এস্টাডিও আলবার্তো জে আরমান্দো। আর্জেন্টিনায় লা বোম্বোনেরা নামেই সবচেয়ে বেশি পরিচিত। দর্শক ধারণক্ষমতা প্রায় ৫০ হাজার। পেরুর বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচটি মাঠে গড়ানোর অনেক আগেই গ্যালারির সব টিকিট বিক্রি শেষ। মেসিদের বিশ্বকাপে খেলার টিকিট কাটার ম্যাচটি সরাসরি দেখাটাও যেন এক ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে থাকা।
Advertisement
কিন্তু শুধু লা বোম্বোনেরাই নয়, ৯০ মিনিটের ম্যাচ শেষে বুয়েন্ট আয়ার্স থেকে শুরু করে পুরো আর্জেন্টিনাই তখন স্তব্ধ। বিস্ময়ে হতবাক। টু শব্দটি পর্যন্ত নেই। এ যেন নিজেদের চোখকেই তারা বিশ্বাস করাতে পারছে না। যে ফুটবলারটি ক্লাবের জার্সি গায়ে ম্যাচের পর ম্যাচ গোলবন্যায় ভাসিয়ে দিচ্ছেন, জাতীয় দলের জার্সি গায়ে কেন তার পায়ে কোনো গোল নেই!
পেরুর সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে এখন বিশ্বকাপ খেলা নিয়েই নিদারুণ শঙ্কায় পড়ে গিয়েছে আর্জেন্টিনা। আর মাত্র একটি ম্যাচ বাকি। ইকুয়েডরের বিপক্ষে সেই ম্যাচেও কোনোমতে যদি হোঁচট খায়, তাহলে ১৯৭০ বিশ্বকাপের পর এই প্রথম আর্জেন্টিনাকে ছাড়াই বিশ্বকাপ আয়োজন করতে হবে ফিফাকে। সবচেয়ে বড় কথা বিশ্বের সবচেয়ে সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসিই খেলতে পারবেন না বিশ্বকাপ ফুটবল। এটাই যেন আগামী বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় আকর্ষণহীনতা।
তবে, লিওনেল মেসিদের কোচ হোর্হে সাম্পাওলি এখনও বিশ্বাস করেন, আর্জেন্টিনা আগামী বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে এবং লিওনেল মেসি বিশ্বকাপ খেলবেন। সাম্পাওলি জানিয়েছেন, পেরুর বিপক্ষে ম্যাচে গোলশূন্য ড্র, মেসি এবং তার দলকে খুবই রাগান্বিত করে ফেলেছে। যারা কি না তিন বছর আগে বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছে, তারা এবার বিশ্বকাপই খেলতে পারবে না! মেসিদের রাগান্বিত হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ এটাই।
Advertisement
পেরুর বিপক্ষে হতাশাজনক ফলাফলের পর সাম্পাওলি দলের ভেতরকার অবস্থার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে জানান, পুরো দল এখনও উদ্যমি। সবার মধ্যেই আত্মপ্রত্যয় রয়েছে যে- তারা বিশ্বকাপে খেলবেই। তিনি বলেন, ‘আমি খুবই আত্মবিশ্বাসী যে, আজ যে আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলতে নেমেছিলাম সেটা ধরে রাখতে পারলে অবশ্যই আমরা বিশ্বকাপ খেলতে পারবো।’
নিজেদের খেলার কথা বলতে গিয়ে সাম্পাওলি বলেন, ‘আজ পেরুর চেয়ে অনেক বেশি ভালো খেলেছি আমরা। অনেক বেশি প্রভাব বিস্তার করে খেলেছি। দুর্ভাগ্য শুধু গোলটাই পাইনি। পরিস্থিতি আমাদের জন্য স্বস্তিদায়ক নয়। র্যাংকিং এখনও আমাদের কথা বলছে। যদিও স্কোরবোর্ডে তাদেরকে হারাতে পারিনি। তবে ম্যাচে তারা আমাদের কাছে দাঁড়াতেই পারেনি। আমরা খুবই আশাবাদী যে, ভালো খেলার সঙ্গে স্কোরও আসবে।’
মেসির খেলায় দারুণ খুশি কোচ। তিনি মেসির উচ্চসিত প্রশংসা করে বলেন, ‘দারুণ তীক্ষ্নতা, সুযোগ তৈরি, জায়গামত যেভাবে বল নিয়ে যেতে পেরেছিলেন, সেটা ছিল অবিশ্বাস্য। অসম্ভব একটি কাজ। মেসি বলেই সেটা সম্ভব হয়েছে। এমন খেলা দেখে আমি নিজে আস্বস্ত হয়েছি যে, আজকের মত এভাবে খেলতে পারলে নিশ্চিত বিশ্বকাপে খেলতে যেতে পারবে আর্জেন্টিনা।’
আইএইচএস/জেআইএম
Advertisement