খেলাধুলা

ব্লুমফন্টেইনে অন্তত লড়াই প্রত্যাশা

ঘরের মাঠে তো অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও টেস্ট জিতে গিয়েছিল বাংলাদেশ। নিজেদের মাঠে বেশ দুর্দান্ত প্রস্তুতি। কিন্তু বিদেশের মাটিতে কেমন করবে টাইগাররা? দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের আগে এই প্রশ্ন ছিল সবার মনেই। মুশফিকুর রহীমদের সামনেও ছিল বিশাল চ্যালেঞ্জ।

Advertisement

দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম টেস্টে সেই চ্যালেঞ্জটা খুব বেশি নিতে পারলো না টাইগার ক্রিকেটাররা। প্রথম ইনিংসে ৩২০ রানের একটা ইনিংস গড়তে পারলেও দ্বিতীয় ইনিংসে বালির বাধের মত হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ। মাত্র ৯০ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল মুশফিকুর রহীম অ্যান্ড কোং।

বোলাররাও ছিলেন পুরোপুরি স্পটলাইটের বাইরে। প্রথম টেস্টে পুরোপুরি ব্যাটিং উইকেটে টস জিতে ফিল্ডিং নেয়ার সিদ্ধান্ত যে একটা চরম বোকামির কাজ হয়েছিল, সেটা হাঁড়ে হাঁড়ে টের পেয়েছিলেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম। যদিও ম্যাচ শেষে তার বোকামির দায়ভার তিনি চাপিয়ে দিয়েছিলেন বোলারদের ওপর। ব্যর্থতার জন্য বোলারদেরই দায়ী করলেন তিনি। বোলাররা উইকেট নিতে পারেনি বলে। ব্যাটসম্যানদের দায়, খানিকটা স্বীকার করলেও, সেটা ছিল একেবারেই দায়সারা।

দ্বিতীয় টেস্ট ব্লুমফন্টেইনের মাঙ্গুয়াঙ ওভালে। এই মাঠে সর্বশেষ টেস্ট অনুষ্ঠিত হয়েছিল আজ থেকে ৯ বছর আগে, ২০০৮ সালে। সেবারও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিপক্ষ ছিল বাংলাদেশ। ওই ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছিল ইনিংস ও ১২৯ রানের ব্যবধানে। মাঙ্গুয়াঙ্গ ওভালে এরপর আর কোনো টেস্ট অনুষ্ঠিত হয়নি। যদিও মাঝে-মধ্যে টুকটাক ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

Advertisement

এই মাঠের সবুজ কার্পেটের মত উইকেটই এখন চোখ রাঙাচ্ছে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের সামনে। বাংলাদেশ সময় শুক্রবার দুপুর ২টায় শুরু হবে দ্বিতীয় টেস্ট। দেড়টায় টস করতে নামবেন দুই দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম এবং ফ্যাফ ডু প্লেসিস।

পচেফস্ট্রমের সেনউইজ পার্ক স্টেডিয়ামে যেখানে পুরোপুরি ব্যাটিং উইকেট ছিল, সেখানে মাঙ্গুয়াঙ্গ ওভালের সবুজ উইকেটে কতটা বুক ফুলিয়ে খেলতে পারবে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা! আবার এখানে বোলাররাই বা কতটা সফল হতে পারবে? এটা একটা বড় প্রশ্ন। কারণ, নিজেদের দেশে এমন সব উইকেটে খেলে অভ্যস্ত দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা।

বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় অস্বস্তির খবর হচ্ছে ইনজুরির কারণে নেই তামিম ইকবাল। তিনি যে খেলতে পারবেন না, তা ইতিমধ্যেই ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। এমনিতেই নেই সাকিব আল হাসান। তারওপর তামিম ইকবাল নেই। বাংলাদেশের ব্যাটিং শক্তির অর্ধেকই যেন শেষ হয়ে গেলো।

তামিমের পরিবর্তে দলে ফিরতে পারেন সৌম্য সরকার। ইমরুল কায়েসের সঙ্গে সৌম্য হয়তো ব্যাটিং ওপেন করবেন। মুমিনুল তিন নম্বরে। চারে মুশফিক। পাঁচে মাহমুদউল্লাহ। ছয় এবং সাতে লিটন-সাব্বির। আট নম্বরে মেহেদী হাসান মিরাজ থাকবেন কী থাকবেন না, এটা এখন বড় আলোচনার বিষয়।

Advertisement

এমনিতেই প্রথম টেস্টে তিনি ছিলেন সাফল্যহীন। তারওপর, মাঙ্গুয়াঙ্গ ওভালের সবুজ উইকেট। সে ক্ষেত্রে মিরাজকে বাদ দিয়ে হয়তো একজন পেসার বাড়িয়ে খেলতে পারে বাংলাদেশ। সে ক্ষেত্রে চার পেসার নিয়েই হয়তো মাঠে নামতে পারে দল। তখন মিরাজের পরিবর্তে দলে আসতে পারেন রুবেল হোসেন। প্রথম টেস্টে খেলা তিন পেসার তাসকিন, মোস্তাফিজ এবং শফিউল থেকে যেতে পারে দলে।

এই কম্বিনেশনে খেললেও ক্রিকেট প্রেমীদের প্রত্যাশা, প্রথম টেস্টের মত যেন এতটা বাজে অবস্থা না হয় বাংলাদেশের। কারণ পচেফস্ট্রম টেস্টে যেভাবে খেলেছে দল, তাতে মনে হয় না বাংলাদেশ এতটা খারাপ খেলতে পারে। কারণ, এই দলটির সামর্থ্য আছে। যে কোনো বোলিং কিংবা যে কোনো কন্ডিশন ও উইকেটে ভালো খেলার।

বাংলাদেশ দলের অল রাউন্ডার (টেস্ট সিরিজে নেই) সাকিব আল হাসানেরও বিশ্বাস, বাংলাদেশ দলের সামর্থ্য এবং বিশ্বাস আছে ভালো খেলতে পারার। সেই বিশ্বাস এবং সামর্থ্যকে পুঁজি করে বাউন্স ব্যাক করতে পারবে বাংলাদেশ

দক্ষিণ আফ্রিকার এমনিতেই খর্বশক্তির বোলিং। ইনজুরির কারণে নেই ডেল স্টেইন, ভারনন ফিল্যান্ডার নেই। পচেফস্ট্রম টেস্টে ইনজুরিতে পড়েছেন মরনে মর্কেল। প্রোটিয়া শিবিরের একমাত্র শক্তি এখন বলতে কাগিসো রাবাদা। এই দলে তিনিই সবচেয়ে বেশি টেস্ট খেলার অভিজ্ঞ বোলার। তার সঙ্গে রয়েছেন ওয়েইন পারনেল, দুয়ান অলিভিয়ের। তবুও বাংলাদেশের জন্য এরা এখন হুমকিই।

আইএইচএস/জেআইএম