কক্সবাজারের মহেশখালীতে পিডিবি’র অর্থায়নে বিদ্যুতের পাওয়ার হাব তৈরির জন্য শিগগিরই জমি অধিগ্রহণ শুরু হবে। এতে একর প্রতি জমির ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৩ লাখ টাকা। এ ছাড়া অধিগ্রহণকৃত জমির ওপর নির্ভরশীল সকল শ্রেণির ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন ক্ষতিপূরণের আওতায় আসবে। ৭ ধারা নোটিশ প্রদানের দুই মাসের মধ্যেই (আগামী ফেব্রুয়ারি মাস) চেক বিতরণ শুরু হবে।
Advertisement
শুক্রবার বিকেলে কক্সবাজারে জমির মালিক ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিদ্যুতের ক্রম চাহিদা পূরণে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজার জেলার মহেশখালীতে ১৩ হাজার ৫৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য এই পাওয়ার হাব প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে।
সভায় জানানো হয়, সরকার ১০ হাজার মেঘাওয়াট পাওয়ার হাব নির্মাণের জন্য ৫ হাজার ৫৮০ একর জমি অধিগ্রহণের আওতায় আনে। এতে ব্যয় হবে এক হাজার ৩২৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এ জন্য মহেশখালী পাওয়ার হাবের ভূমি অধিগ্রহণ শীর্ষক একটি প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পায়।
জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কাইকাউজ, আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, পিডিবির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. খালেদ মাহমুদ। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, কক্সবাজার বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান, মহেশখালীর পৌর মেয়র মকছুদ মিয়া, লবণ পরিষদের সভাপতি মোস্তফা কামাল চৌধুরী, শিল্পপতি সাজেদুল করিম, হোয়ানকের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, মির কাসেম চৌধুরী, জাফর আলম জফুর, অধ্যাপক জসিম উদ্দিন, বড় মহেশখালীর ফরিদুল আলম প্রমুখ।
Advertisement
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র মতে, ২০২১ সালের মধ্যে সবার জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে চায় সরকার। এজন্য স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ ও উন্নয়নে ব্যাপক পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। বর্তমানে দেশে বিদ্যুতের মোট উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ১৫ হাজার মেগাওয়াটের ওপর, যা বছরে ১০ শতাংশ করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিদ্যুতের উত্তরোত্তর চাহিদা পূরণের জন্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজার জেলার মহেশখালীতে ১৩ হাজার ৫৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য এই পাওয়ার হাব প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে।
প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া, হারিয়ার ছড়া, পানির ছড়া, হোয়ানক, হেতালিয়া এবং অমাবশ্যাখালী মৌজায় ৫ হাজার ৫৮০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে।
সূত্র জানায়, অধিগ্রহণকৃত জমির মূল্য কম নির্ধারণ করায় জমির মালিকরা কয়েক দফা মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করে। পরে আশেক উল্লাহ রফিক এমপি জমির মালিকদের আশ্বস্থ করলে তারা কর্মসূচি বাতিল করেন। পরবর্তীতে নানা তদবিরের পর জমির ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত হয়।
সায়ীদ আলমগীর/আরএআর/জেআইএম
Advertisement