আবারও হতাশ করল টাইগাররা। ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ করে টানা হেরেই চলেছে মুশফিকের দল। বছরজুড়ে টেস্ট-ওয়ানডে-টি-টোয়েন্টিতে টানা হারের বৃত্তে বন্দি টাইগাররা।সেই বৃত্ত ভাঙতে পারল না তারা। ওয়ানডের পর টেস্ট সিরিজে ধবল ধোলাই এড়াতে ড্র কিংবা জয়ের বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের। কিন্তু ভাগ্যদেবী সঙ্গে না থাকায় কানোটাই জুটল না মুশফিকদের কপালে। চিরচেনা পরাজয়ের স্বাদটাই আবার তাদের সঙ্গী হলো। সিরিজের শেষ টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ২৯৬ রানে হেরেছে সফরকারী বাংলাদেশ।জয় নামের সোনার হরিণের দেখা মিলছে না টাইগারদের। জয় যেন এখন অধরা। টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে রীতিমত বিপাকে পড়ছেন দলপতি মুশফিক। প্রথম টেস্টের পর দ্বিতীয় টেস্টেও! ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং তিনটি বিভাগেই চরম ব্যর্থ টাইগাররা।ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশের পর প্রথম টেস্টেও হেরে যায় বাংলাদেশ। প্রথম টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১০ উইকেটে হেরে হারের বৃত্ত থেকে অনেকটা হারের ব্লাকহোলে ঢুকে যায় বাংলাদেশের টাইগাররা।সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টেও সেই একই ফল, হার। পার্থক্য একটা জায়গায়, গত টেস্টে বাংলাদেশ হেরেছিল ১০ উইকেটে। এবার হেরেছে ২৯৬ রানের বিশাল ব্যবধানে।দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ করে ৩৮০ রান। দুই ওপেনার ব্রেথওয়েট (৬৩) ও জনসন (৬৬) মিলে ১৪৩ রানের জুটি গড়ে দলের ভিত গড়ে দেন। বাকি কাজটা সেরেছেন দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান শিবনারায়ন চন্দরপল। তার ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ৮৪ রান! বাংলাদেশের ফলোঅন এড়াতে দরকার ছিল ১৮০ রান।এরপর বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে এসে নড়বড়ে অবস্থা। তামিম ইকবাল (৪৮) ছাড়া বাকি চার টপ-অর্ডার ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের কোঠায় পৌঁছাতে পারেননি। এরপর বাংলাদেশকে খানিকটা টানেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তার ব্যাট থেকে আসে ৫৩ রান। কিন্তু কেমার রোচের তোপে পড়ে ফলোঅন এড়াতে পারেনি টাইগাররা।এদিকে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৫০০তম ম্যাচ বলে কথা। ম্যাচটিকে স্মরণীয় করে রাখতে মরিয়া হয়ে ওঠেন তারা। সুতরাং ড্র নয়, জয়ই তাদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল। এ জন্যই হয়তো বাংলাদেশকে ব্যাট করতে না দিয়ে নিজেরাই ব্যাটিংয়ে নেমে পড়েন। এবারও বাংলাদেশি বোলাররা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেননি।উদ্বোধনী জুটিতে ক্যারিবিয়ান স্কোরসিটে ৭৬ রান যোগ করেন দুই ওপেনার ব্রেথওয়েট (৪৫) ও জনসন (৪১)। যা হওয়ার তা-ই হলো। তাদের বিদায়ের পর চন্দরপলের কাঁধেই বর্তায় ইনিংস টানার দায়িত্ব। এ দায়িত্ব পালনে তিনি অতুলনীয়। ১৩৪ বলে ১০১ রান করে অপরাজিত চন্দরপল! গোটা টেস্ট সিরিজে তাকে একবারও আউট করতে পারেননি বাংলাদেশের বোলাররা।এ ছাড়া ব্লাকউডের ব্যাট থেকে ৬৬ রান আসায় দ্বিতীয় ইনিংসে ক্যারিবিয়ানদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৬৯ রান। আর দুই ইনিংস মিলে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য ছুড়ে দেয় ৪৮৯ রানের। এটা অসম্ভবকে সম্ভব করার মতোই ব্যাপার। তারপরও পরাজয়ের ব্যবধান কমানো কিংবা ড্রয়ের দিকে এগিয়ে চলাই হতো মুশফিকদের কর্তব্য। কিন্তু কর্তব্য পালন আর হলো কোথায়?বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে যদি টেস্ট ভুলে ব্যাটসমানরা টি-টোয়েন্টিসুলভ আচরণ করেন, তাহলে কীভাবে পরাজয় ঠেকাবেন? ওপেনার শামসুর রহমানের কথা ধরলেই হয়। প্রথম ইনিংসে ১ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে রানের জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। ২৭ বলে ৩৯ রান! এতে ৪টি চার ও ২টি ছয়ের মার রয়েছে।
Advertisement