’ আহত অবস্থায় ভর্তির পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় কয়েক ঘণ্টা আগে মারা গেছেন তার স্বামী।
হর্ন অব আফ্রিকার দেশ সোমালিয়ায় এটি সবচেয়ে শক্তিশালী হামলা বলে ধারণা করা হচ্ছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ আবদুল্লাহি মুহাম্মদ ফারমাজো এ ঘটনায় তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন। রোববার সকাল থেকে শুরু হওয়া শোক চলবে টানা তিনদিন। এ সময় দেশটির পতাকা অর্ধ-নমিত রাখার পাশাপাশি হতাহতদের জন্য শুভকামনা করার কথা জানান তিনি।
এছাড়া তিনি আহতদের রক্ত দেয়ার জন্য সর্বসাধারণের প্রতি অনুরোধও জানান। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে শতাধিক ব্যক্তি হাসপাতালে গিয়ে রক্ত দিচ্ছেন।
মদীনা হসপিটালের পরিচালক ডা. মুহাম্মদ ইউসুফ জানান, মরদেহ এবং আহত মানুষে ভরে গেছে হাসপাতাল। এমন অনেক মানুষের চিকিৎসা আমাদের দিতে হচ্ছে, যাদের বিভিন্ন অঙ্গ হামলায় ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গেছে। অন্যান্য সময়ের তুলনায় সত্যিই এটা একেবারে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি।
Advertisement
সরকারের দাবি, জঙ্গি গোষ্ঠী আল শাবাব এই হামলা চালিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেনি।
প্রধানমন্ত্রী হাসান আল খাইর জানান, সোমালিয়ার মানুষের, বাবার, মায়ের, শিশুর কথা তারা (আল শাবাব) ভাবে না। তারা কেবল মোগাদিসুর জনবহুল এলাকা বেছে নিয়ে বেসামরিক নাগরিকদের টার্গেট করে।
সূত্র : এনবিসি নিউজ
কেএ/জেআইএম