বাংলাদেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়ন হচ্ছে, কিন্তু সেখানে সামঞ্জস্যতার ঘাটতি রয়েছে। ফলে উন্নয়নের সুফল মিলছে না। এই বিনিয়োগ বাড়াতে হলে জ্বালানি ও অবকাঠামো ঘাটতি পূরণসহ সমন্বিত পরিকল্পনা নিতে হবে।
Advertisement
রোববার রাজধানীর গুলশানে ‘দ্য সিক্রেট অব সিঙ্গাপুর অ্যামাজিং সাকসেস অ্যান্ড লেসন ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ সব কথা বলেন।
কানাডা-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ক্যানচেম) ও বাংলাদেশ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) যৌথভাবে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন।
ক্যানচেমের সভাপতি মাসুদ রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভার সঞ্চালনা করেন জাপান-বাংলাদেশ চেম্বারের সভাপতি সালাউদ্দিন কাসেম খান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিনজেনটা বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাজ্জাদ হাসান।
Advertisement
বক্তারা বলেন, দেশের বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়নে এখনো বড় বাধা হিসেবে কাজ করছে জ্বালানি স্বল্পতা ও দুর্বল অবকাঠামো। সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করলেও ভোক্তাপর্যায়ে সেবা এখনও অনেক দূর। সঞ্চালন ব্যবস্থার প্রতিবন্ধকতায় উৎপাদিত বিদ্যুতের অর্ধেকও সরবরাহ করা যাচ্ছে না বলে মনে করেন তারা।
তাদের ভাষায়, দেশে প্রায় ১৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা থাকলেও সরবরাহ করতে পারে মাত্র ৮ হাজার মেগাওয়াট। মূলত সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনার অভাবে জনগণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের সুফল পাচ্ছে না।
বক্তারা বলেন, গ্যাস সংকটের কারণে অসংখ্য শিল্প-কারখানা বন্ধ আছে। অনেক প্রতিষ্ঠান উৎপাদনে যেতে পারছে না। এ ছাড়া সরকার ২০১৮ সালের মধ্যে লিকুইফাইড ন্যাচারাল গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন পর্যন্ত এ প্রকল্প ব্যবসায়ীদের কাছে দৃশ্যমান নয়।
প্রধান অথিতির বক্তব্যে কাজী এম আমিনুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ২০৪১ সালে মাথাপিছু আয় ১৫ হাজার ডলার এবং তিন লাখ ডলার জিডিপির লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে। এ জন্য বিশ্বমানের বিনিয়োগ পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে। ব্যবসায় সহজীকরণ ব্যবস্থা (ইজি অব ডুয়িং বিজনেস) এবং সক্ষমতা উন্নয়ন ঘটছে। ইতোমধ্যে বিশ্বের অর্থনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সূচকগুলো এমন আভাসই দিচ্ছে বলে তিনি জানান।
Advertisement
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, সিঙ্গাপুর উন্নয়ন সাফল্যে একটি রোল মডেল হলেও বাংলাদেশেরও অনেক সাফল্য আছে। সরকার ২০২১ সালের রূপকল্প নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু আমাদের আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে এসব সাফল্যকে স্থিতিশীল করা যাচ্ছে না। তিনি সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যবসায়ীদের সমস্যা এবং সমালোচনাগুলো আমলে নিয়ে সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসার পরামর্শ দেন। ব্যবসায়ীদের স্থিতিশীল একটি শুল্ক নীতিমালার জন্য বিরোধে না জড়িয়ে ন্যায্য দাবি আদায়ে সোচ্চার হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
সেমিনারে অন্যদের মধ্যে ছিলেন মালয়েশিয়া-বাংলাদেশ চেম্বারের সভাপতি স্থপতি আলমগীর জলিল, সাবেক সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, ডাচ-বাংলা চেম্বারের সভাপতি ফারুক হাসান, সুইজারল্যান্ড চেম্বারের সভাপতি নকিব খান ও জার্মান চেম্বারের তৌফিক আলী প্রমুখ।
এমএ/এআরএস