অর্থনীতি

টানা তিন কার্যদিবসে বড় দরপতন

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে (রোববার) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বড় দরপতন হয়েছে। এ নিয়ে টানা তিন কার্যদিবস উভয় বাজারে বড় দরপতন হলো।

Advertisement

এদিন ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৫৫ পয়েন্ট এবং সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএসসিএক্স কমেছে ১১৮ পয়েন্ট। মূল্যসূচকের সঙ্গে ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও। তবে সিএসইতে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে।

আগের দিনের মতো রোববারও লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ ব্যাংক ও আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমেছে।

এর আগে শেয়ারবাজারে নিয়ম ভেঙে বিনিয়োগ করাসহ বিভিন্ন অসঙ্গতির দায়ে বাংলাদেশ ব্যাংক গত ৮ অক্টোবর সাত ব্যাংককে জরিমানা করে। যার নেতিবাচক প্রভাব এখনও শেয়ারবাজারে অব্যাহত রয়েছে।

Advertisement

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়ম ভেঙে বিনিয়োগ করে একাধিক ব্যাংক জরিমানার শিকার হওয়ার কারণেই শেয়ারবাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের এ পদক্ষেপের কারণে বিনিয়োগকারীদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কারণ, শেয়ারবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ এখনও সেই পর্যায়ে পৌঁছেনি, যে তাদের যে কোনো মুহূর্তে বিনিয়োগ তুলে নিতে হতে পারে।

তাদের মতে, ২০১০ সালের সাধারণ বিনিয়োগকারীরা যেভাবে শেয়ারবাজারে হুমড়ি খেয়ে পড়েছিলেন, বর্তমান বাজারে সে অবস্থা নেই। এখন বাজারে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অংগ্রহণ বেশ কম। মূলত প্রাতিষ্ঠানিক ও বড় বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ এখন অনেক বেশি।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, আগের দিনের (বৃহস্পতিবার) মত রোববারও লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ ব্যাংকের দরপতন হলেও লেনদেনে দাপট ধরে রাখে ব্যাংক খাত। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে দাম বেড়েছে ৭টি ব্যাংকের। অপরদিকে কমেছে ২২টি ব্যাংকের শেয়ারের দাম। তবে ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ ২০ কোম্পানির মধ্যে ব্যাংক রয়েছে ১২টি।

আজ সূচকের বড় উত্থানে ডিএসইতে লেনদেন শুরু হলেও, শেষ হয় বড় পতন দিয়ে। লেনদেন শুরুর প্রথম ২০ মিনিটে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩১ পয়েন্ট বেড়ে যায়।

Advertisement

কিন্তু বেলা ১১টার পর থেকে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দর পতনের কারণে টানা নিম্নমুখী হতে থাকে সূচক। ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫৫ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসইর অপর দুই মূল্যসূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক ১১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩২২ পয়েন্টে। আর ডিএসই-৩০ সূচক ৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ১৯৩ পয়েন্টে।

আজ ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৫২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম আগের কার্যদিবসের তুলনায় কমেছে। অপরদিকে বেড়েছে ৬২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৮টির দাম।

এদিন মোট ৬২০ কোটি ১৩ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয় ৭৪৩ কোটি ২৯ লাখ টাকার শেয়ার। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ১২৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা।

টাকার অংকে ডিএসইতে আজ সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ইফাদ অটোসের শেয়ার। এদিন প্রতিষ্ঠানটির মোট ৩৩ কোটি ৩১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা উত্তরা ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৮ কোটি ২ লাখ টাকার। আর ২৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ট্রাস্ট ব্যাংক।

লেনদেনে এরপরই রয়েছে- ব্র্যাক ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, স্কয়ার ফার্মা, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, আমরা নেটওয়ার্কস, ন্যাশনাল ব্যাংক এবং এসআই।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) রোববার সিএসসিএক্স সূচক ১১৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ২৫৯ পয়েন্টে। বাজারটিতে এদিন মোট ২৪১টি প্রতিষ্ঠানের ৩৭ কোটি ২৮ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে আগের দিনের তুলনায় দাম বেড়েছে ৪৯টির। অপরদিকে কমেছে ১৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৪টির দাম।

এমএএস/এমএমজেড/আইআই