কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে প্রবাসী যুবক রাকিবুল ইসলাম হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। পরকীয়া সম্পর্ক স্থায়ী করতে স্ত্রী ও ছোট ভাইয়ের পরিকল্পনায় ভাড়াটে কিলাররা তাকে হত্যা করে মরদেহ নদীতে ফেলে দেয়। ঘটনার দিন ছোট ভাই রকিবুল ইসলাম নিজেই মোটরসাইকেলে করে বড় ভাই রাকিবকে হত্যাকারীদের হাতে তুলে দিয়ে আসে।
Advertisement
গ্রেফতার ছোট ভাই রকিবুল আদালতে তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। এছাড়া আটক স্ত্রী নাইমা সুলতানা তিশাকে বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।
আজ দুপুরে কুষ্টিয়া পুলিশ লাইন্সের নিজ কার্যালয়ে প্রেস বিফ্রিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার এস এম মেহেদী হাসান।
তিনি বলেন, কুমারখালীর পাহাড়পুর স্কুলপাড়ার মন্টু বিশ্বাসের ছেলে নিহত রাকিবুল ২০০৮ সালে মালয়েশিয়া যায়। রাকিবুল যখন বিদেশে তখন তার স্ত্রী নাইমা সুলতানা তিশার সঙ্গে ছোট ভাই রকিবুলের পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্প্রতি বাড়িতে এসে রাকিবুল বিষয়টি টের পেলে স্ত্রী ও ছোট ভাই তাদের সম্পর্ক স্থায়ী করতে রাকিবুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
Advertisement
পরিকল্পনা অনুযায়ী রাকিবকে হত্যার জন্য তার ছোট ভাই দুই লাখ টাকায় সন্ত্রাসী ভাড়া করে। ৫০ হাজার টাকা অগ্রিম প্রদান করে সে। ৫ অক্টোবর রাতে পাশের গ্রাম কাঞ্চনপুরে শ্বশুরবাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে নিজের বাড়ি আনার নাম করে ছোট ভাই রকিব রাকিবকে নদীর ধারে বাঁধবাজার এলাকায় সন্ত্রাসীদের হাতে তুলে দিয়ে আসে।
ওই রাতেই সন্ত্রাসীরা রাকিবকে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেয়। তিনদিন পর ৮ অক্টোবর ভেসে উঠলে নদীর পাশ থেকে রাকিবের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন রাকিবের বাবা আটজনের নাম উল্লেখ করে কুমারখালী থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ এজাহারনামীয় তিনজনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায়।
তদন্তে বেরিয়ে আসে স্ত্রী তিশা ও ছোট ভাই রকিবুলের অবৈধ সম্পর্ক ও হত্যার পরিকল্পনা। এরপর গ্রেফতারকৃত রকিবুল বৃহস্পতিবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
পুলিশ সুপার জানান, দ্রুত ভাড়াটে কিলারদেরও গ্রেফতার করা হবে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করে মূল অপরাধীকে গ্রেফতার করায় ভুক্তভোগী পরিবারসহ সাধারণ মানুষ পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
Advertisement
আল-মামুন সাগর/এফএ/আইআই