জাতীয় লিগের পঞ্চম রাউন্ডের খেলার তৃতীয় দিন শেষে চতুর্থ দিন অপেক্ষা করছে দারুণ রোমাঞ্চ নিয়ে। কোন ম্যাচের যে কী হবে এখনই বলা মুস্কিল। তবে পরিস্থিতি দেখে বোঝা যাচ্ছে সমাপ্তি হতে পারে দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচ সিলেট বিভাগ এবং ঢাকা মেট্রোর ম্যাচটিতে। এই ম্যাচে ২৩৬ রান এগিয়ে সিলেট বিভাগ। পুরো একদিন বাকি। জয়-পরাজয় নির্ধারণ হতে পারে এই ম্যাচটিতেই।
Advertisement
ফল হতে পারে প্রথম স্তরের খুলনা এবং বরিশালের ম্যাচেও। কারণ, ফলো অনে পড়ে ধুঁকছে বরিশাল। খুলনার প্রথম ইনিংসের চেয়ে এখনও ১৩৫ রান পেছনে রয়েছে তারা। ব্যাটিং দৃঢ়তা দেখাতে পারলে এই ম্যাচটি বাঁচাতে পারে বরিশাল।
বাকি দুই ম্যাচই ড্র হতে যাচ্ছে। রংপুর আর ঢাকা বিভাগের ম্যাচ তো কথাই নেই, ড্র হওয়াছাড়া এই ম্যাচের অন্য কোনো ভাগ্য খালি চোখে দেখা যাচ্ছে না। দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচে চট্টগ্রাম আর রাজশাহী বিভাগের ম্যাচটিও ড্র হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যদিও দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে বিপর্যয়ে পড়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ।
খুলনা-বরিশাল বিভাগরাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে অনায়াস জয়ের মুখে রয়েছে খুলনা বিভাগ। প্রথম ইনিংসেই ৮ উইকেট হারিয়ে ৫১১ রানের বিশাল স্কোর গড়ে ইনিংস ঘোষণা করে তারা। জোড়া সেঞ্চুরি করেন রবিউল ইসলাম রবি এবং জিয়াউর রহমান।
Advertisement
জবাব দিতে নেমে ২৯৬ রানেই অলআউট বরিশাল বিভাগ। সালমান হোসাইনের ৫৩, মঈন খান ৬১, সোহাগ গাজীর ৬৫ রান সত্ত্বেও ২৯৬ রানে অলআউট হয়ে যায় ফজল মাহমুদের দল। ফলো অনে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে আবারও ব্যাট করতে নামে বরিশাল। শুরুতেই মনির হোসেনের উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে বরিশাল। এরপর রাফসান আল মাহমুদ আর ফজলে মাহমুদ মিলে ৬৮ রানের জুটি গড়েন। দু’জনের ব্যাটে ১ উইকেটে ৮০ রানে তৃতীয় দিন শেষ করে বরিশাল। এখনও ১৩৫ রান পিছিয়ে বরিশাল। হাতে আছে আর ৯ উইকেট।
সিলেট-ঢাকা মেট্রোপ্রথম ইনিংসেই সিলেট বিভাগ গড়ে তোলে ৩১৯ রান। জবাব দিতে নেমে ২৫৯ রানে অলআউট মোহাম্মদ আশরাফুলের দল ঢাকা মেট্রো। অধিনায়ক মার্শাল আইয়ুব ৯৮, আশরাফুল ৪০ এবং সামশুর রহমান শুভর ৩১ রান সত্ত্বেও ঢাকা মেট্রোকে ৬০ রানের পিছিয়ে থাকতে হলো ঢাকা মেট্রোকে।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে নিহাদুজ্জামান আর ইলিয়াস সানির ঘূর্ণি বোলিংয়ের ওপর ভর করে ১৪৯ রানেই সিলেটের ৮ উইকেট তুলে নেয় ঢাকা মেট্রো। সিলেটের ওপেনার শানাজ আহমেদ সর্বোচ্চ ৬৬ রান করেন। এছাড়া ৩২ রান করেন অলক কাপালি, ২৩ রানে অপরাজিত শামসুর রহমান।
৪ উইকেট নেন নিহাদুজ্জামান এবং ইলিয়াস সানি নেন ৩ উইকেট। তৃতীয় দিন শেষে সিলেট বিভাগ এগিয়ে ২৩৬ রান। শেষ দিন সকালেও যদি ঢাকাকে ছেড়ে দেয় সিলেট এবং ঠিকভাবে ব্যাট করতে না পারলে ঢাকা মেট্রোর পরাজয় প্রায় অবধারিত।
Advertisement
রংপুর বিভাগ-ঢাকা বিভাগপ্রথম স্তরের শক্তিশালী দুই দল রংপুর বিভাগ এবং ঢাকা বিভাগের মধ্যকার ম্যাচটি বলতে গেলে ড্রয়ের দিকেই এগুচ্ছে। রংপুর বিভাগ প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নাঈম ইসলামের ডাবল সেঞ্চুরির ওপর ভর করে ৫৬০ রানে ইনিংস ঘোষণা করে।
জবাব দিতে নেমে ১১৯ ওভার ব্যাট করে ৬ উইকেট হারিয়ে মাত্র ২৯৫ রান তোলে ঢাকা বিভাগ। স্লো ব্যাটিংয়ের দারুণ প্রদর্শনী দেখায় ঢাকা। ঢাকার হয়ে শুভাগত হোম ৬৭, মিনহাজ খান ৬২, রাকিবুল ইসলাম ৫১ রান করেন। ২৭ রান করেন রনি তালুকদার, ২৫ করেন আবদুল মজিদ।
শেষ দিন যখন ঢাকা ব্যাট করতে নামবে তখন তারা রংপুরের চেয়ে পিছিয়ে ২৬৫ রান। হাতে ৪ উইকেট। ফলো অনের সম্ভাবনা প্রবল। সে ক্ষেত্রে রংপুর অসাধারণ কোনো বোলিং করতে পারলে হয়তো জয় সম্ভব। তবে ঢাকা যে গতিতে ব্যাট করছে, তাতে ড্রই নিশ্চিত।
চট্টগ্রাম বিভাগ-রাজশাহী বিভাগবগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে রোমাঞ্চের অপেক্ষায় রয়েছে চট্টগ্রাম এবং রাজশাহী বিভাগের ম্যাচটি। এই ম্যাচটি ড্র হবে নাকি ফলের মুখ দেখবে সেটাও নিশ্চিত নয়। প্রথম ইনিংসে চট্টগ্রামের ২৬০ রানের জবাব দিতে নেমে রাজশাহী বিভাগ ৪০৩ রানের বড় ইনিংস গড়ে। আগেরদিনই সেঞ্চুরি করেছিলেন মিজানুর রহমান।
আজ হামিদুল ইসলামের ৭৩ এবং ফরহাদ হোসেনের ৪৩ রানের ওপর ভর করে চট্টগ্রামের সামনে ৪০৩ রানের বড় স্কোর দাঁড় করিয়ে দেয় রাজশাহী। ১৪৩ রানে এগিয়ে থেকে চট্টগ্রামকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে পাঠায় রাজশাহী।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ১০৯ রান তুলতেই ৩ উইকেট হারায় চট্টগ্রাম বিভাগ। সাদিকুর রহমান ৪৮ রান করে আউট হন। তাসামুল হক ৩২ এবং সাজ্জাদুল হক ১৬ রানে অপরাজিত রয়েছেন।
এখনও চট্টগ্রাম পিছিয়ে ৩৪ রান। হাতে আছে ৭ উইকেট। সুতরাং, বলা যায় শেষ দিন অবশ্যই রোমাঞ্চ উপহার দেবে এই ম্যাচ।
আইএইচএস/আরআইপি