খেলোয়াড় ও কোচ মিলিয়ে অমলেশ সেনের ক্যারিয়ার ৫৫ বছরের। যার মধ্যে তিনি ৪৫ বছরই কাটিয়েছেন আবাহনীতে। ১৯৭২ সালের পর আকাশি-হলুদ ক্লাবটিই হয়ে যায় অমলেশ সেনের স্থায়ী পরিচয়। টানা ১৪ বছর খেলে ১৯৮৪ সালে অবসর নেন। এরপর আকাশি-হলুদদের ডাগআউটেই দাঁড়ান অমলেশ সেন। ধানমন্ডির সে প্রিয় ক্লাবটি দেখেই চিরদিনের জন্য চোখ বুজলেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্য। শনিবার সন্ধ্যায় ৭৪ বছর বয়সে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মাঠ থেকেই চির বিদায় নিলেন মধ্যমাঠের এ কুশলী ফুটবলার।
Advertisement
১৯৪৩ সালে ২ মার্চ বগুড়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন অমলেশ সেন। ফুটবলের সঙ্গে তার পরিচয় হয় স্থানীয় বাইটন ক্লাবের মাধ্যমে। সেখানে ৫ বছরের মতো খেলে চলে আসেন ঢাকায়। ১৯৬২ থেকে ১৬৯ পর্যন্ত মাঠ দাপিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও ইস্ট অ্যান্ড ক্লাবের জার্সি গায়ে। এর পর ১৯৭০ সালে যোগ দেন মোহামেডানে। সাদা-কালো জার্সি গায়ে ২ বছর কাটিয়ে ঠিকানা বদল করে অমলেশ যোগ দেন মোহামেডানের শত্রপক্ষ আবাহনীতে। স্বাধীনতা যুদ্ধের পরে ১৯৭২ সালে যোগ দেন আবাহনীতে। ১৯৮৪ সাল আকাশি-হলুদ জার্সি গায়েই খেলেছেন। আবাহনীই ছিল তার প্রিয় দল।
বুট-জার্সি খুললেও ফুটবল ছাড়েননি অমলেশ সেন। ছাড়েননি আবাহনীও। প্রিয় ক্লাবে খেলোয়াড়ি জীবনের অবসান ঘটিয়ে নেন কোচিংয়ের গুরু দায়িত্ব। আবাহনীর বহু সাফল্যের সঙ্গে নিজের নামটি জড়িয়ে রাখেন তিনি। অনেক বিদেশি কোচের সঙ্গে আবাহনীতে দায়িত্ব পালন করেছেন অমলেশ সেন। আবাহনী ক্লাবে ঢু মারলে কাউকে না পাওয়া গেলেও পাওয়া যেতো এ বর্ষীয়ান ফুটবল গুরুকে।
আবাহনী আর অমলেশ নামটি হয়ে উঠে পরিপূরক। আবাহনীতে যোগ দিয়ে আর ওই ক্লাব ছাড়ার কথা ভাবেননি কখনো। শেষ পর্যন্ত মৃত্যুই আবাহনী ছাড়তে বাধ্য করলেন এ ফুটবল শিল্পীকে। তাঁর মৃত্যুতে সমাপ্তি ঘটলো দেশের ফুটবলের রঙিন এক অধ্যায়ের।
Advertisement
আরআই/এমএমআর/আরআইপি