২০১৬ সালের ৪ জানুয়ারি। ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ যখন রাফায়েল বেনিতেজের জায়গায় জিনেদিন জিদানকে রিয়াল মাদ্রিদের কোচ করার সিদ্ধান্ত নিলেন, সবার চোখেমুখে তখন একরাশ বিস্ময়। হ্যাঁ, জিদান ফরাসি ফুটবলের কিংবদন্তী হতে পারেন, হতে পারেন রিয়াল মাদ্রিদের সফল তারকাদের একজন; তাই বলে কোচের মত এমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায়? ক্লাব সভাপতি কি একটু বেশিই ঝুঁকি নিয়ে ফেললেন না?
Advertisement
অনেকে তো এমনও বলছিলেন, জিদানের মত ফুটবল কিংবদন্তীকে অাঁকড়ে ধরে আসলে মৌসুমের শুরুতে রিয়াল মাদ্রিদের ব্যর্থতা এবং এরপরের সমালোচনা থেকে বাঁচতে চাইছেন পেরেজ। খুব বেশিদিন জিদানকে দেখা যাবে না রিয়ালে।
৬৪৯ দিন পর, পেরেজের সেই কৌশল নিয়ে সমালোচনা করার লোক আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। ফ্রেঞ্চম্যান জিদান যে তার যোগ্যতা এবং মেধা দিয়ে উজ্জ্বল করে দিয়েছেন রিয়াল সভাপতির মুখটিকে।
খেলোয়াড় জিনেদিন জিদানের পরিচয়ই এখন ভুলতে বসেছেন অনেকে। তিনি এখন পুরোদুস্তোর পেশাদার একজন কোচ, বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা। রিয়াল মাদ্রিদের তো ইতিহাসেরই।
Advertisement
দেখতে দেখতে পেরিয়ে গেছে ৯৯টি ম্যাচ, শনিবার গেটাফের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে সেঞ্চুরিয়ান কোচের তালিকায়ও নাম লিখিয়ে ফেলবেন জিনেদিন জিদান। কোচিং ক্যারিয়ারে রিয়াল মাদ্রিদকে তিনি কি দেননি!
৯৯ ম্যাচের মধ্যে জিদানের অধীনে টানা ৪০ ম্যাচে পরাজয়ের স্বাদ পায়নি রিয়াল। হ্যাঁ, ভুল শুনছেন না, টানা ৪০ ম্যাচ! ঘরের মাঠে রিয়ালের টানা ১২ জয়ের রেকর্ডও এই ফ্রেঞ্চম্যানের অধীনে।
আরও আছে, জিদানের অধীনে কতটা ছন্দে সময় কাটিয়েছেন রোনালদো-বেলরা, সেটা বোঝা যাবে গোল করার হার দেখলে। তার সময়ে টানা ৭৪টি ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে একবার হলেও বল পাঠিয়েছে রিয়াল।
এবার চোখ বুলানো যাক, সাফল্যের আসল মাপকাঠি, ট্রফি জয়ের দিকে। কোচিং ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত সাতটি ট্রফি জিতেছেন জিদান। ইতিহাসের প্রথম কোচ হিসেবে তিনি জিতেছেন টানা দুটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা। রিয়াল জিতেছে দুটি উয়েফা সুপার কাপ, একটি ক্লাবি বিশ্বকাপ, সুপারকোভা ডি এস্পানা এবং একটি লা লিগা ট্রফি।
Advertisement
এরপরও কি কোচ জিদানের কৌশল আর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ আছে? রিয়াল সভাপতি ফ্লোরেন্তিনা পেরেজ এখন গর্ব করেই বলতে পারবেন, ‘মানিকে মানিক চেনে’!
এমএমআর/আইআই