পটুয়াখালীতে উৎপাদিত হচ্ছে ড্রাগন ফল। ভালো ফলন হওয়ায় কৃষকরাও এ ফল চাষে দিন দিন উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এ ফল চাষে বাড়তি জমির প্রয়োজন না হওয়ায় বাড়ির আঙিনা কিংবা ছাদে সহজেই চাষ করা যায়। খুব সহজে এ ফল চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া সম্ভব। এছাড়া রোগ-বালাই কম হওয়ায় এবং বাজারদর ভালো থাকায় ড্রাগন চাষে কৃষকদের উৎসাহ বাড়ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
Advertisement
জানা যায়, থাইল্যান্ডে উৎপাদিত হয় জনপ্রিয় ফল ড্রাগন ফ্রুট। তবে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট পটুয়াখালী আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের সহযোগিতায় জেলার বিভিন্ন এলাকায় বারি ড্রাগন ফ্রুট-১ চাষ হচ্ছে। বিশেষ করে, ডায়বেটিক ও উচ্চরক্তচাপে আক্রান্ত রোগীদের জন্য সুষম ফল হিসেবে এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। তাছাড়া এ ফলে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন-সি, মিনারেল এবং উচ্চ ফাইবার।
আরও পড়ুন- বাংলাদেশে আঙুর উৎপাদন সম্ভব!
পটুয়াখালী আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার বলেন, ‘ব্রাঞ্চ কেটে মাটিতে লাগালেই এ গাছ বাড়তে থাকে। দুই মাস পর পর সার ব্যবস্থাপনা ছাড়া তেমন একটা পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। সাধারণত ফেব্রুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ড্রাগন ফল পাওয়া যায়। একটি গাছে প্রতি বছর ৩০-৫০টি পর্যন্ত ফল ধরে। ওজনে একটি ফল আধা কেজির ওপর হয়।’
Advertisement
তিনি আরও বলেন, ‘বাড়ির আঙিনা অথবা ছাদে ড্রাগন চাষ করে পরিবারের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবেও লাভবান হওয়া সম্ভব।’
আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রে ড্রাগন ফুল, ফল ও গাছ দেখতে আসা পুরান বাজার এলাকার পার্থ বণিক জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ এলাকার মাটিতে ড্রাগন ফলের চাষ সম্ভব। সরকারি কিংবা ব্যক্তি মালিকানায় এখানে এ ফলের চাষ করলে অসংখ্য কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।’
শহরের নতুন বাজার এলাকার ফল ব্যবসায়ী ফরিদ মুন্সী জাগো নিউজকে বলেন, ‘পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ড্রাগন ফলের বাজার মূল্য ভালো, প্রতি কেজি ড্রাগন ফল বাজারভেদে আটশ’ থেকে ১ হাজার টাকা বিক্রি হয়।’
আরও পড়ুন- ফল গাছের জন্য মাটির গুণাবলি
Advertisement
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট গাজীপুরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আযাদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘খাদ্যে সমৃদ্ধ দক্ষিণাঞ্চলে ধান ও ডাল ফসলের পর্যাপ্ত উৎপাদন হলেও ফলের দিক থেকে কিছুটা পিছিয়ে। তবে বারি উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রজাতির দেশি ও বিদেশি ফল চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।’
তবে মাঠ পর্যায়ে কৃষক ও খামারিদের মাঝে বিদেশি এ ফলের চাষাবাদ ছড়িয়ে দিতে আরো প্রচার-প্রচারণা প্রয়োজন বলে মনে করনে সংশ্লিষ্টরা। ফলে বিদেশি ফলের আমদানি নির্ভরতা কমবে বলেও মনে করেন তারা।
মহিব্বুল্লাহ্ চৌধুরী/এসইউ/এমএস