মুসলমানদের জন্য রমজান মাস আল্লাহ পাকের এক অশেষ নিয়ামত। যা লিখে বুঝানো সম্ভব নয়। এই বরকতময় মাসকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যার প্রথম দশক রহমতের; যা এখন চলছে- এই রহমতের দশকে আমরা আল্লাহর রহমত লাভের আশায় সকল প্রকার ভাল কাজগুলো করে জান্নাতের ঠিকানা মজবুত করার লক্ষে বেশি বেশি নেক ইবাদতের পাশাপাশি রোজাদারকেও ইফতার করিয়ে থাকি। কারণ রোজাদারকে ইফতার করানো ফজিলত অনেক বেশি। যা জাগো নিউজের পাঠকদেও জন্য তুলে ধরা হলো-হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তাকে এক মহিলা ইফতারের জন্য দাওয়াত করলো, তিনি তাতে সাড়া দিয়ে বললেন, ‘আমি তোমাকে বলছি, যে গৃহবাসী কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, তাদের জন্য তার অনুরূপ সাওয়াব হবে। মহিলা বলল, আমি চাই আপনি ইফতারের জন্য আমার কাছে কিছুক্ষণ অবস্থান করুন বা এ জাতীয় কিছু বলেছে। তিনি বললেন, আমি চাই এ নেকি আমার পরিবার হাসিল করুক। (মুসান্নাফ ইবনে আব্দুর রায্যাক)।হযরত যায়েদ ইবনে খালেদ জুহানি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলে করিম (সা.) বলেছেন, (মান ফাত্ত্বারা সাইমান কানা লাহু মিছলু আয্রিহি গাইরা আন্নাহু লা ইনক্বুচু মিন আয্রিস সাইমি শাইয়ান।) অর্থাৎ- যে রোজাদারকে ইফতার করালো, তারও রোজাদারের ন্যায় ছাওয়াব হবে, তবে রোজাদারের নেকি বিন্দুমাত্র কমানো হবে না। (তিরমিজি, ইবনু মাজাহ, নাসাঈ)।অপর এক বর্ণনায় এসেছে (মান ফাত্ত্বারা সাইমান আত্আ’মাহু ওয়া সাক্বাহু কানা লাহু মিছলু আয্রিহি গাইরা আন্নাহু লা ইনক্বুচু মিন আয্রিস সাইমি শাইইন।) অর্থাৎ- যে রোজাদারকে ইফতার করালো, তাকে পানাহার করালো, ঐ রোজাদারের সমান ছাওয়াব হবে, তবে তার নেকি বিন্দুমাত্র হ্রাস করা হবে না। (ইবন আব্দুর রায্যাক, তাবরানি ফিল কারিব)।সুতরাং আল্লাাহর অসীম অনুগ্রহ যে, তিনি বান্দার কল্যাণের নানা দিক উন্মুক্ত করেছেন। যেভাবে তিনি মানুষের প্রতি অনুগ্রহ করার আহ্বান জানিয়ে মহান সাওয়াবের ঘোষণা দিয়েছেন, যা এই রোজাদারেকে ইফতারের মাধ্যমে অর্জন সম্ভব। ইহা আল্লাহর একান্ত অনুগ্রহ।রোজাদারকে ইফতার করানো ফজিলতপূর্ণ আমল:যে ব্যক্তি রোজাদারকে ইফতার করাবে তার বিনিময় রোজাদারের সমান ছাওয়াব লাভ করবে। রোজাদারকে ইফতার করালে আল্লাহ নিজের পক্ষ থেকে তার পুরস্কার প্রদান করবেন। এটা আল্লাহ একান্ত অনুগ্রহ। এ থেকে বুঝা যায় ইফতারের দাওয়াত কবুল করা বৈধ এবং উভয়ের জন্য কল্যাণকর। ইফতারের দাওয়াত বর্জন করা বা প্রত্যাখান করা ফজিলত হারানো ছাড়া আর কিছু নয়।তবে মিসকিনদের জন্য ইফতারের আয়োজন হলে সেখানে ধনীদের যাওয়া ঠিক নয়। কারণ, তখন ধনীদের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। যাতে মিসকিনদের ইফতারের অযত্ন হওয়ার সম্ভবনা প্রবল।রোজাদারকে বাসায় নিয়ে ইফতার করানো বা খাবার প্রস্তুত করে তার রোজাদারের জন্য পাঠিয়ে দেয়া ইফতার করানোর শামিল, তবে অপচয় না করা, বিশেষ করে রকমারি ইফতারের যুগে যা ঘটে থাকে।যদি কেউ গরিবকে টাকা দেয়, যার কিছু দিয়ে সে ইফতার করবে, বাকি টাকা সংগ্রহে রেখে দেয়; তাও ইফতার করানোর হাদিসের অন্তর্ভুক্ত হবে, অধিকন্তু সে আর্থিকভাবে উপকৃত হলো।আল্লাহ আমাদের যাবতীয় কল্যাণকর কাজে এগিয়ে যাওয়ার এই মহান সুযোগ রোজাদারকে ইফতার করানোর উপায় যথাযথভাবে পালন করার তাওফিক দান রুকন। আমীন।জাগোনিউজ২৪ডটকমের সঙ্গে থাকুন। রমজান সম্পর্কিত সুন্দর সুন্দর ইসলামী আলোচনা পড়ুন। কুরআন-হাদীস মোতাবেক আমলী জিন্দেগী যাপন করে রমজানের রহমত, বরকত ও মাগফেরাত অর্জন করুন।আমীন, ছুম্মা আমীনআরএস/পিআর
Advertisement