বিনোদন

গাজীপুরের ভাওয়াল সন্ন্যাসীর গল্পে সৃজিতের ছবিতে জয়া

কলকাতার জনপ্রিয় নির্মাতা সৃজিত মুখার্জি। একের পর ব্যবসা সফল এবং নন্দিত চলচ্চিত্র তিনি উপহার দিয়ে চলেছেন দুই বাংলার দর্শকদের। সম্প্রতি যৌথ প্রযোজনার ব্যানারে তিনি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘কাকাবাবু’ সিরিজ থেকে ‘ইয়েতি অভিযান’ নামে নতুন ছবি মুক্তি দিয়েছেন। সেটিও হয়েছে প্রশংসিত।

Advertisement

এই ছবির কাজ চলাকালীন সময়েই ঘোষণা দিয়েছিলেন বাংলাদেশের গাজীপুরের জমিদারদের গল্প নিয়ে সিনেমা বানাবেন তিনি। ছবির নাম সম্ভাব্য রেখেছিলেন ‘ভাওয়াল সন্ন্যাসী’। অবশেষে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসলো ছবিটির। কলকাতার গণমাধ্যমের বরাতে জানা গেল, সৃজিত শ্রীভেঙ্কটেশ ফিল্মসের ব্যানারে এই ছবিটির কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন। আর ছবিতে অভিনয় করছেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান

ছবির গল্পের মূল চরিত্র বাংলাদেশের ভাওয়াল এস্টেটের বিখ্যাত জমিদার রমেন্দ্রনারায়ণ রায়। তার বোনোর চরিত্রে দেখা যাবে জয়াকে। বর্তমানে বেশ কিছু কাজে ব্যস্ত থাকায় তার শিডিউল নিয়ে ঝামেলায় রয়েছেন পরিচালক। তবে জয়ার দাবি, চমৎকার গল্পের এই ছবিটির জন্য সময় বের করবেন তিনি।

এদিকে সৃজিত জানালেন, ডিসেম্বর থেকেই শুটিং শুর করতে চান। তবে সবকিছু গুছিয়ে নিতে ও শিল্পী শিডিউল মেলাতে এটি জানুয়ারির মাঝামাঝিও হতে পারে। কলকাতার পাশাপাশি বাংলাদেশের গাজীপুরেও এই ছবিটির দৃশ্যধারণ চলবে।

Advertisement

চরিত্র সম্পর্কে তিনি জানান, ‘ভাওয়াল সন্ন্যাসী’ ছবির চিত্রনাট্য লিখছেন সৃজিত নিজেই। এখানে আছে রমেন্দ্রনারায়ণ রায়ের স্ত্রীর পরকীয়ার গল্পও। এতে রাজকুমার রমেন্দ্রনারায়ণের চরিত্রে অভিনয় করবেন টালিগঞ্জের যিশু সেনগুপ্ত। ছবির গল্প ছড়িয়ে থাকবে ১৯০৩ থেকে ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত। তবে আদালতের বিভিন্ন নথি ছাড়াও এই ছবি তৈরি করতে ইতিহাস বিষয়ক বইয়ের সাহায্য নিচ্ছেন সৃজিত।

ভাওয়াল রাজকুমারের ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, রমেন্দ্রনারায়ণ রায় ছিলেন ভাওয়াল এস্টেটের জমিদার বংশের রাজকুমার। অধিকাংশ সময় পশু-পাখি-মাছ শিকার আর আনন্দ-ফুর্তি করে কাটাতে ভালবাসতেন। তার অসংখ্য রক্ষিতা ছিলো। তাদের সঙ্গে বেপরোয়া মেলামেশার কারণে ১৯০৫ সালে তিনি সিফিলিস রোগে আক্রান্ত হন। রোগের সঠিক কারণ সে সময় গোপন রাখা হয়।

তারপর চিকিৎসা করার জন্য দার্জিলিংয়ে যান রমেন্দ্রনারায়ণ রায়। সেখানেই মে মাসের ৭ তারিখে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর কারণ হিসাবে বলা হয় বিলিয়ারি কলিক বা গলব্লাডারে পাথর। সেই মাসের ১৮ তারিখে দার্জিলিংয়ে তার শ্রাদ্ধ-শান্তি করা হয়।

তবে সমস্যাটি শুরু হয় ১৯২০-২১ সালে। ঢাকার বাকল্যান্ড (বুড়িগঙ্গা) বাঁধের কাছে সর্বাঙ্গে ছাই মাখা এক সন্ন্যাসীর আগমন ঘটে। দাবি করা হয় তিনিই রমেন্দ্রনারায়ণ রায়। এমনকি তার ফিরে আসার পর বোনের সমর্থনে ভাওয়াল এস্টেটের সম্পত্তির অধিকার চেয়ে আদালতে মামলাও করেন কুমার। দীর্ঘদিন চলে মামলা। অবশেষে জয় হয় রাজকুমারের।

Advertisement

এলএ