বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত বলেছেন, অকালমৃত্যু ও অসুস্থতা হ্রাস এবং রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণে বাংলাদেশ সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণে নানা ধরনের যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
Advertisement
তিনি বলেন, গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাংলাদেশে উৎপাদিত ও আমদানিকৃত সব তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয় মূল্যের ওপর এক শতাংশ হারে ‘স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ’ আরোপ করেছে সরকার। এ অর্থের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতেই সারচার্জ ব্যবস্থাপনা নীতি অনুমোদন ও জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সেমিনার কক্ষে বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট আয়োজিত ‘জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস উদযাপন ও সম্মাননা প্রদান’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সমন্বয়কারী সাইফুদ্দিন আহমেদ। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোসা. নাছিমা বেগম, দ্য ইউনিয়নের কারিগরি উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন প্রত্যাশা মাদকবিরোধী সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল হেলাল আহমেদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এইড ফাউন্ডেশনের আমিনুল ইসলাম বকুল।
Advertisement
অনুষ্ঠানে সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, কার্যকর তামাক নিয়ন্ত্রণের অন্যতম শর্ত হচ্ছে, তামাক কোম্পানি ও তাদের সুবিধাভোগীদের হস্তক্ষেপ থেকে তামাক নিয়ন্ত্রণকে সুরক্ষিত রাখা। তামাক কোম্পানিতে সরকারের শেয়ার থাকার বিষয়টি দুঃখজনক। সরকারের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করার পথে প্রধান অন্তরায়। তাই আমরা অবিলম্বে তামাক কোম্পানি থেকে সরকারের শেয়ার ও তামাক কোম্পানিতে সরকারের প্রতিনিধিদের প্রত্যাহার করার দাবি জানাই।
নাছিমা বেগম বলেন, তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যের ক্ষতিকর প্রভাব রোধে বাংলাদেশে সাধিত হয়েছে অনেক ইতিবাচক অগ্রগতি। তামাকজাত দ্রব্যের ওপর করহার কম হলেও আলাদাভাবে স্বাস্থ্যকর আরোপ করার পদক্ষেপ বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে প্রশংসিত হয়েছে। বিশেষ করে, তামাক নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ অনেক পদক্ষেপই বিশ্বে অনুকরণীয়। স্বাস্থ্যকর হিসেবে গৃহীত অর্থের সঠিক ব্যবহারের পদক্ষেপ বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান আরও সুসংহত করবে।
অনুষ্ঠানে সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীকে তামাকের ভয়াবহ প্রভাব হতে মুক্ত রাখতে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তামাক নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সরকার, গণমাধ্যম, বেসরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো নানা ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অনেক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও তামাক নিয়ন্ত্রণে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অগ্রগতি লক্ষ্যণীয়।
অনুষ্ঠানে দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
Advertisement
এমএ/বিএ/এমএস